(বাঁ দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কুণাল ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সিবিআই হেফাজত শেষের পর তিনি যখন প্রেসিডেন্সি জেলে ঢুকেছিলেন, তখন তাঁর ওজন ছিল ১১০ কিলো। রাজনৈতিক ধারেভারে তো বটেই, শারীরিক দিক থেকেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ‘ওজনদার’। গত এক বছরের কিছু বেশি সময়ে রাজনৈতিক ওজনের মতো শারীরিক ওজনও অনেকটা কমে গিয়েছে পার্থের। ১১০ থেকে তিনি এখন ৯০ কিলো।
পিতৃপক্ষের শেষ লগ্নে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে পার্থকে দেখলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তবে দু’জনের কোনও কথা হয়নি। বৃহস্পতিবার অন্য প্রয়োজনে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়েছিলেন কুণাল। সেই সময় জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তীর ঘরে বেশ কিছু সময় বসেছিলেন তিনি। সুপারের ঘরের মনিটরে প্রত্যেক বন্দির সেলের সিসি ক্যামেরার ছবি দেখা যায়। সেই মনিটরেই পার্থর ছবি দেখতে পান কুণাল। তার পরে সুপারের কাছেই পার্থের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। জানা গিয়েছে, জেল সুপার কুণালকে জানিয়েছেন, পার্থের ওজন কমেছে ২০ কিলো। ১১০ কিলো থেকে বেহালা পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক এখন ৯০ কিলো। পায়ের ফোলা ভাবটা এখনও রয়েছে। তবে এমনিতে ভালই আছেন তৃণমূলের একদা মহাসচিব এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী।
ঘটনাচক্রে, কুণালও একটা সময়ে সারদা মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন। বৃহস্পতিবার সেখানে যাওয়া প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘আমি বন্দি থাকাকালীন যে অফিসার, কারারক্ষী ও বন্দিরা আমায় ঝড়ঝাপ্টার মধ্যে আগলে রেখেছিলেন, তাঁদের জন্য পুজোর আগে আমি প্রত্যেক বার সামর্থ্য মতো শারদ উপহার নিয়ে যাই। বৃহস্পতিবারেও সেই কারণেই গিয়েছিলাম।’’ পার্থকে কেমন দেখলেন? কুণালের জবাব, ‘‘জেল সুপারের ঘরে বসে থাকলে যা যা দেখা যায়, তা-ই দেখেছি।’’
জেল সূত্রের খবর, কুণাল সুপারের ঘরে থাকাকালীনই পার্থের সেলে তাঁকে পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি জেলের প্রধান চিকিৎসক প্রণবকুমার ঘোষ। চিকিৎসকের পরীক্ষা করা হয়ে গেলে মনিটরে পার্থকে দেখা যায় সেলের মধ্যেই একটু পায়চারি করতে। তার পরে তিনি তাঁর জন্য বরাদ্দ ছোট্ট চৌকিতে শুয়ে পড়েন। প্রথমে কয়েক মিনিট চিত হয়ে শুয়েছিলেন। তার পরে পাশ ফিরে। তখন প্রাক্তন মন্ত্রীর পরনে ছিল হালকা রঙের বাটিক প্রিন্টের ঢোলা ফতুয়া আর লুঙ্গি। ঘটনাপ্রবাহ প্রসঙ্গে কুণালের ঘনিষ্ঠমহলের বক্তব্য, ‘‘একেই বলে সময়ের পরিহাস! একটা সময়ে বন্দি কুণাল ঘোষকে তৃণমূলের নেতারা মনিটরে দেখতেন। কথা না বলে চলে যেতেন। এখন পার্থদাকে কুণাল সেই একই মনিটরে দেখে এলেন।’’ তৃণমূলের অন্দরের খবর যাঁরা রাখেন, তাঁরা জানেন, দলে থাকার সময়ে পার্থের সঙ্গে কুণালের সম্পর্ক ছিল ‘মধুর’। কুণালের ‘কামব্যাক’ ঠেকাতে চেয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে পার্থ অন্যতম বলেই শাসকদলের অনেকের দাবি।
কুণালের প্রেসিডেন্সি জেলে যাওয়া নিয়ে জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি প্রতি বছর এই সময়টায় আসেন। বৃহস্পতিবারেও এসেছিলেন। কুণাল যখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি হিসাবে এসেছিলেন, তখন জেল সুপারের দায়িত্বে ছিলাম আমি। পরে আমায় অন্যত্র যেতে হয়েছিল। আবার এখন আমি দায়িত্বে।’’ পার্থকে তাঁর দফতরের মনিটরে কুণালের দেখতে পাওয়া প্রসঙ্গে জেল সুপার অবশ্য বলেন, ‘‘ওই ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy