Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

সংখ্যার জোর রুখতে হবে রাস্তার লড়াইয়ে,ডাক ‘লং মার্চ’ থেকে

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাঁচানো, কর্মসংস্থানের দাবি এবং সেই সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে গত ৩০ নভেম্বর চিত্তরঞ্জন থেকে শুরু হয়েছিল ‘লং মার্চ’।

সর্পিল: ব্রেবোর্ন রোডে বামেদের মিছিল। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

সর্পিল: ব্রেবোর্ন রোডে বামেদের মিছিল। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে পাশ হয়ে যাচ্ছে অনেক কিছুই। সেখানে সংখ্যার জোরে বিরোধীরা পিছিয়ে। কিন্তু সংসদে পাশ হওয়া ‘অন্যায়’ বাস্তবে রূপায়িত হওয়া আটকে দিতে হবে রাস্তায় প্রবল লড়াই করে। চিত্তরঞ্জন থেকে ১২ দিনের ‘লং মার্চ’ শেষে কলকাতায় এসে এই ডাকই দিলেন বাম নেতৃত্ব।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাঁচানো, কর্মসংস্থানের দাবি এবং সেই সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে গত ৩০ নভেম্বর চিত্তরঞ্জন থেকে শুরু হয়েছিল ‘লং মার্চ’। বাম ও কংগ্রেসের নানা গণ-সংগঠন ওই পদযাত্রায় যোগ দিয়েছে। মোট ২৮৩ কিলোমিটারের মূল পদযাত্রার সঙ্গে শহরের আরও অন্তত ৫টি জায়গা থেকে বুধবার মিছিল এসেছিল ধর্মতলার পথে। তার পরে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ছিল সমাবেশ। নানা প্রান্ত থেকে মিছিল আসায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের ভিড় উপচে পড়েছিল ডোরিনা ক্রসিং-এ। যার জেরে ধর্মতলা-সহ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় যানজট পাকিয়েছিল।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) প্রতিবাদে এখন উত্তাল অসম, ত্রিপুরা-সহ উত্তর-পূর্ব এবং দেশের অন্যান্য প্রান্ত। আবার কর্নাটকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রি-স্কুল চালু করা-সহ বেশ কিছু দাবিতে টুমকুর থেকে বিশাল পদযাত্রা নিয়ে বেঙ্গালুরুতে ঢোকার অনুমতি না পেয়ে সিটুর পতাকা নিয়ে রাস্তায় বসে পড়েছেন হাজার হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। এই উদাহরণ দেখিয়ে সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন এ দিনের সমাবেশে বলেন, ‘‘সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে স্বৈরাচারী সরকার শ্রম আইন-সহ অনেক কিছুই পাশ করিয়ে নেবে। কিন্তু সরকারের অন্যায় সিদ্ধান্তের বাস্তবে প্রয়োগ রুখে দিতে হবে বাইরে লড়াই করে। দেশের পরিস্থিতি এখন এই জায়গাতেই পৌঁছেছে।’’ দুর্গাপুরের এএসপি-র দৃষ্টান্ত দিয়ে তপনবাবু আরও বলেছেন, সেখানে কেন্দ্র বেসরকারিকরণ করতে চাইলেও শ্রমিক আন্দোলনের জেরে টেন্ডার বাতিল হয়েছে।

রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ।

মহারাষ্ট্রে ‘কিসান লং মার্চ’-এর অন্যতম কারিগর এবং কৃষক সভার অশোক ধওয়লে জানিয়েছেন, কেন্দ্রের জন-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আগামী ৮ জানুয়ারি তাঁরা গ্রামীণ ভারত বন্‌ধ পালন করবেন। সে দিনই সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। এআইটিইউসি-র অতুল আনজান, আইএনটিইউসি-র কামারুজ্জামান কামার, টিইউসিসি-র জি দেবরাজন, ইউটিইউসি-র অশোক ঘোষ-সহ সব শ্রমিক সংগঠনের নেতাই এ দিন বলেছেন, ৮ জানুয়ারির ধর্মঘট মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আরও একটি ‘হুঁশিয়ারি’ হবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু সমাবেশে এলেও গণ-সংগঠনের মঞ্চে ওঠেননি।

‘লং মার্চ’ এ দিন বালি থেকে হাওড়া আসার পরে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় মিছিল সেরে আসা পদযাত্রীরা তাদের সঙ্গে পা মেলান। শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলার দিকে মিছিল নিয়ে আসেন উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার পদযাত্রীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যে সব ছোট পদযাত্রা হয়েছে, তাদের একসঙ্গে নিয়ে গড়িয়াহাট হয়ে মিছিল করে আসেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। আবার উত্তরে শ্যামবাজার এবং মেয়ো রোড থেকে আলাদা মিছিল হয়। অনেকটা বামেদের ব্রিগেড সমাবেশের দিন যেমন হয়, সে ভাবেই শহর জুড়ে ছিল একাধিক মিছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Long March DYFI NRC CAB
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy