Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

লিড দিলে ‘পুরস্কার’, না-হলে রাস্তা দেখো

‘লিড’ দিতে না পারলে, ‘স্বেচ্ছায়’ ইস্তফা বাধ্যতামূলক। বার্তা তৃণমূলের জিতেন্দ্র তিওয়ারির।

আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে আসানসোল কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। জামুড়িয়া টাউন হলে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে আসানসোল কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। জামুড়িয়া টাউন হলে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৯
Share: Save:

লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থীকে ওয়ার্ড থেকে ‘লিড’ দিলে ‘পুরস্কার’। না হলে ‘তিরস্কার’। ‘পুরস্কার’-এর অঙ্ক পৌঁছতে পারে এক কোটি টাকা পর্যন্ত। তবে সে জন্য ‘লিড’ দিতে হবে পাঁচ হাজারের বেশি। আর ‘লিড’ দিতে না পারলে, ‘স্বেচ্ছায়’ ইস্তফা বাধ্যতামূলক।

পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার এক কর্মিসভায় মঙ্গলবার দুপুরে দলীয় কাউন্সিলরদের এমনই বার্তা দিলেন আসানসোল পুরসভার মেয়র তৃণমূলের জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি জানিয়েছেন, ‘পুরস্কার’ বলতে কাউন্সিলরেরা ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়নে খরচ করার জন্য বরাদ্দের চেয়ে বাড়তি টাকা পাবেন।

এর আগে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও ভোটে ‘লিড’ দেওয়া নিয়ে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের মধ্যে ‘সুন্দর প্রতিযোগিতা’র কথা বলেছেন। আর এক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী আবার মালদহে দলের নেতা-কর্মীদের পঞ্চায়েত পিছু নির্দিষ্ট ‘লিড’-এর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের সমর্থনে হওয়া ওই সভায় জিতেন্দ্র কাউন্সিলরদের জানান, পাঁচ হাজারের বেশি ‘লিড’ দিলে এক কোটি টাকা, তিন হাজারের বেশি দিলে ৫০ লক্ষ, দু’হাজার ও এক হাজারের বেশি ‘লিড’ দিতে পারলে যথাক্রমে ৩০ ও ১০ লক্ষ টাকা মিলবে। তাঁর সংযোজন: ‘‘লিড না দিতে পারলে স্বেচ্ছায় ইস্তফা। আমার ওয়ার্ডে (দলীয় প্রার্থী) হারলে আমিও ইস্তফা দেব।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, প্রথমে প্রভাত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক দলীয় কাউন্সিলরের কাছে তাঁর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীর ‘লিড’ কত হবে, তা জানতে চান আসানসোলের মেয়র। তিনি ‘এক হাজার’ বলতেই মেয়র বলেন, ‘‘দশ লাখ।’’ পরে জিতেন্দ্র জানতে চান, ‘‘পাঁচ হাজারের বেশি লিড কে দিতে পারবেন বলুন? এক কোটি টাকা কে নেবেন বলুন?’’ এ সংক্রান্ত ভিডিয়ো (আনন্দবাজার তার সত্যাসত্য যাচাই করেনি) এ দিন ‘সোশ্যাল মিডিয়া’-তেও ছড়ায়।

এই মুহূর্তে ১০৬ ওয়ার্ডের আসানসোল পুরসভায় বিরোধী কাউন্সিলরের সংখ্যা ১৬। বিজেপির আসানসোল জেলা কমিটির সম্পাদক সন্তোষ সিংহের বক্তব্য, ‘‘প্রশাসনের টাকা দলের কাজে ব্যবহৃত হবে, মেয়র সেটাই বললেন। উনি হয়তো বিরোধী কাউন্সিলরদের জন্য বরাদ্দ কেটে নেবেন।’’ ২০১৪-র লোকসভা ভোটে আসানসোল কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী জামুড়িয়া বিধানসভায় সামান্য ভোটে ‘লিড’ পেয়েছিলেন। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে এ বারের বাম প্রার্থী সিপিএমের গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেয়র যা বললেন, তা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক।’’

দলীয় প্রার্থীকে ‘লিড’ দেওয়ার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বরাদ্দ বণ্টন করা যায় কি না, জানতে চাওয়া হলে মেয়র বলেন, ‘‘উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলেছি। তা বলতেই পারি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy