Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Extra Marital Affair

ছেলের খুনে প্রেমিকের সঙ্গে জড়িত মা-ও, তরুণীর বিরুদ্ধে মামলার দাবিতে পথ অবরোধ আত্মীয়দের

শনিবার রাতে বর্ধমানের খানা জংশন লাগোয়া রেললাইনের পাড়ে শিশুটিকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁর মা। প্রেমিক জিবায়তুল্লাহের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন তিনি।

image of protest

চাপড়ায় রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ স্থানীয়দের। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
চাপড়া শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ২২:৩০
Share: Save:

শুধু ‘প্রেমিক’ নয়, ছেলের খুনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন মা-ও, অভিযোগ মৃত শিশুর পরিজনদের। মৃত শিশুর মায়ের বিরুদ্ধে চাপড়া থানায় খুনের অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অসহযোগিতা করেছে বলেও দাবি তাদের। শিশুটির মার বিরুদ্ধেও মামলা করার দাবিতে দীর্ঘ ক্ষণ চাপড়ায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা।‌ পুলিশি হস্তক্ষেপে ওঠে অবরোধ। সোমবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন শিশুটির মায়ের ‘প্রেমিক’ জিবায়তুল্লাহ শেখ।

শনিবার রাতে বর্ধমানের খানা জংশন লাগোয়া রেল লাইনের পাড়ে শিশুটিকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁর মা। প্রেমিক জিবায়তুল্লাহের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন তিনি। ময়নাতদন্তের পর রবিবার মায়ের হাতে শিশুটির দেহ তুলে দেয় হাওড়া জিআরপি। সোমবার বিকেলে চাপড়া থানায় শিশুটির মায়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ জানাতে যান তার বাবা ও কাকা। তাঁদের দাবি, পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। এর পরেই শিশুটির দেহ নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। শিশুটির কাকা মইদুল শেখ বলেন, ‘‘বেশ কিছু প্রমাণ লোপাট করতে ও নিজেদের জীবন কাটামুক্ত করতে শিশুটিকে খুন করেছেন তার মা এবং প্রেমিক। দু’জনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির মায়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল অভিযুক্তের। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন দিন ধরে রাজ্যের একাধিক হোটেলে কাটিয়েছিলেন যুবক। শেষে সেই সম্পর্ক অস্বীকার করেন অভিযুক্ত। প্রেমিকাকে তিনি শ্বশুরবাড়ি ফিরে যেতে চাপ দেন। কিন্তু ওই তরুণী তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁর পুত্রসন্তানকে রেললাইনে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করার অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে। খুনের প্রমাণ লোপাট করতে একটি মালগাড়ির উপর তিনি শিশুটির দেহ ছুড়ে দেন বলে অভিযোগ। প্রাণ বাঁচাতে ওই মালগাড়িতেই উঠেছিলেন প্রেমিকা। শেষে হাওড়া স্টেশন থেকে রেল পুলিশ (জিআরপি) শিশুটির দেহ উদ্ধার করেছে। বর্ধমান স্টেশনে জখম অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে যুবতীকে।

পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, জখম ওই মহিলার বাড়ি নদিয়ার চাপড়ায়। ১০ বছর আগে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় তাঁর। দম্পতির পুত্রসন্তান মাসখানেক আগে স্থানীয় একটি বেসরকারি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সেই সূত্রেই মাদ্রাসার শিক্ষক জিবায়তুল্লাহ শেখের সঙ্গে যুবতীর পরিচয়। সেখান থেকে দু’জনের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরকীয়ার কারণে স্বামীর সঙ্গে যুবতীর সম্পর্কের অবনতি হয়। এর পর ওই শিক্ষকের সঙ্গে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল সন্তান।

পুলিশকে ওই তরুণী জানিয়েছেন, অভিযুক্ত আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে কৃষ্ণনগরের এক মুসলিম রেজিস্টারের কাছে দু’জনে বিয়েও করেন। তার পর সন্তানকে নিয়ে শান্তিনিকেতনের একটি হোটেলে ওঠেন তিন জন। এর পর একের পর এক হোটেল বদল করেন তাঁরা। যুবতীর দাবি, শনিবার রাতে জিবায়তুল্লাহ তাঁকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। কথা কাটাকাটির পর শনিবার গভীর রাতে ট্রেন ধরার জন্য পূর্ব বর্ধমানের থানা জংশনে উপস্থিত হন তিন জন। কিন্তু রাতে কোনও লোকাল ট্রেন না পাওয়ায় রেললাইন ধরে হাঁটছিলেন তাঁরা। সে সময়ই এই কীর্তি করেন অভিযুক্ত। তরুণীর অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে খুনের পাশাপাশি তাঁকে মারধর করে নগদ ৭০ হাজার টাকা এবং সোনার গয়না নিয়ে পালিয়েছিলেন অভিযুক্ত। পরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Extra Marital Affair Murder child
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy