Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
TMC

ঘরছাড়া কর্মীদের ফেরাতে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল, পুলিশের ভূমিকায় ‘ক্ষুব্ধ’ কুণালরা

নন্দীগ্রামে এ বার তৃণমূলের কর্মীদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। শাসকদলের দাবি, গেরুয়া শিবিরের তাণ্ডবে ঘরছাড়া বহু দলীয় কর্মী।

নন্দীগ্রামে কুণাল ঘোষ, শশী পাঁজা।

নন্দীগ্রামে কুণাল ঘোষ, শশী পাঁজা। নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ ১৯:৫৬
Share: Save:

নন্দীগ্রামে এ বার তৃণমূলের কর্মীদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। শাসকদলের দাবি, গেরুয়া শিবিরের তাণ্ডবে ঘরছাড়া বহু দলীয় কর্মী। তাঁদেরই ঘরে ফেরাতে শুক্রবার নন্দীগ্রামে গিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতারা। পুলিশ কেন কড়া পদক্ষেপ করছে না, তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। বিজেপি অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরের দিন অর্থাৎ ২০২১ সালের ৪ মে নন্দীগ্রাম জুড়ে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছিল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক সংঘর্ষে চিল্লোগ্রামের বিজেপি কর্মী দেবব্রত দাস নিহত হয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল। সেই নন্দীগ্রামেই এ বার উলটপুরাণ! সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর সেখানে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দাবি, ভোট পরবর্তী হিংসায় জখম হয়েছেন অনেক দলীয় কর্মী-সমর্থক। তাঁদের ১৪ জন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। শুক্রবার বিকেলে সেখানে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখাও করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তার আগে শুক্রবার বেলার দিকে নন্দীগ্রামে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন মুখপাত্র তথা জেলায় দলের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কুণাল ঘোষ, জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। ভেকুটিয়ায় গিয়ে তৃণমূলের ‘আক্রান্ত’ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। সব ঘটনায় যাতে লিখিত ভাবে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়, স্থানীয় নেতৃত্বকে সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পুলিশকেও কঠোর আইনি পদক্ষেপের কথা বলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতারা। ওই সময় সেখানেই ছিলেন নন্দীগ্রাম থানার আইসি সুমন রায়চৌধুরী। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কেন এখনও পদক্ষেপ করা হল না, তা পুলিশের কাছে জানতে চান কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘এই এলাকায় তৃণমূলের বুথ সভাপতির পুকুরে বিষ দিয়ে বিপুল টাকার মাছ মেরে ফেলা হয়েছে। তৃণমূলের একাধিক কর্মী হামলার শিকার হয়েছেন। যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করতে হবে।’’

বিজেপি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই তৃণমূলের কর্মীরা আক্রান্ত। দলের জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ মাইতি বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। নন্দীগ্রামে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। তারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আর অভিযোগ তোলা হচ্ছে আমাদের দিকে। আমরা অশান্তি নয়, শান্তি চাই। বাংলার পাশাপাশি নন্দীগ্রামে শান্তি বজায় থাকুক। প্রশাসনের কাছে এটাই আমাদের আবেদন।’’

ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামে বেশ কিছু আসনে জিতেছে বিজেপি। আর সেই ফল ঘোষণার পরেই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। বুধবার রাতে বয়াল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রামচক-সহ একাধিক এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। তৃণমূলের বুথ সভাপতি অশোক পণ্ডাকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। তাঁকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও আঘাত গুরুতর হওয়ায় বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। তৃণমূলের বয়াল-২ অঞ্চল সভাপতি মনোজ সামন্তের অভিযোগ, ‘‘কয়েক জন তৃণমূল কর্মী ঘরছাড়া। বিজেপির সন্ত্রাসে ফিরতে পারছে না।’’ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভেকুটিয়া পঞ্চায়েতের মনুচকে এক মহিলা তৃণমূল কর্মীকে গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগও উঠেছে। সেই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। পরে মহিলা দাবি করেছেন, ‘‘চার জন বিজেপি কর্মী বাড়ি থেকে জোর করে নিয়ে এসে মারধর করেছে। আমার অপরাধ, আমি তৃণমূল করি।’’

বৃহস্পতিবার অবশ্য তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সন্ধ্যার পরে নন্দীগ্রামে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ মিথ্যা। আমরা তৃণমূলের মতো বর্বর নই।’’ বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি প্রলয় পালেরও দাবি, ‘‘আমাদেরই চার কর্মী হাসপাতালে ভর্তি। বিরুলিয়া-সহ নানা এলাকায় আমাদের কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy