Advertisement
E-Paper

ধর্মঘট ঘিরে আজ শক্তির পরীক্ষায় বাম-কংগ্রেস, তৈরি থাকছে প্রশাসনও

কেন্দ্রের শ্রম এবং কৃষি আইন-সহ নানান নীতির প্রতিবাদে দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি।

ধর্মঘটের সমর্থনে বামেদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র

ধর্মঘটের সমর্থনে বামেদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৪:১৫
Share
Save

বৃহস্পতিবারের ধর্মঘটকে সামনে রেখে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে হাতে হাত ধরে শক্তিপরীক্ষায় বাম এবং কংগ্রেস। দুই শিবিরের নেতাদের দাবি, সাধারণ মানুষ ওই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই। তৃণমূল অবশ্য জানিয়েছে, ধর্মঘটে তাদের সমর্থন নেই। তবে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির তোলা ইস্যুগুলিতে যে তাদের সায় রয়েছে সে কথা আগেই জানিয়েছে তারা। যদিও বুধবারই ধর্মঘটে সরকারি কর্মীদের হাজিরা নিয়ে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। এক মাত্র বিজেপিই এই ধর্মঘটের সব দিক থেকে বিরোধী। দলের রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়েছে, ধর্মঘট ব্যর্থ করতে রাস্তায় নামবে না বিজেপি। তবে ধর্মঘটের বিরোধিতা করে দলীয় কর্মীদের রাস্তায় নামার পথও খোলা রেখেছেন তাঁরা।

কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম এবং কৃষি আইন-সহ নানান নীতির প্রতিবাদে এবং ৭ দফা দাবিতে দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। সেই কর্মসূচিকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। গত বেশ কয়েক দিন ধরেই রাজ্য জুড়ে মিছিল এবং পথসভা করে গা ঘামিয়েছেন বাম এবং কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। এ বার মূল পরীক্ষা। সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘এত দিন ধরে মিটিং মিছিল করে আমরা ধর্মঘটের প্রচার চালিয়েছি। তাই সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই ধর্মঘটে সাড়া দেবেন বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’’ তন্ময়ের দাবি, কোথাও অবরোধ করে বা জোর করে দোকানবাজার বন্ধ করে ধর্মঘট সফল করার প্রয়োজন হবে না। ফলে তাঁরা জোর করে কোনও কিছু করার রাস্তায় হাঁটবেন না বলেও জানান সিপিএম বিধায়ক। এ দিন মল্লিকবাজারে বামেদের রাজ্য নেতৃত্বের মিছিল করার কথা।

কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির দাবি নিয়ে সরব তৃণমূলও। তবে দলীয় অবস্থান থেকেই তারা ধর্মঘটে শামিল হচ্ছে না। দলের রাজ্য মুখপাত্র তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক স্পষ্ট জানাচ্ছেন যে, ধর্মঘট ব্যর্থ করার চেষ্টা তৃণমূল করবে না। এ দিন ধর্মঘটের ইস্যুগুলির সমর্থনে তৃণমূল রাস্তায় নামবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পার্থর কথায়, ‘‘করোনা অতিমারির জেরে এমনিতেই অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। তার মধ্যে আরও একটি কর্মদিবস নষ্ট হোক এটা কখনই কাম্য নয়। কিন্তু যে সব ইস্যুতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে সেগুলি আমরা সমর্থন করি। আমরা তার সমর্থনে রাস্তায় নামব, মিছিল করব।’’ তা হলে শিল্পাঞ্চল কি অচল হবে যাবে? পার্থর জবাব, ‘‘সেটা শ্রমিকদের ব্যাপার। শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছেন। শ্রমিকরাই ঠিক করবেন যে তাঁরা কী ভাবে ধর্মঘট পালন করবেন। আমরা ধর্মঘট সমর্থন করছি না। কিন্তু আবার বলছি, ধর্মঘটের ইস্যুগুলিকে সমর্থন করছি।’’

জেলায় জেলায় মিছিল বামেদের। নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষের সভা ঘিরে উত্তপ্ত বীরভূম, চলল গুলি

এই সাধারণ ধর্মঘটে বামেদের সঙ্গী কংগ্রেসও। প্রদেশ কংগ্রেসের জনসংযোগ বিভাগের আহ্বায়ক নিলয় প্রামাণিক তাই বলছেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর নির্দেশে আমরা ইতিমধ্যেই ধর্মঘটের সমর্থনে মিটিং মিছিল করেছি। বৃহস্পতিবারও আমরা পথে নামব। জোর করে নয়, শান্তিপূর্ণ ভাবেই আমরা ধর্মঘট সফল করব। রাজ্যস্তর থেকে ব্লকস্তর, সর্বত্রই কংগ্রেস কর্মীরা পথে নামবেন। বামেদের সঙ্গেই মিছিলে পা মেলাবেন।’’ কিন্তু ধর্মঘটের ইস্যুকে সমর্থনের বিষয়ে তৃণমূল যা বলছে, সে কথাকে ‘হাস্যকর’ আখ্যা দিচ্ছে কংগ্রেস। নিলয়ের কথায়, ‘‘যে সব ইস্যুতে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, সেগুলি শুধু কেন্দ্রের বিষয় নয়। তাতে রাজ্যের বিষয়ও রয়েছে। তাই তৃণমূল কী করে এই সব ইস্যুকে সমর্থন করছে আমার জানা নেই।’’ ধর্মঘট ব্যর্থ করা যাবে না বুঝতে পেরে তৃণমূল এই অবস্থান নিচ্ছে বলে কংগ্রেসের দাবি।

আরও পড়ুন: ‘উনি আসবেন কি না জানা নেই’, মন্তব্য সিরাজের, শুভেন্দু প্রশ্নে নীরব বিজেপি

এক মাত্র বিজেপিই এ রাজ্যে ধর্মঘটের সর্বাত্মক বিরোধিতা করছে। তবে ধর্মঘট ব্যর্থ করতে বিজেপি কর্মীরা পথে নামবেন, এমন কোনও নির্দেশ রাজ্য নেতৃত্ব জারি করেনি। রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রথীন্দ্র বসুর কথায়, ‘‘এই ধর্মঘট দেশবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী। করোনা অতিমারির ধাক্কা সাঙ্ঘাতিক ভাবে লেগেছে অর্থনীতির গায়ে। সারা বিশ্বের অর্থনীতি টালমাটাল। এই পরিস্থিতিতে ধর্মঘট ডেকে আবার অর্থনীতিকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন বহু মানুষ কর্মহীন ছিলেন। তাঁদের কোনও রোজগার ছিল না। আবার আরও একটা দিনের জন্য তাঁদের রোজগার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাই আমরা ধর্মঘটের তীব্র বিরোধিতা করছি।’’ রথীন্দ্র জানিয়েছেন, বিজেপি ধর্মঘট ব্যর্থ করতে রাস্তায় নামবে না, জনসাধারণের কাছে আবেদন রাখবে, ধর্মঘট ব্যর্থ করার। তবে কোথাও কোনও অঞ্চলে বিজেপি কর্মীরা যদি নিজেদের উদ্যোগে রাস্তায় নামেন, সেটা তাঁদের নিজেদের ব্যাপার।

দলগত ভাবে ইস্যুভিত্তিক সমর্থন থাকলেও, এ দিন জনজীবনে যাতে ধর্মঘটের প্রভাব না পড়ে সে জন্য সব রকম পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার।

• নবান্নের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এ দিন সব সরকারি দফতর এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সংস্থাগুলি খোলা থাকবে। কর্মীরা কাজে যোগ না দিলে ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। তবে চাইল্ড কেয়ার লিভ, মাতত্বকালীন ছুটি, মেডিক্যাল লিভ এবং আর্নড লিভ আগেই মঞ্জুর হলে তা গ্রাহ্য হবে।

• কলকাতায় একাধিক মিছিল হওয়ার কথা। সেই অনুযায়ী ঘুঁটি সাজাচ্ছে কলকাতা পুলিশ।

• কলকাতাতেই মোতায়েন থাকবেন ৫ হাজার পুলিশকর্মী।

• যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে ১০টি কুইক রেসপন্স টিম।

• শহরের পাঁচটি জায়গায় অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হবে।

• লোকাল ট্রেন বন্ধ করা হতে পারে এই আশঙ্কায় বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।

• পরিবহণ সচল রাখতে নামবে সরকারি বাস। এ দিন রাস্তায় বাস, ট্যাক্সি এবং অটো নামানোর আশ্বাস দিয়েছে অধিকাংশ সংগঠনই।

Trade Union Trade Union Strike CITU

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।