Advertisement
E-Paper

চলার কষ্ট সয়েই অভুক্তকে খাবার বিলি করছেন মণীশ

খড়্গপুর শহরের রাস্তায় প্রায়ই দেখা যাচ্ছে মণীশকে। নিজের তিন চাকার স্কুটি নিয়ে স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে পথবাসী অভুক্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন শুকনো খাবার, পরিস্রুত পানীয় জল।

বিস্কুট ও জলের বোতল বিলি করছেন মণীশ। খড়্গপুরের বোগদাতে। ছবি: কিংশুক আইচ

বিস্কুট ও জলের বোতল বিলি করছেন মণীশ। খড়্গপুরের বোগদাতে। ছবি: কিংশুক আইচ

দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ০৫:১২
Share
Save

সাধ্য সীমিত। শরীরের প্রতিবন্ধকতায় চলার পথও মসৃণ নয়। সে সব দূরে ঠেলেই লকডাউন পর্বে অসহায়ের খিদে-তেষ্টা মেটাতে ছুটে বেড়াচ্ছেন রেলশহরের মণীশ গুপ্ত।

খড়্গপুর শহরের রাস্তায় প্রায়ই দেখা যাচ্ছে মণীশকে। নিজের তিন চাকার স্কুটি নিয়ে স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে পথবাসী অভুক্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন শুকনো খাবার, পরিস্রুত পানীয় জল। বাইক থেকে নেমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটেই তাঁদের হাতে সসম্মানে তুলে দিচ্ছেন কেক, বিস্কুট, পাউরুটি। শুধু অনাহারে থাকা দুঃস্থ পথবাসী নন, লকডাউন কার্যকর করতে পথে নেমেছেন যে সব পুলিশকর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ার, তাঁদের হাতেও বিস্কুট, জলের বোতল তুলে দিচ্ছেন মণীশ।

জন্মের কয়েক বছরের মধ্যেই চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, মণীশের কোমরের একটি হাড় ভাঙা। মুদি দোকানি বাবা গণেশপ্রসাদ গুপ্ত ও মা রাজকুমারী অনেক ঘুরে ছেলের অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেই মণীশের ডান পা ছোট হয়ে যায়। খুঁড়িয়েই হাঁটতে হয়। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এখন বাবার সঙ্গে ট্রাফিকের রেলবস্তিতে দোকান সামলান।

আরও পড়ুন: করোনা থেকে পাঠ, আইসিসিইউ পাচ্ছে সত্যবালা

আরও পড়ুন: মাস্ক না-পরলে জিনিস মিলবে না হাওড়ায়

ছোট থেকেই শারীরিক বাধার সঙ্গে লড়ছেন বলেই বোধহয় মণীশ অন্তর থেকে বোঝেন, অভুক্ত মানুষের যন্ত্রণা। মণীশ বলছিলেন, ‘‘ঈশ্বর আমার চলার শক্তি পুরোপুরি কেড়ে নেননি। একটা ট্রাই-বাইকও রয়েছে। এই দুঃসময়ে খেতে পাচ্ছি। অনেকে তা-ও পাচ্ছেন না। আবার রাস্তায় কর্তব্য পালন করছেন যে পুলিশকর্মী, তিনি পানীয় জল পাচ্ছেন না। তাই সাধ্যমতো পাশে থাকার চেষ্টা করছি।”

লকডাউনে ছাড় রয়েছে মুদি দোকানে। তাই নিজেদের দোকান থেকে জিনিস পেতে অসুবিধা হচ্ছে না মণীশের। সবটাই বিলি করছেন নিখরচায়। দোকান খুব বড় নয়। পুঁজিও অল্প। তবু ছেলের পাশে থাকছেন গণেশপ্রসাদ। বলছেন, “যাঁরা অসহায়, তাঁদের বাঁচিয়ে রাখাও আমাদের কর্তব্য। তাই ছেলের সঙ্গে রয়েছি। বাবা হিসেবে গর্বই হচ্ছে।”

মণীশ গোড়ায় ভেবেছিলেন, যত দিন লকডাউন চলবে রোজই খাবার বিলি করবেন। কিন্তু টানা পাঁচ দিন কাজের পরে বুঝলেন, অনেক সংগঠনই খাবার দিচ্ছে। পথবাসীদের বাড়তি খাবার সংরক্ষণের কোনও উপায় নেই। মণীশের কথায়, ‘‘এখন খাবার নষ্ট হলে মুশকিল। তাই দু’-তিন দিন অন্তর বেরোচ্ছি, যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদেরই খাবার দিচ্ছি।’’

অসহায়, অভুক্ত মানুষগুলো দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করছেন মণীশকে। আর খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলছেন, ‘‘এমন মানসিকতা সত্যিই দৃষ্টান্ত।”

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

Kharagpur Manish Gupta

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।