প্রতীকী ছবি।
গরু চরানো নিয়ে বিবাদ। মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিশি সভা। কিন্তু মেলেনি কোনও সমাধান সূত্র। অভিযোগ, এর পরেই কয়েক জন এক যুবকের বাড়িতে চড়াও হয়ে পিটিয়ে খুন করে তাঁকে।
বুধবার রাতে মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়ার বেড়া গ্রামের ওই ঘটনায় পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা মৃত যুবক কান্ত হেমব্রমের (৪২) প্রতিবেশী। শুধুই গরু চরানো নিয়ে বিবাদ, নাকি নেপথ্যে কোনও সামাজিক বা জাতপাত গত বিষয় আছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পিছনে কারা রয়েছে, কাদের প্ররোচনা রয়েছে, তদন্তে সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, গ্রামে কয়েকটি মাহাতো পরিবার রয়েছে। কান্ত ওই পরিবারগুলির গরু চরাতেন। কয়েক মাস আগে গ্রামের মাতব্বরেরা তাঁকে জানিয়েছিল, মাহাতো পরিবারগুলির গরু চরানো যাবে না। কান্ত অবশ্য নিষেধ শোনেননি। বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামে এক সালিশি সভা ডাকে ওই মাতব্বরেরা। কান্তকেও সেই সভার থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। কান্ত অবশ্য সালিশি সভায় যাননি। পাঠিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী আলোমণি হেমব্রম আর ছেলে বছর চোদ্দোর বিরু হেমব্রমকে। অভিযোগ, সালিশি সভায় মাতব্বরেরা জানিয়ে দেয়, সভা না এসে ভাল করেননি কান্ত। এর ফল তাঁকে ভুগতে হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সভা শেষ হওয়া পর রাতে কান্তের বাড়িতে চড়াও হয় এক দল লোক। কারও হাতে ছিল কুড়ুল, কারও হাতে লাঠি। হামলার মুখে বাড়ি ছেড়ে পালায় বিরু। হামলাকারীরা আলোমণিকে মারধর করে। পরে কান্তকে পিটিয়ে খুন করে। আলোমণি বলেন, ‘‘রাতে হঠাৎ বাড়িতে অনেকে মিলে হামলা করে। ভয় ছেলেটা পালিয়ে গিয়েছিল। ওকে (কান্ত) মারধর করে মেরে দেয়। বাড়ির সব লুটপাটও করে নেয়।’’ খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে আনা হয়। ময়না-তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার মৃতদেহ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, মাথায় ভারী কিছুর আঘাতে মৃত্যু হয়েছে কান্তের। পুলিশ সূত্রে খবর— দুখিরাম মুর্মু, বনমালি মুর্মু, গোপীনাথ হেমব্রম-সহ চার জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সমস্যা ঠিক কোথায়? আলোমণি বলেন, ‘‘ওরা (মাতব্বরেরা) বলেছিল, গরু চরানো যাবে না। ও গরু না চরালে আমরা খাব কী? কেন এখনও ও গরু চরাচ্ছে, সালিশি সভায় এই প্রশ্নই করা হয়।’’ ধেড়ুয়ার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পূর্ণিমা সিংহের দাবি, ‘‘গরু চরানো নিয়ে বিবাদ থেকেই এই গোলমাল। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ঘটনার পিছনে আর অন্য কোনও কারণ নেই। এটা স্থানীয় গোলমাল ছাড়া কিছু নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy