শুভঙ্কর সরকার। —ফাইল চিত্র।
শেষ মুহূর্তের চেষ্টায় কোনও কাজ হল না! কংগ্রেসকে ছাড়াই রাজ্যে ৬ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে লড়তে চলেছে বামফ্রন্ট। পাঁচ কেন্দ্রের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিল তারা। তার মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ হল বৃহত্তর বাম ঐক্যের বার্তা দিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি আসন সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনকে ছেড়ে দেওয়া। কংগ্রেসের তরফে সমঝোতার বার্তা পেয়ে রাজ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের রফা-সূত্র অনুযায়ী কোচবিহারের সিতাই আসন তাদের জন্য ছেড়ে রাখার পক্ষপাতী ছিল সিপিএম। কিন্তু প্রথমে প্রস্তুতি নিয়েও পিছিয়ে আসতে প্রবল আপত্তি তুলেছে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক।
উপনির্বাচনে ৬ আসনের মধ্যে তিনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বাম শরিকেরা। কোচবিহারের সিতাইয়ে প্রার্থী হচ্ছেন ফ ব-র অরুণ কুমার বর্মা। আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটে আরএসপি-র পদম উরাও এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর আসনে সিপিআইয়ের মণিকুন্তল খামরুই। নৈহাটি কেন্দ্রে বামফ্রন্টের সমর্থনে লিবারেশনের প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার। উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া কেন্দ্রের জন্য আইএসএফের সঙ্গে সিপিএমের আলোচনা চলছে। তাই সেই আসনের প্রার্থী এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এই দফায় সিপিএমের প্রতীকে প্রার্থী শুধু তালড্যাংরায় দেবকান্তি মহান্তি। এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে চিকিৎসকদের আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘বাম ও অতি-বাম আঁতাঁত প্রমাণ হয়েই গেল!’’
সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার সোমবার দুপুরে যোগাযোগ করেছিলেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। তাঁর বার্তা ছিল, রাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে বামেদের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তা তাঁরা বন্ধ করতে চান না। বাম শরিকদের যদি একান্তই খুব আপত্তি থাকে, তা হলেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে একটি বা দু’টি আসনে কংগ্রেস এবং সিপিএম সম্মিলিত ভাবে প্রার্থী দিতে পারলে ভাল হয়। যদিও তার আগে রবিবারই প্রদেশ নির্বাচন কমিটির বৈঠকে ৬ আসনেই কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম বেছে রাখা হয়েছিল। শুভঙ্করের বার্তা পাওয়ার পরে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব এ দিন জরুরি ভিত্তিতে লন্ডনে যোগাযোগ করেছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে। তার পরে বিকালে বামফ্রন্টের বৈঠকে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু প্রস্তাব দেন, ২০২১ সালের সূত্র মেনেই অন্তত সিতাই আসন কংগ্রেসের জন্য ভাবা যেতে পারে। কিন্তু বেঁকে বসেন ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, আগে কেন বলেননি? সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনুরোধ করেন ‘বাস্তব পরিস্থিতি’ ভেবে দেখার জন্য। তবে নরেনেরা রাজি হননি।
বৈঠক শেষে বিমানবাবু ফোনে কথা বলেন শুভঙ্করের সঙ্গে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে তিনি জানান, বার্তা আসতে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। চেষ্টা করা হলেও ফ ব-কে রাজি করানো যায়নি, আর এখন তাদের আলাদা লড়তে দিয়ে সিপিএমের সরে আসার পরিস্থিতিও নেই। শুভঙ্করও তাঁকে বলেন, বামেরাই আগে যোগাযোগ করবে বলে তাঁরা আশা করেছিলেন। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী অবশ্য এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘ভোটের ময়দানটাই একমাত্র কথা নয়। আন্দোলনের ময়দানে একসঙ্গে থাকলে পরের বার ভোটেও আবার হয়তো বোঝাপড়া ঠিক করে নেওয়া যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy