—ফাইল ছবি।
প্রয়াত হয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি। প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদে নেই অধীর চৌধুরী। একই মাসে এই দুই ঘটনার পরে রাজ্যে প্রথম নির্বাচনে আপাতত বিশ বাঁও জলে জোটের সম্ভাবনা! বামফ্রন্ট ও প্রদেশ কংগ্রেস নিজেদের মতো করে উপনির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। দুই শিবিরেরই বক্তব্য, অন্য তরফে কেউ তো যোগাযোগ করেনি!
রাজ্যের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে আগামী ১৩ নভেম্বর উপনির্বাচন। যার মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে শুক্রবার থেকেই। আর বামফ্রন্ট ও প্রদেশ কংগ্রেস এ দিনই নিজেদের শিবিরে বৈঠকে বসেছিল। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সংশ্লিষ্ট সেই ৬ সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের প্রায় সকলেই একা চলার পক্ষে সওয়াল করেছেন। একই ভাবে বামফ্রন্টের বৈঠকেও কথা হয়েছে, কংগ্রেসের তরফে এখনও কোনও বার্তা না-আসায় তারা ৬টি আসনে লড়ার জন্যই প্রস্তুতি নেবে। এ বার বৃহত্তর বাম শক্তির অঙ্গ হিসেবে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনকে নৈহাটি আসনটি ছাড়া যায় কি না, সেই প্রস্তাব ভেবে দেখতে বলা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বামফ্রন্টকে। হাড়োয়ায় নির্দল প্রার্থী রেখে লড়াইয়ের সম্ভাবনা আলোচনায় আছে। তার পরে রবিবার সন্ধ্যায় ফের বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও বার্তা বিনিময় হলে অবশ্যই ভেবে দেখা হবে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিধান ভবনের বৈঠকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা (শহর) সভাপতি তাপস মজুমদার, গ্রামীণ সভাপতি অমিত মজুমদার-সহ সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির নেতারা একা লড়াই করে শক্তি যাচাই করার কথা বলেছেন। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তীর মতো কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, জেলা সভাপতিরা চাইলে একা লড়াই করা যেতেই পারে। তবে অন্য দিক থেকে (বামফ্রন্ট) কোনও প্রস্তাব এলে সেটাও ভেবে দেখা যেতে পারে। বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার জেলার নেতাদের কাছে ৬ আসনের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম চেয়েছেন। প্রদেশ নির্বাচন কমিটিতে আলোচনা করে তা পাঠানো হবে এআইসিসি-র বিবেচনার জন্য। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, বিধানসভা ভোটে আসন সমঝোতা হলেও বালিগঞ্জে উপনির্বাচনে আলাদা লড়াই হয়েছে, এই দৃষ্টান্ত অতীতে আছে। পরে শুভঙ্করের বক্তব্য, ‘‘জেলা স্তরেও এখনও পর্যন্ত বামেদের তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে এই ৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে শুধু সিতাইয়ে আমরা লড়েছিলাম। আমাদের প্রথম প্রস্তুতি সেই আসনের জন্যই ছিল। আপাতত জেলা নেতৃত্ব ৬ আসনের জন্যই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন।’’
বাম শিবিরের বয়ান অবশ্য ভিন্ন। সেই সূত্রের বক্তব্য, জেলায় সিপিএম নেতৃত্ব কংগ্রেসের মনোভাব যাচাই করতে গিয়ে দেখেছেন এ বার তারা একা লড়ার দিকেই ঝুঁকে। এই পরিস্থিতিতে বামেরাও তাদের মতো করে প্রস্তুতি রাখছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী অবশ্য বলেছেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে একজোট করে লড়তে হবে, এটাই আমাদের অবস্থান। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাঁদের জেলা নেতৃত্বের মতামত নিচ্ছেন। তাঁরা কী করবেন, সেটা অবশ্যই তাঁদের বিষয়।’’
একটা নির্বাচনে সমঝোতা হবে, আবার উপনির্বাচনে হবে না— বারবার এই ভাবে চললে বাম ও কংগ্রেসের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ যে ফিরবে না, সেই আশঙ্কা রয়েছে দুই শিবিরেরই একাংশে। পাশাপাশিই দুই শিবিরের একাংশে আলোচনা হচ্ছে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন অধীরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হত সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের। অধীর এখন সভাপতি নেই, সেলিম আপাতত বিদেশে। আবার দিল্লিতে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ইয়েচুরি সরাসরি কথা বলে নিতেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। একাধিক চরিত্রের একত্র অনুপস্থিতিতে গোটা প্রক্রিয়াই আপাতত থমকে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy