প্রতীকী ছবি।
পঠনপাঠন অবিলম্বে চালু করার জন্য এই সে-দিনেও দাবি উঠছিল, চলছিল আন্দোলনও। কিন্তু দেড় বছর পরে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, বহু প্রতিষ্ঠানেই হাজিরায় ভাটার টান। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তো বটেই, শিক্ষক শিবিরেও। প্রথম দিকে শিক্ষাঙ্গনে ফেরার জন্য যে-উৎসাহ দেখা যাচ্ছিল, অনেকাংশে তা ফিকে হয়ে গিয়েছে।
মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম সিমেস্টারের ক্লাস চলছে। প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের কলেজে আসার ক্ষেত্রে যে-উৎসাহ দেখা যাচ্ছে, পঞ্চম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের মধ্যে সেটা অনেক কম। অধ্যক্ষ মন্টুরাম সামন্ত বলেন, ‘‘প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারের ছাত্রছাত্রীরা এই প্রথম কলেজে এল। পঞ্চম সিমেস্টার তো আগেই কলেজের স্বাদ পেয়ে গিয়েছে। তাই ধরে নিয়েছে, ক্লাস না-করলেও চলবে।’’ অধ্যক্ষ জানাচ্ছেন, কোনও কোনও শিক্ষকও সপ্তাহের নির্দিষ্ট কয়েক দিন কলেজে এসে বাকি কয়েক দিন বাড়ি থেকে অনলাইনে পড়াতে চাইছেন। মন্টুরামবাবুর অভিযোগ, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকারা সপ্তাহে পাঁচ দিন কলেজে আসেন। এ বার সেই পাঁচ থেকেও যদি দু’দিন না-আসেন, তা হলে তাঁদের এই হাজিরার রেকর্ড আমাকে রেখে দিতে হবে।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য কয়েক জন অধ্যক্ষও জানান, শিক্ষক-শিক্ষিকারা রোজ কলেজে না-এসে সপ্তাহে কয়েক দিন অনলাইনে ক্লাস করাতে ইচ্ছুক।
চন্দননগর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস সরকার জানান, কলেজ খোলার প্রথম দিন হাজিরা ছিল প্রায় ১০০%। কিন্তু আস্তে আস্তে উৎসাহ থিতিয়ে যাচ্ছে। প্রাক্-করোনা পর্বে, স্বাভাবিক সময়ে রোজ ৭০% থেকে ৭৫% ছাত্রছাত্রী কলেজে আসছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে, তা গড়ে ৫০% থেকে ৬০%-এ ঠেকেছে। তিনি জানিয়েছেন, কোনও অনলাইন ক্লাস তাঁরা করাচ্ছেন না। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের সব সিমেস্টারের ক্লাস কলেজেই নেওয়া হচ্ছে। যে-সব ক্লাসে পড়ুয়া বেশি, সেখানে দূরত্ব-বিধি মেনে দু’ভাগে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
বঙ্গবাসী কলেজে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমবেশি ছ’হাজার। প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম সিমেস্টারের পড়ুয়ারা সপ্তাহে দু’দিন কলেজে আসছেন। অধ্যক্ষা হিমাদ্রি ভট্টাচার্য চক্রবর্তী জানান, পঞ্চম সিমেস্টারে বিভিন্ন বিষয়ে ল্যাবরেটরি ব্যবহার করতে হয়। সেই সব বিষয়ের পড়ুয়াদের আসা খুবই নিয়মিত। প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়ারা ভাল সংখ্যায় আসছেন। অনার্সের সব ক্লাস কলেজে হলেও পাশ বিষয়ের পড়ুয়া বেশি বলে এখন সেই ক্লাসগুলি হচ্ছে অনলাইনে।
উলুবেড়িয়া কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস পাল জানান, প্রথম দফায় তৃতীয় ও পঞ্চম সিমেস্টারের পড়ুয়ারা কলেজে আসছেন। দেখা যাচ্ছে, তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের আগ্রহ বেশি। পঞ্চমে হাজিরা কিছুটা কম। তবে মোটের উপরে দুই সিমেস্টার মিলিয়ে হাজিরা খারাপ নয়। পরের সপ্তাহ থেকে তাঁরা প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদেরও ক্যাম্পাসে আনবেন।
ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা আন্দোলনে নেমেছিলেন। তা নিয়ে বিকাশ ভবন, নবান্ন পর্যন্ত অভিযান করেন। বুধবার সেখানকার এক শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরে ক্যাম্পাসে যত ভিড় হচ্ছে, ক্লাসরুমে সেই ভিড় দেখা যাচ্ছে না! শিক্ষা সূত্রের খবর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারা রোজ বিশ্ববিদ্যালয়ে না-এসে সপ্তাহে দু’দিন করে হাজিরা দিচ্ছেন। প্রথম সিমেস্টারের ছাত্রছাত্রীদের এখন আনা হচ্ছে না। তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়ারা আসছেন। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য ওই সিমেস্টারের ছাত্রছাত্রীদের দু’ভাগে ভাগ করায় ক্লাসের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy