রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদের জীবনের প্রথম পরীক্ষায় বসার লড়াই বড় কঠিন। প্রতীকী ছবি।
করোনা পর্বে ছিল প্রস্তুতিতে ঘাটতি। ছিল না স্মার্টফোন। ফোন থাকলেও মিলত না নেটওয়ার্ক। নবম শ্রেণির পড়াশোনায় যে ঘাটতি ছিল এ কথা মানছে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একাংশ। বিশেষ করে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদের জীবনের প্রথম পরীক্ষায় বসার লড়াই বড় কঠিন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের কিয়ামাচা হাই স্কুলের ছাত্রী ঊর্মিলা খাতুনের কথায়, ‘‘আর্থিক অভাব সত্ত্বেও করোনার সময় স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে থেকে নিজে নিজেই পড়েছি। তাই নবম শ্রেণিতে কোনও রকমে পড়া হয়েছে। অনলাইনে পড়া হয়নি। স্কুল খুললে শিক্ষকদের সাহায্য নিয়ে পড়েই এ বার মাধ্যমিকে বসছি।’’ ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি ব্লকের বহু এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কের সমস্যা আছে। বিশেষত ওদুলচুয়ার পরে আমলাশোল ও আমঝর্না পর্যন্ত। করোনার সময় এতে সমস্যা হয়েছে অনেক ছাত্রছাত্রীর। এ ছাড়া নয়াগ্রাম, বেলিয়াবেড়া, সাঁকরাইল, মানিকপাড়া এলাকায় বাসও খুব কম। নিজেদের উদ্যোগেই যেতে হবে পরীক্ষাকেন্দ্রে। জঙ্গলমহলের বহু এলাকায় রয়েছে হাতির আনাগোনা। তবে ওই সব এলাকা থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে নজর রাখছে বন দফতর।
পুরুলিয়ায় অযোধ্যা পাহাড়তলির ঝালদা ১ ব্লকের মাঠারিখামার পঞ্চায়েতের তুড়দাগ গ্রামের জয়শ্রী মাহাতো, উহাতুর সীমা মাহাতোরা জানাল, স্মার্টফোন না থাকায় করোনা পর্বে অনলাইনে পড়ার সুযোগ ছিল না। সম্ভব ছিল না গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে ২০ কিলোমিটার দূরে ঝালদায় যাওয়াও। সীমা, জয়শ্রীরা বলছে, ‘‘বাড়িতেই নিজেদের পক্ষে যতটা পড়াশোনা করা সম্ভব করেছি। কিন্তু অঙ্ক, ইংরেজি, বিজ্ঞানের বিষয়গুলি বুঝতে পারিনি। তাই দশম শ্রেণিতে সমস্যা হয়েছে। জানি না পরীক্ষায় শেষ পর্যন্ত কী হবে।’’ বান্দোয়ানেরই ধাদকা আঞ্চলিক হাই স্কুলের পরীক্ষার্থী কৃষ্ণপদ মাহাতো মাঝেমধ্যে দিনমজুরি করে। তার কথায়, ‘‘অষ্টম-নবম করোনার জন্য পড়তে পারিনি। দশমে উঠে তাই পাথরের মতো কঠিন মনে হচ্ছে পড়ার বই। ভেবেছিলাম এ বছর পরীক্ষা দেব না। কিন্তু মনে হল একটা বছর কেন নষ্ট করব।’’
বান্দোয়ানের কুচিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিবশঙ্কর মাহাতোর মতে, ‘‘নবম ও দশম শ্রেণির বিজ্ঞান ও অঙ্কের পাঠ্যক্রম একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছে এটা দুর্ভাগ্য যে তারা নবম শ্রেণির পুরোটাই স্কুলে আসার সুযোগ পেল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy