Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
CPIM

CPIM: ‘হাত’ ধরলেই কমছে ভোট, বাড়ছে একা চললে? পুরনিগমের ভোট দ্বন্দ্ব বাড়াল বাম শিবিরে

ফরওয়ার্ড ব্লকের মতো বামফ্রন্টের শরিকেরা বেশ কিছু দিন ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:২০
Share: Save:

টানা দীর্ঘ দিন ধরে ভোট-বাক্সে রক্তক্ষরণের পালা চলতে চলতে এ বার দেখা যাচ্ছে ঈষৎ উল্টো ধারা। প্রথমে শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন, তার করে কলকাতা পুরসভার নির্বাচন এবং এখন চারটি পুর-নিগমের ভোটে কিছুটা ভোট বেড়েছে বামেদের। রাজ্যে পরপর নির্বাচনে বিজেপির যখন শক্তিক্ষয় হচ্ছে, সেই সময়ে ভোটের এই বৃদ্ধি বিরোধী পরিসরে জায়গা ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে বামেদের মনোবল জোগাচ্ছে। তবে ফলাফল কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে একই সঙ্গে দেখা দিচ্ছে দ্বন্দ্বও! জোট ছাড়া নিজেদের শক্তিতে লড়াই করাই কি তবে ভবিষ্যতের রাস্তা— দ্বন্দ্ব এই প্রশ্নেই।

ফরওয়ার্ড ব্লকের মতো বামফ্রন্টের শরিকেরা বেশ কিছু দিন ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধী। এ বারের চার পুর-নিগমের ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা ছাড়াই যেমন বামেদের ভোট আগের তুলনায় বেড়েছে, তেমনই আবার বাম শরিকেরা একেবারে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে। শিলিগুড়িতে চার, আসানসোলে দুই এবং চন্দননগরে এক— বামেদের তরফে এই পুরভোটে জয়ী চার প্রার্থীই সিপিএমের। পুরসভার ওয়ার্ডও জিততে না পারা বাম শরিকদের মতামতের জোর এই নিরিখে কমে আসছে। কিন্তু সিপিএমের নিজের ঘরের অন্দরেই বাড়ছে দ্বিমত।

শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেসের আলাদা প্রার্থী ছিল। তার মধ্যেই সেখানে ভাল ভোট পেয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী। কলকাতা এবং তার পরে চার পুর-নিগমেও আলাদা লড়াই করে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় বামেদের ভোট বেড়েছে। প্রসঙ্গত, চার পুর-নিগমে বামেদের প্রাপ্ত ভোট হয়েছে ১৩.৫৩%। চার পুর-নিগমে আলাদা আলাদা ভাবে বামেরা যত ভোট পেয়েছে, তার গড় ধরলে ভোট-প্রাপ্তির হার ১৬.১২% দাঁড়ালেও পুর-নিগমগুলির আয়তন আলাদা বলে সার্বিক গড়ের হিসেব একটু পৃথক হচ্ছে। রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার ভোটের জন্য মনোনয়ন ও প্রত্যাহার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই মিটে গিয়েছে। সেখানেও হাতে-গোনা কয়েকটি পুর-এলাকা ছাড়া কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হয়নি। স্থানীয় স্তরের সিপিএম নেতৃত্বের বড় অংশেরই মত, জোট ছাড়াই যখন ফল ভাল হচ্ছে, তা হলে আর সমঝোতার দরকার কী?

কিন্তু আসন্ন রাজ্য সম্মেলনের জন্য সিপিএম যে খসড়া রাজনৈতিক প্রতিবেদন তৈরি করেছে, সেখানে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার কথাই বলা হয়েছে। দলের রাজনৈতিক লাইন পরিবর্তন না হওয়ায় এবং আগামী লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে সমঝোতার দরজা বন্ধ করতে পারছেন না সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিজেপির শক্তি কমছে, বামেদের সমর্থন অবশ্যই বাড়ছে। মনে রাখা উচিত, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সঙ্গে সমঝোতা থাকলে এই ফল আরও ভাল করা সম্ভব। মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন আরও জোরালো করার কোনও বিকল্প নেই তো বটেই।’’ তবে এখানেও আলিমুদ্দিনের সমস্যার কারণ, ভোটের সময়ে নানা চর্চা হলেও বামেদের সঙ্গে যৌথ আন্দোলনের জন্য কংগ্রেস কোনও আলোচনাতেই আসছে না!

আপাতত পুরভোটের ফল সামনে রেখে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব বলছেন, ‘‘সন্ত্রাস এবং গা-জোয়ারির মধ্যেও ২০১৯ সালের লোকসভা ও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় বামেদের সমর্থন বেড়েছে। তবে আসন-সংখ্যায় তার প্রত্যাশিত প্রতিফলন ঘটেনি। নির্বাচনী ফলাফলের আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM WB Municipal Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy