শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রতিবাদে অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিবাদ মিছিল
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যে সব নিয়োগেই দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। রাজ্য জুড়ে শাসক দলের মদতে নানা স্তরে দুর্নীতির প্রতিবাদে নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বামপন্থী বিশিষ্ট জনেরা। ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউস থেকে গান্ধীমূর্তি পর্যন্ত কাল, সোমবার নাগরিক মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে তাঁদের তরফে। মিছিলকে সমর্থন করে সর্ব স্তরের মানুষকে প্রতিবাদে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে শনিবারই পথে নেমেছিল কংগ্রেস।
কলকাতা প্রেস ক্লাবে এ দিন শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে বিকাশবাবু বলেন, ‘‘পাবলিক সার্বিস কমিশন (পিএসসি) থেকে দুর্নীতি শুরু হয়েছে। এখন তা আর আলাদা করে প্রমাণের দরকার নেই।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, মন্ত্রী-কন্যার চাকরি যাওয়ার পরে সরকারও কার্যত তা মেনে আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেনি। জবাবে বাম আমলের দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বিকাশবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘পিএসসি-র মাধ্যমে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ দিয়ে শুরু হয়েছিল, তখন নাগরিক সমাজ নীরব ছিল। উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগেও দুর্নীতি নিয়ে মামলা হয়েছিল। তখনও আদালত নির্বাচিত সরকারের উপরে ভরসা রেখেছিল। কিন্তু এই সরকার কোনও নিয়োগ দুর্নীতি ছাড়া করেনি।’’ এই প্রসঙ্গেই সারদা ও নারদ-কাণ্ডের তদন্তে বিলম্ব নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ‘সেটিং’-এর অভিযোগও করেছেন তিনি।
জবাবে পাল্টা আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর পরিবারের যে সব নিয়োগের কথা বলা হচ্ছে হয়েছিল তা তো তিনি বামফ্রন্টে থাকাকালীন। তাঁদের আমলে।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘বিকাশবাবু যে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন, সেই ত্রিপুরায় সিপিএম আমলে নিয়োগ হওয়া ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। তার জবাব দিতে হবে ওঁদের।’’ দুর্নীতির অভিযোগ সামনে রেখে রাজ্যে সরকার বদলের ডাকও এ দিন দিয়েছেন শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার।
কলকাতায় এসে রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এ দিন বিধান ভবন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য, দেবপ্রসাদ রায়, শুভঙ্কর সরকার, তাপস মজুমদার- সহ দলের বিভিন্ন নেতারা। অধীরবাবু বলেন, ‘‘সিপিএমের সঙ্গে আমাদের লড়াই ছিল। কিন্তু এটা আমরা কোনও দিন বলতে পারিনি, জ্যোতিবাবু চোর, বুদ্ধবাবু চোর। অথচ এখন বাংলার মানুষ বলছেন, চোরেদের মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রদেশ সভাপতির অভিযোগ, তৃণমূলের অন্দরে বিদ্রোহের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এটা করে বিজেপিরই প্রকারান্তরে সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি চাইছে তৃণমূলে ভাঙন ধরিয়ে পিছন থেকে ক্ষমতা দখল করতে। তাঁর মতে, ভাইপো দেখানোর চেষ্টা করছেন, পিসির চেয়ে তাঁর ক্ষমতা বেশি।
তৃণমূলের নেতা তাপস রায় অবশ্য বলেন, ‘‘বিধানসভায় শূন্য হয়ে গিয়েছে। বাস্তব রাজনীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তাই এরা কল্পনাপ্রবণ হয়ে গিয়েছে! তৃণমূলের মতো দল তাদের সন্তুষ্ট করতে পারবে না!’’
ক্যামাক স্ট্রিটে অবস্থানরত টেট-প্রার্থীদের উপরে পুলিশি জুলুমের কড়া নিন্দার পাশাপাশি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেছেন, হাজরা থেকে বামেদের মিছিলও করতে দেয়নি পুলিশ। গড়িয়াহাট থেকেও মিছিলমুখী বাম সমথর্কদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেলিমের বক্তব্য, ‘‘কালীঘাটের আশেপাশে কিছু করা যাবে না, কারণ মুখ্যমন্ত্রী মুখ বন্ধ করে থাকতে বলেছেন! প্রতিবাদের অধিকার সকলের আছে। এর পরে তা হলে ঘোষিত কর্মসূচি হবে না! আরও বেশি বিক্ষোভ হবে, আরও কুশপুতুল পুড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy