একমঞ্চে: রাজস্থান দিবস উপলক্ষে শহরের এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনা থেকে সরে এসে একা লড়তে নেমে পড়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। কিন্তু জোট ভেস্তে যাওয়ার ময়না তদন্ত অব্যাহত আছে কংগ্রেস শিবিরে। একের পর এক জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব কবুল করছেন, জোট হওয়া জরুরি ছিল। আূবার জোট ছাড়া রাজ্যে কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ কেমন, তা নিয়ে খোঁজখবর জারি রেখেছে এআইসিসি-ও। বাংলা থেকে রাজ্যসভার সাংসদ এবং এআইসিসি-র নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি শনিবার কলকাতায় এসে জোট-কাণ্ড সম্পর্কে খবর নিয়েছেন।
লোকসভা ভোটে ব্যবহারের জন্য এআইসিসি থেকে প্রচার সামগ্রী পাঠানো হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে। বিধান ভবন থেকে প্রচার সামগ্রী এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রার্থী পরিচিতির তথ্য সংগ্রহ করতে এসে বিভিন্ন জেলার নেতাদের মুখেই আফশোস শোনা যাচ্ছে জোট ভেস্তে যাওয়া ঘিরে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, কোচবিহার এবং কলকাতার একাধিক সাংগঠনিক জেলা— এমন নানা এলাকার কংগ্রেস নেতৃত্বই বামেদের সঙ্গে জোট চেয়েছিলেন। তাঁদের যুক্তি, কংগ্রেস-বাম জোট হলে দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ অনেক বাড়ত, বিজেপির ভোটও কমিয়ে দেওয়া যেত। তাঁদের কারও কারও দাবি, জোট থাকলে উত্তর দিনাজপুর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ৬টি আসন ঘরে উঠতই। আরও গোটাদুয়েক আসন জেতার মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেত।
পশ্চিম বর্ধমানের জেলা কংগ্রেস নেতা যেমন উদাহরণ দিয়ে বলছেন, ‘‘আসানসোলে বিজেপির লড়াই এ বার কঠিন। তৃণমূলেও অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রবল। সিপিএম ওখানে গত বার আড়াই লক্ষের বেশি ভোট পেয়েছিল। এ বার সিপিএম-কংগ্রেস একসঙ্গে থাকলে বিজেপি ও তৃণমূলের ভোট কাটাকাটিতে আসনটা আমরা বার করে নেওয়ার জায়গায় থাকতাম!’’ কলকাতার এক নেতার মতে, ‘‘উত্তর কলকাতায় সিপিএমের দু’লক্ষ এবং কংগ্রেসের এক লক্ষ ৩০ হাজার ভোট ছিল। তার মধ্যে সংখ্যালঘু ভোট বড় অংশ। জোট থাকলে ওই কেন্দ্রে বিজেপি ও তৃণমূল চাপে থাকত।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শহরে ‘রাজস্থান দিবসে’র অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার আগে এ দিন সাংসদ সিঙ্ঘভি আলোচনায় বসেছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, জোট না থাকায় মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর দিনাজপুরের বাইরে অন্যত্র ‘হতাশ’ কংগ্রেস কর্মীরা বিজেপির দিকে ঝুঁকতে পারেন, এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন মান্নানও। তবে তাঁর যুক্তি, বহু জায়গায় বামেদের চেয়ে ভোট শতাংশের নিরিখে তারা পিছিয়ে থাকলেও কংগ্রেস সেই সব আসন দাবি করেছিল তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ অংশের সমর্থন টানার লক্ষ্যে। কারণ, ওই অংশের ভোট সিপিএম বা বামেদের প্রতীকে টানা যাবে না।
প্রকাশ্যে এই আলোচনা নিয়ে অবশ্য কেউ মুখ খোলেননি। সিঙ্ঘভি বলেছেন, সাধারণ আলাপচারিতা। আর মান্নানের বক্তব্য, কংগ্রেস বিধায়কদের এলাকা উন্নয়নে রাজ্যসভার সাংসদ সিঙ্ঘভির তহবিলের টাকা ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এ দিনই এই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা সার্বিক জোট চেয়েছিলাম। বিমান বসুরা প্রথম থেকেই জোট নয়, আসন ভাগাভাগি ইত্যাদি বলে পরিস্থিতি জটিল করলেন!’’ দলের অন্দরে ক্ষোভের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ কলকাতার প্রার্থী মিতা চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনও করতে হয়েছে প্রদীপবাবুকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy