Advertisement
E-Paper

তাল সামলে মোর্চা ছন্দে ফিরছে

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, রফা চূড়ান্ত করতে সময় লাগলেও জোটের বিযয়ে কুশলী পদক্ষেপ করতে চাইছেন অধীরবাবু।

ব্রিগেডের মঞ্চে সংযুক্ত মোর্চা

ব্রিগেডের মঞ্চে সংযুক্ত মোর্চা ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২১ ০৬:৫০
Share
Save

সংযুক্ত মোর্চা ঘোষণার মঞ্চেই তাল কেটেছিল রবিবার। ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চে কংগ্রেসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) প্রধান পৃষ্ঠপোষক আব্বাস সিদ্দিকি। সেই ধাক্কা সামলেই আসন-রফার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তৎপর হল সিপিএম ও কংগ্রেস। জোটের প্রকাশ্য মঞ্চে যে ওই ভাবে কথা বলা যায় না, ব্রিগেডের ২৪ ঘণ্টা পরে তা বুঝিয়ে আব্বাসকে সহবতের বার্তা দিলেন প্রবীণ বাম নেতা বিমান বসু। তাঁর মন্তব্যে কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে তার জন্য ‘দুঃখপ্রকাশ’ করেছেন আব্বাসও। পাশাপাশিই, বৃহত্তর জোটের স্বার্থে ব্রিগেডের মঞ্চের ঘটনাকে বাড়তি গুরুকত্ব দিতে না চেয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ব্যাখ্যা দিলেন, তিনি অসন্তুষ্ট বা ক্ষুব্ধ হননি।

প্রদেশ কংগ্রেস দফতর বিধান ভবনে সোমবার বৈঠকে বসেছিলেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। সংযুক্ত মোর্চার শরিক হিসেবে কংগ্রেসের ৯২টি আসনে লড়ার সিদ্ধান্ত সেখানে পাকা হয়ে গিয়েছে। আরও কিছু আসন কংগ্রেসকে ছাড়ার বিষয়ে আলোচনা চলবে। মোর্চার আর এক শরিক আইএসএফের আসনের ভাগ চূড়ান্ত করার জন্য তাদের সঙ্গেও কথা হবে। অধীরবাবুর কথায়, ‘‘বামেদের সঙ্গে আমাদের আসন-রফা ৯০% সম্পূর্ণ। আরও কিছু আসন নিয়ে আলোচনা চলছে। বলতে পারি, রাজনৈতিক ভাবে জোট চূড়ান্ত। সংখ্যার নিরিখে টেকনিক্যাল কিছু বিষয় এখনও বাকি আছে।’’

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, রফা চূড়ান্ত করতে সময় লাগলেও জোটের বিযয়ে কুশলী পদক্ষেপ করতে চাইছেন অধীরবাবু। আইএসএফের মতো অপরিচিত শক্তিকে তিনি এক কথায় জমি ছেড়ে দিতে রাজি নন। তাই আসন-রফা করার আগে তিনি সব দিক ভেবে এগোতে চাইছেন। এক দিকে প্রকাশ্যে তিনি আইএসএফের গায়ে ‘মৌলবাদী’ বা ‘সাম্প্রদায়িক’ তকমা লাগানোর বিরোধিতা করছেন, অন্য দিকে জোটের অন্দরে কংগ্রেসের ‘স্বার্থ’ বাঁচিয়ে তার পরে নতুন দলকে জায়গা দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন।

ব্রিগেডে রবিবার আব্বাস মঞ্চে ওঠার সময়ে আইএসএফ সমর্থকদের উন্মাদনার জেরে বক্তৃতা বন্ধ করতে হয়েছিল অধীরবাবুকে। সেই ঘটনার প্রভাব যাতে জোটে না পড়ে, সেই ব্যাপারে সর্তক হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এ দিন বলেছেন, ‘‘নেতারা মঞ্চে উঠলে দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই ধরনের উল্লাস দেখা যায়। রাহুল বা প্রিয়ঙ্কা গাঁধী যদি ব্রিগেডে আসতেন, তা হলে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও উদ্দীপনা তৈরি হত। হইচইটা থিতিয়ে যাওয়ার জন্য আমি একটু অপেক্ষা করতে চেয়েছিলাম। আমার অসন্তুষ্ট বা ক্ষুব্ধ হওয়ার কোনও ব্যাপার নেই।’’

পক্ষান্তরে, আব্বাসের আগের দিনের মন্তব্য প্রসঙ্গে এ দিন বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওঁদের দলের পক্ষ থেকে আমি কথা বলতে পারি না। তবে আমরা এটা সমর্থন করি না। সবাই যখন থাকে, তখন সেই মঞ্চে এক সুরে কথা বলতে হয়। ওঁদের নতুন দল। আশা করি, দ্রুত এটা ওঁদের উপলব্ধি হবে।’’ সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকেও বিমানবাবু বলেছেন, ব্রিগেডে আব্বাসের ওই আচরণ ‘এক বালতি দুধে চোনা’ ফেলে দিয়েছে। আসন ভাগ বা অন্য বিষয়ে বামফ্রন্টের শরিকদের মধ্যেও ভিন্ন মত থাকে। কিন্তু প্রকাশ্য বা যৌথ মঞ্চে তা নিয়ে বলা ফ্রন্টের দস্তুর নয়।

বিধান ভবনে ঘণ্টাচারেকের দীর্ঘ বৈঠকে এ দিন জেলা ও আসন ধরে আলোচনা চালিয়েছেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিমানবাবুর সঙ্গে সিপিএমের তরফে বৈঠকে ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবুর পাশে ছিলেন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী ও নেপাল মাহাতো। ঠিক হয়েছে, জোটের বাকি আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আজ, মঙ্গলবার ফের বৈঠক হবে। কংগ্রেসের প্রদীপবাবু ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের আজ আলোচনায় বসার কথা সূর্যবাবু, সেলিমদের সঙ্গে। সেখানে ডাকা হয়েছে আইএসএফ নেতৃত্বকেও। অর্থাৎ বৈঠক হবে ত্রিপাক্ষিক। তার পরে বামফ্রন্টেরও বৈঠক ডাকা হয়েছে। প্রথম পর্বে ৩০টি আসনের ভোটের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়া যে হেতু আজই শুরু হচ্ছে, তাই প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা দ্রুত ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে সব পক্ষেই।

আরজেডি, এনসিপি-র মতো কিছু দলের জন্য জায়গা ছেড়ে রেখেই এগোচ্ছিল জোট। কিন্তু ওই দু’দলই তৃণমূলের পাশে থাকার জন্য এগিয়ে যাওয়ায় তাদের জন্য শেষ পর্যন্ত আর আসন রাখতে হবে না বলেই মনে করছেন বিমানবাবু, অধীরবাবুরা। তবে দরজা খোলা রাখার কথাই তাঁরা এখনও বলে রেখেছেন। আর ভিতরে ভিতরে প্রস্তুতি থাকছে ওই দলগুলির জন্য বরাদ্দ আসন সংযুক্ত মোর্চায় বণ্টন করে নেওয়ার।

বৈঠকের পরে এ দিন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘আসন নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আর কোনও সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। নতুন দল হিসেবে যারা এসেছে, তাদের নিয়ে আলোচনা চলছে। বাম শরিকদের আসনের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। কিছু আসনের ক্ষেত্রে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গেও আমাদের আবার কথা বলতে হচ্ছে। সেই জন্য আসনের তালিকা এখনই প্রকাশ করতে পারছি না।’’ পুরনো রফার তালিকায় কিছু রদবদলও করছে বাম ও কংগ্রেস।

Congress CPIM Brigade Rally Abbas Siddique Indian Secular Front

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।