Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

হাসপাতালে হাঙ্গামা হলে শাস্তির দাওয়াই পুলিশকে

ডাক্তার-নিগ্রহের জেরে রাজ্য জুড়ে চিকিৎসকদের প্রায় এক সপ্তাহের কর্মবিরতির পরে ইতিমধ্যেই সরকারি হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা দেখার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী কমিশনার পদের এক বা একাধিক অফিসারকে।

অনুজ শর্মা।—নিজস্ব চিত্র।

অনুজ শর্মা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০২:৩৬
Share: Save:

নীলরতন সরকার হাসপাতালে ডাক্তার-নিগ্রহের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। সেই কারণেই সম্প্রতি এন্টালি থানার অতিরিক্ত ওসি-কে বদলি করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। কলকাতার কোনও সরকারি হাসপাতালে এনআরএস-কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে লালবাজার। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ কমিশনারের দফতর থেকে এই বার্তা সব থানা এবং ডিভিশনাল অফিসে পৌঁছে গিয়েছে।

ডাক্তার-নিগ্রহের জেরে রাজ্য জুড়ে চিকিৎসকদের প্রায় এক সপ্তাহের কর্মবিরতির পরে ইতিমধ্যেই সরকারি হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা দেখার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী কমিশনার পদের এক বা একাধিক অফিসারকে। লালবাজার সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ডিসি-দের নিরাপত্তা ব্যবস্থার তদারক করতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের ফাঁড়িতে দীর্ঘদিন ধরে মোতায়েন থাকা কর্মীদেরও বদলি করা হতে পারে।

এনআরএসের হাঙ্গামায় ধৃত পাঁচ জনকে বুধবার ফের শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের আরও পাঁচ দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, যে-বৃদ্ধের মৃত্যু ঘিরে গোলমালের সূত্রপাত, তাঁর পরিবার ডাক্তারদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছে। ডাক্তারদের বিরুদ্ধে মারধর ও ক্যামেরা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন এক চিত্রসাংবাদিকও। সেই দু’টি মামলার তদন্ত নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে লালবাজার। এই প্রেক্ষিতে পুলিশের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে নাগরিক সমাজের একাংশের বক্তব্য, ডাক্তার-নিগ্রহের অভিযোগে ধরপাকড় চলছে, তা হলে বাকি অভিযোগগুলির তদন্ত হবে না কেন?

লালবাজারের কর্তাদের একাংশ বলছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়নি। তার পরে স্বাভাবিক ভাবেই ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে আর এগোতে চাইছেন না কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘এনআরএস-কাণ্ডে বাকি দু’টি মামলা আপাতত ঠান্ডাঘরে চলে গিয়েছে।’’

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন ধৃতদের আইনজীবী মহম্মদ হাসমত। তিনি জানান, অজ্ঞাতপরিচয় ডাক্তারদের বিরুদ্ধে থানায় মারধরের অভিযোগ করেছেন মহম্মদ কলিমুদ্দিন নামে বিবিবাগান লেনের এক বাসিন্দা। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগের তদন্ত করছে না। একপেশে তদন্ত হচ্ছে। চিকিৎসার ত্রুটিতে যে-বৃদ্ধের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গোলমালের সূত্রপাত, তাঁর মৃতদেহ আটকে রাখেন এক দল চিকিৎসক। বৃদ্ধের পরিজনদের মৃত্যুর শংসাপত্রও দিতে রাজি ছিলেন না তাঁরা। এই অমানবিক দিকটিতে আলোকপাত করছেন না কেউই।

এ দিন ধৃতদের জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন হাসমত। কিন্তু সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জামিনের বিরোধিতা করে জানান, দুই চিকিৎসককে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়েছে। এই নিয়ে দেশ জুড়ে আন্দোলন করেছেন চিকিৎসকেরা। ইট, লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে সরকারি চিকিৎসক, নার্সদের। গোলমালে আরও অনেকে জড়িত। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে আটটি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে দু’টি বাইক অভিযুক্ত মহম্মদ শাহনওয়াজ ও মহম্মদ ইয়াকুবের। বাইক দু’টি যে তাঁদেরই, ওই দুই অভিযুক্ত তা স্বীকারও করেছেন। অন্য বাইকগুলি কাদের, তা জানতে ধৃতদের আরও জেরা করা দরকার।

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Lalbazar Anuj Sharma Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy