‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অব লিন্চিং) বিল, ২০১৯’।
মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পরপর দু’বার বিল ঘিরে বিতর্ক বাধল বিধানসভায়। আলোচনা মাঝপথে বন্ধ করে বৃহস্পতিবার স্টাফ সিলেকশন কমিশন (এসএসসি) পুনরুজ্জীবনের বিল তুলে নিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ বার গণপিটুনি রোধের বিলে যে পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ঢোকানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল শুক্রবার। একই সরকারি মেমো নম্বরে দুই বয়ানের বিল থাকায় বিরোধীরা বিভ্রান্তির অভিযোগে সরব হলেও মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য তাতে আমল দেননি।
গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান রাখা হয়েছে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অব লিন্চিং) বিল, ২০১৯’-এ। বিলের বিরোধিতা করেনি বিরোধীরা। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে বিধায়কদের মধ্যে বিলি করা বিলে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এ দিন সভায় পেশ করা বিলে মৃত্যুদণ্ড— এই ফারাক কেন রাখা হল, বিরোধী নেতারা সরব হয়েছেন তা নিয়েই। বিল ছাপা হয়ে আসার পরে তাতে কোনও পরিবর্তন বা সংযোজন দরকার হলে সাধারণত সভায় সংশোধনী পেশ করে সরকার পক্ষ। আর বিল ফের ছেপে নিয়ে আসা হলে আগে বিলি করা বিল তুলে নেওয়া হয়। সরকারি নথিতে প্রথম ও পরের বিলের খতিয়ানও (মেমো নম্বর) আলাদা হয়। কিন্তু এ দিন বিধানসভায় এসে স্পিকারের ঘোষণা শুনে বিধায়কেরা দেখেন, তাঁদের কাছে থাকা বিল আর সভায় পেশ হওয়া বিলের মেমো নম্বর এক হলেও দ্বিতীয়টিতে মৃত্যদণ্ডের সংস্থান রয়েছে।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বিলের বয়ান বদলানোর এই পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে এর ফলে শাস্তি-প্রক্রিয়া ঠিক ভাবে কার্যকরী হবে কি না, সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। গণপিটুনিতে মৃত্যু হলে অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সর্বাধিক পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান রাখা হয়েছে পেশ হওয়া বিলে। কী ভাবে একই বিলের দু’রকম বয়ান হল, তা নিয়ে কংগ্রেস ও বামেরা প্রশ্ন তোলায় বিষয়টিকে ‘ছোটখাটো ভুলভ্রান্তি’ বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের সম্মতিতে এ দিনের বিলটি বিধানসভায় পেশ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার কোনও দফতরের ব্যাপার নয় এটা। বিধানসভার স্পিকারের অফিস ও পরিষদীয় দফতরের ব্যাপার। বিলটি ২০০% সঠিক।’’ সঙ্গে সঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি সই করে রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছিলাম। ফলে বিলটি নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই।’’
কী ভাবে একই বিলের দু’রকম বয়ান হল, তা নিয়ে কংগ্রেস ও বামেরা প্রশ্ন তোলায় বিষয়টিকে ‘ছোটখাটো ভুলভ্রান্তি’ বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সর্বসম্মত ভাবে বিল পাশ করার আবেদন জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গণপিটুনিতে মৃতের পরিবারকে সরকারি চাকরি এবং অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে। কেন্দ্রও কড়া আইন করুক, এই আবেদন করছি।’’ যদিও চাকরির কথা বিলে উল্লেখ না থাকায় প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। গণপিটুনির ঘটনার সাক্ষীর পাশাপাশি তাঁদের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সংশোধনী আনতে চেয়েছিলেন কংগ্রেসের নেপাল মাহাতো। প্রস্তাব খারিজ করে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, পুলিশ তো নিরাপত্তা সবাইকে দেবে।’’ কিন্তু মৌখিক আশ্বাসের প্রতিফলন আইনে কী ভাবে থাকবে, বিরোধীরা তা নিয়ে সংশয়ী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy