কুন্তলের কাছে থেকে ৪ লক্ষ টাকা নেওয়ার কথা তাপস স্বীকার করে নিয়েছেন বলে ইডির চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে। ফাইল চিত্র ।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে উঠে এল নয়া তথ্য! প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের রাগ ভাঙাতেও টাকা দিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ! এমনই তথ্য উঠে এল সম্প্রতি আদালতে জমা দেওয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর চার্জশিটে। ইডির চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, তারকেশ্বরের ডিএলএড কলেজে ছাত্রভর্তি নিয়ে কুন্তলকে চাপ দিচ্ছিলেন মানিক। কলেজ বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। তবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিকের রাগ সামলাতে মানিকেরই ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত তাপস মণ্ডলকে আসরে নামিয়েছিলেন কুন্তল। মানিকের সঙ্গে দূরত্ব মেটাতে তাপসের হাতে তুলে দিয়েছিলেন ৪ লক্ষ টাকাও।
আদালতে ইডির জমা দেওয়া চার্জশিট অনুযায়ী, তারকেশ্বরের ‘বঙ্গীয় প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’ নামক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সেক্রেটারি ছিলেন হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল। তিনি সেক্রেটারি থাকাকালীন ওই কেন্দ্রে ছাত্র ভর্তির জন্য তাঁর কাছে ২৫টি আসন চেয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক। যাতে ওই ২৫ আসনে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের থেকে টাকা না নেওয়া হয়, সেই দাবিও করেছিলেন।
ইডি আধিকারিকদের কুন্তল জানিয়েছেন, যাতে ওই ২৫টি আসনে ভর্তির পুরো টাকা মানিক হাতিয়ে নিতে পারেন, তার জন্যই আসনগুলি চাওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, ২৫ পড়ুয়ার কাছে আগেভাগেই ভর্তির টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করা। তবে কলেজের তরফে ওই ছাত্রদের থেকে আলাদা করে আর কোনও ভর্তির টাকা নেওয়া যাবে না বলেও দাবি করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক। আর এই নিয়েই কুন্তল এবং মানিকের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।
ইডির চার্জশিট অনুযায়ী, মানিকের রাগ ভাঙাতে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত তাপসের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুন্তল। মানিকের ‘অন্যায্য দাবি’র জন্য তৈরি হওয়া সমস্যার সমাধানের জন্য তাপসকে ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। কুন্তলের কাছে থেকে ৪ লক্ষ টাকা নেওয়ার কথা তাপস স্বীকার করে নিয়েছেন বলেও ইডির চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে।
ইডির চার্জশিটে আরও উল্লেখ রয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে ‘বঙ্গীয় প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কুন্তল। পরে আট লক্ষ টাকার বিনিময়ে ওই কলেজের সেক্রেটারি হন। আসনের ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে আগের সেক্রেটারি মমতা বিশ্বাসের সঙ্গেও তাঁর ঝামেলা ছিল। মানিকের সঙ্গে মমতার যোগাযোগের কারণে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বলেও ইডি আধিকারিকদের জানিয়েছেন কুন্তল। পরে সেই কলেজ বন্ধ হয়ে যায়।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কুন্তল এবং মানিক দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডির তরফে আদালতে বার বার দাবি করা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিকের সঙ্গে কুন্তলের যোগাযোগ ছিল এবং ওই দুর্নীতিতে এই জুটির ভূমিকা ছিল বেশ বড়। মানিক এবং কুন্তলকে অবৈধ নিয়োগ চক্রের অন্যতম মাথা বলেও অভিযোগ করেছে ইডি। ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে, বাঁকা পথে নিয়োগের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই ছিল ওই দুই ধৃতের হাতেই। আর সেই নিয়ে তদন্ত চালিয়েই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy