সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
রিপোর্ট খতিয়ে দেখে বিচারপতি জানান, চোখে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় কী ভাবে এটি হল? যদিও সলিসিটর জেনারেল জানান, চশমা খুলে না রাখার জন্য সেটি হয়েছে।
সিবিআইয়ের তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট খতিয়ে দেখে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য, “সিবিআই তদন্তে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। তারা তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাক।”
আইনজীবী মহেশ জেঠমলানী সুপ্রিম কোর্টে জানান, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে চেয়ে মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায় হাই কোর্টে শুনানি হয়নি। ওই বিষয়টি হাই কোর্ট শুনতে পারবে কি না, সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের থেকে জানতে চান আইনজীবী।
আরজি করের ঘটনায় তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর এগোল, তা জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। সিবিআইয়ের থেকে স্টেটাস রিপোর্ট দেখতে চাইলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী আরও জানান, আরজি কর নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি বানানো হয়েছে। তাঁর আর্জি, ওই ছবিটি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হোক। যদিও প্রধান বিচারপতি জানান, ওই ছবিটি বন্ধের নির্দেশ দিতে হলে শুনানির প্রয়োজন রয়েছে। তখন বৃন্দা আবেদন জানান, সমাজমাধ্যমে নজরদারি চালানোর জন্য নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হোক। নির্যাতিতার ছবি-সহ তথ্য দেখলে তা মুছে ফেলার জন্য এই নিয়োগের আর্জি জানান তিনি।
নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী বৃন্দা জানান, চিঠি নিয়ে সিবিআই পদক্ষেপ করেছে। নির্যাতিতার ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বলেও আদালতে জানান তিনি। সে কথায় প্রধান বিচারপতি জানান, “আমরা এই নিয়ে আগেই নির্দেশ দিয়েছি।” সলিসিটর জেনারেল তখন জানান, এটি রাজ্যের দেখা উচিত। নির্দিষ্ট করে কোথায় পোস্ট হচ্ছে সেই বিষয়ে পরিবারের তরফে জানানো হলে বিষয়টি দেখা হবে।
সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি করেন। প্রধান বিচারপতি জানান, “৫ মিনিট পরে আমরা ফিরে আসেছি।” অন্যদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ জানান, তিনি দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলতে চান। এর পরে বিচারপতিরা উঠে যান এবং পাঁচ মিনিট পরে আবার বেঞ্চ বসে।
বিকাল ৪টে ১৫মিনিট নাগাদ আরজি কর মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। শুরুতেই সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা অনুরোধ জানান, মঙ্গলবার কিংবা বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য।
আরজি কর মামলার শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির এজলাসে উপস্থিত রয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী আস্থা শর্মা। এ ছাড়া আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার, ইন্দিরা জয়সিংহ, করুণা নন্দীরাও রয়েছেন এজলাসে।
দুপুর ২টোয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বসার পর শুরুতে অন্য কিছু মামলার শুনানি চলছে। অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যেই আরজি কর মামলা শুনবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
দুপুর ২টোয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বসল। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই শুরু হবে আরজি কর মামলার শুনানি।
রাজ্যের হয়ে সওয়াল করবেন আইনজীবী কপিল সিব্বল ও মেনকা গুরুস্বামী।
সিবিআইয়ের হয়ে আদালতে লড়বেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে থাকবেন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার ও শামিম আহমেদ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের হয়ে লড়বেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ।
জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস ওয়েস্ট বেঙ্গলের হয়ে লড়বেন আইনজীবী করুণা নন্দী ও সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়।
ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী মনিন্দর সিংহ।
দিল্লি মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে রয়েছেন আইনজীবী বিজয় হংসরিয়া।
কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলাকারী শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী হিসাবে থাকছেন সিদ্ধার্থ লুথরা ও বাঁশরী স্বরাজ।
অপর জনস্বার্থ মামলাকারী বিজয়কুমার সিঙ্ঘলের হয়ে সওয়াল করবেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি।
আদালত সূত্রে খবর, সোমবার দুপুর ২টোয় মামলাটি শুনবে আদালত। গত ২০ অগস্ট থেকে এর আগে পর্যন্ত যত বার মামলাটি উঠেছে শীর্ষ আদালতে, প্রতি বারই তালিকার প্রথমে স্থান পেয়েছিল আরজি কর মামলা। সকাল সাড়ে ১০টায় আদালত বসলে শুনানির জন্য প্রথম দিকেই ডাক পড়েছিল এই মামলাটির। তবে এ বার তার ব্যতিক্রম হল।
চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তায় কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে জানাতে পারে রাজ্য। গত সপ্তাহে তিন বিচারপতির বেঞ্চ বিশ্রাম কক্ষ, শৌচাগার ও সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল। এই মামলায় এখনও পর্যন্ত ৪২টি পক্ষ রয়েছে। সেখানে রয়েছে চিকিৎসকদের একাধিক সংগঠন। তারাও বক্তব্য জানাতে পারে কোর্টে।
তদন্তের অগ্রগতি কতটা হয়েছে সিবিআইয়ের কাছে তা জানতে চাইতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। এ ছাড়া নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ সিবিআইকে খতিয়ে দেখতে বলেছিল আদালত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করেছে আজ শীর্ষ আদালতে তা জানানোর কথা। অন্য দিকে, তাঁদের সমস্ত দাবিদাওয়া পূরণ হয়নি বলে সরব জুনিয়র ডাক্তারেরা। এই অবস্থায় তাঁরা আংশিক কর্মবিরতি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের ওই বিষয়টিও সুপ্রিম কোর্টে উঠতে পারে।
হাসপাতালে নিরাপত্তা ও পরিকাঠামোগত দিকে সরকারের তরফে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের পর কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহার করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কিন্তু গত সপ্তাহেই সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর রোগীর পরিজনদের হামলার অভিযোগ ঘিরে নতুন করে পরিস্থিতি তপ্ত হয়েছে। ২৩ মেডিক্যাল কলেজের মিলিত মঞ্চ ডাব্লিউবিজেডিএফ ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে কর্মবিরতির। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির পর জুনিয়র ডাক্তারেরা কী সিদ্ধান্ত নেন, আপাতত নজর সে দিকেই।
৯ অগস্ট আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করার অভিযোগ উঠেছিল। তার পর থেকে ৫০ দিনেরও বেশি অতিক্রান্ত। সোমবার ৫৩তম দিন। সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে আরজি কর মামলার পঞ্চম শুনানি সোমবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy