মহুয়া-কাণ্ডের মধ্যেই তাপসের স্মৃতি উস্কে দিলেন নন্দিনী। —ফাইল চিত্র।
ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগ এবং লোকসভা থেকে বহিষ্কারের জেরে বিতর্কে তৃণমূল কংগ্রেসের কৃষ্ণনগরের সাংসদ। মহুয়া মৈত্রকে ঘিরে সেই চর্চার মধ্যেই কৃষ্ণনগরের প্রয়াত, প্রাক্তন সাংসদ তাপস পালের কথা সামনে চলে এল। নিয়ে এলেন প্রাক্তন সাংসদের স্ত্রী নন্দিনী মুখোপাধ্যায় পাল। তৃণমূলের নেতৃত্ব এবং বাইরের নানা দল যখন মহুয়ার পক্ষে ব্যাট ধরেছে, সেই সময়েই নন্দিনী মনে করিয়ে দিলেন, তাপসের জন্য তাঁর দল এ ভাবে দাঁড়ায়নি। তাপস-পত্নীর দাবি, উপেক্ষা ও অসম্মানের ধাক্কায় বাঁচার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলেছিলেন অভিনেতা-সাংসদ। মহুয়াকে ঘিরে বিতর্কের মাঝে প্রয়াত তাপসকে নিয়ে এই ঝাঁপি খোলার উদ্যোগ থেকে অবশ্য দূরত্ব রাখতে চাইছে তৃণমূল।
মহুয়া-কাণ্ডের মধ্যেই তাপসের স্মৃতি উস্কে ও কৃষ্ণনগরের যোগ টেনে সমাজমাধ্যমে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন নন্দিনী। তার ছত্রে ছত্রে ধরা পড়ছে অভিমান। অতীত এবং বর্তমানের ঘটনাপ্রবাহকে পাশাপাশি রেখে প্রাক্তন সাংসদের স্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘যা বুঝি, কর্মফল এই জীবনেই ভোগ করতে হয়। ... কোথাও মনে হয়, ভাগ্যবানেরা তাড়াতাড়ি চলে যান। আর কিছু মানুষ, যাদের পাপের ঘড়াটা মস্ত বড়, তাদের সেটা পূরণ করে আবার প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য লম্বা বাঁচতে হয়!’’
তাপসকে অসম্মান এবং উপেক্ষার অভিযোগে তৃণমূল সরকারের তিন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (এখন অপসারিত), জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিক, মলয় ঘটক এবং দলের তদানীন্তন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের আচরণের কথা টেনেছেন নন্দিনী। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া গৌরীশঙ্কর প্রয়াত হয়েছেন বছরদুয়েক আগে। দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পার্থ ও জ্যোতিপ্রিয় আপাতত জেলে। নন্দিনীর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আজ যেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোথায়? বালুবাবু যেন কী করছেন এখন?’’
কৃষ্ণনগরে একটি সভায় তৎকালীন সাংসদ তাপসের একটি হুমকি ঘিরে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল। তাঁর স্ত্রী মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অন্যায় করলে তার ফল ভোগ করতেই হয়। তাপস মনে করতেন, ওই বিতর্কিত মন্তব্য করা তাঁর ‘পাপ’ হয়েছিল এবং তারই ‘ফল’ স্বরূপ তাঁর হাজত বাস হয়েছিল। কিন্তু দলীয় নেতৃত্বের আচরণ কেমন ছিল? প্রয়াত সাংসদের স্ত্রীর দাবি, ‘‘মমতা দেবী (বন্দ্যোপাধ্যায়) ওঁর মৃতদেহের সামনে আসার আগে, তাপসবাবু জীবিত থাকাকালীন ওঁর ফোন যদি এক বার তুলতেন বা ওঁকে এক বার শুনতেন, সর্বোপরি চরম অসম্মান না করতেন, তা হলে উনি (তাপস) হয়তো বাঁচার ইচ্ছেটা হারিয়ে ফেলতেন না।’’ তাপসের সঞ্চয় থেকে সিবিআইয়ের কাছে জমা থাকা ‘সিকিউরিটি ডিপোজ়িট’ উদ্ধারের ব্যাপারে তৃণমূলের দিক থেকে কোনও সহায়তা পাচ্ছেন না বলে দাবি করে ‘অকৃতজ্ঞতা আর নির্লজ্জতা’র প্রসঙ্গও এনেছেন নন্দিনী।
প্রয়াত সাংসদের পরিবারের তরফে এমন অভিমান, ক্ষোভের বিষয়ে তৃণমূলের কেউ আপাতত প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। দলের এক নেতার মতে, ‘‘এখন এই কাসুন্দি ঘাঁটলে ভাল হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy