ধর্মঘটের দিনে কলকাতায় মিছিলে বাম নেতৃত্ব। নিজস্ব চিত্র।
কয়েক মাস আগে বিধানসভা ভোটে বেনজির বিপর্যয় হয়েছিল। তার পরে এক দিকে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হতাশা এবং অন্য দিকে অতিমারি সংক্রান্ত বিধিনিযেধের কারণে বড়সড় রাজনৈতিক কর্মসূচি হয়নি বামেদের। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ডাকা ভারত বন্ধকে উপলক্ষ করে সংগঠনকে আবার রাস্তায় নামাল বামেরা। জেলা এবং গ্রামাঞ্চলের কিছু অংশ ছাড়া এ রাজ্যে ধর্মঘটের দৃশ্যত বিরাট কোনও প্রভাব ছিল না। কিন্তু দিনভর ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল, বিক্ষোভ, অবরোধ বা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুব-সহ বিভিন্ন গণসংগঠন যে ভাবে সক্রিয় ছিল, তাকে ‘ইতিবাচক’ বলেই মনে করছেন বাম নেতৃত্ব।
সংযুক্ত কিযাণ মোর্চার ডাকা ধর্মঘটকে এ রাজ্যে সমর্থন জানিয়েছিল বামফ্রন্ট এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, এসইউসি, পিডিএস-সহ বিভিন্ন বাম দল। কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির রাজ্য শাখার দাবি, সোমবার রাজ্যের অন্তত ২৪টা জায়গায় জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ ছিল। প্রায় সব ব্লক এবং প্রধান শহরগুলির বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ, মিছিল বা অবরোধ— কোনও না কোনও কর্মসূচি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ (সংশোধন) বিল বাতিল এবং শ্রম কোড প্রত্যাহারের দাবিতে এই ধর্মঘটে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল সমর্থন করেনি আবার সক্রিয় ভাবে বিরোধিতাতেও নামেনি। এই পরিস্থিতিতে বিধাননগরে প্রতিবাদে পুলিশের বাধা ছাড়া কলকাতার কাছে-পিঠে বড় কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। বরং, কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির তরফে অমল হালদার, কার্তিক পালদের দাবি, ‘‘বাংলার মানুষ দৃঢ় ভাবে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং তাঁদের সংগ্রামী মনোভাবকে উৎসাহ দিয়েছেন, তার জন্য মানুষকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’
যাদবপুরের মতো কিছু জায়গায় এখনও যে বাম প্রভাব যথেষ্টই রয়েছে, তার ইঙ্গিত দিয়ে ওই এলাকায় প্রতিরোধ-অবরোধ হয়েছে ভালই। কিন্তু কিছু অবরোধ, বিক্ষোভ বা ধর্মঘট করাই কি সক্রিয় সংগঠনের একমাত্র লক্ষণ? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘নিশ্চয়ই তা নয়। কিন্তু ধর্মঘটের কোনও প্রভাব পড়বে না ধরে নিয়ে কর্মীরা ঘরে বসে থাকেননি— মেরুকরণের পরিমণ্ডলে এটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা।’’ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেনের বক্তব্য, ‘‘শ্রম দিবস নষ্ট করে ধর্মঘটের পক্ষপাতী আমরা নই। কিন্তু কেন্দ্রের যে কালা আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক ও শ্রমিকেরা লড়াই করছেন, তাকে পূর্ণ সমর্থন করি। আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সে কথা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন।’’
কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির ডাকে কৃষক সংগঠনগুলির মূল মিছিল এ দিন মৌলালি থেকে ধর্মতলা পৌঁছে ডোরিনা ক্রসিং অবরোধ করে। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মনোজ ভট্টাচার্য, নরেন চট্টোপাধ্যায়দের নিয়ে বাম নেতৃত্ব মিছিল করেন এন্টালি থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত। কৃষক সভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য হান্নান মোল্লার মতে, ‘‘কৃষক ও শ্রমিকের শ্রেণি চরিত্র ধরে রেখে যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন কয়েক বছরে গড়ে উঠেছে, তার উপরে ভিত্তি করে এর পরে কৃষি, শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্রে কর্পোরেট শোষণের বিরুদ্ধে জনগণের আরও বড় ফ্রন্ট তৈরি হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy