কুনাল ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
এ বার সাংবাদিক বৈঠক করে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির দাবি তুললেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। একটি বিশেষ চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে তাঁর ‘সম্পর্ক’, সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে কোটি টাকা ‘ঘুষ’ নেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগ মঙ্গলবার শোভনের বিরুদ্ধে তুলেছেন তিনি। সেই সব অভিযোগে কেন শোভনকে গ্রেফতার করা হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল। যদিও তাঁর বক্তব্যের ভিত্তিতে শোভন এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি।
বছর দেড়েক আগে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন। কিন্তু গত দেড় বছরে তিনি বিজেপি-র মঞ্চে কখনও বক্তৃতা করেননি। সোমবার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তিনি বিজেপি-র প্রকাশ্য কর্মসূচিতে যোগ দেন। মঙ্গলবার তাঁর ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল বলেন, ‘‘গতকাল শোভন আমার সম্পর্কে অনেক বড় বড় কথা বললেন। কিন্তু, আগে উনি জবাব দিন আইকোর চিটফান্ডের সঙ্গে তাঁর কীসের যোগাযোগ? উনি তো ওই চিটফান্ডের অনুষ্ঠানে গিয়ে সংস্থার কর্তা প্রয়াত অনুকূল মাইতি ও তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আইকোরের হয়ে সওয়াল করেছিলেন। ওটা এজেন্ট বৈঠক ছিল।’’ এ প্রসঙ্গে বলার সময় কুণাল একটি ছবিও প্রকাশ্যে আনেন। সেখানে আইকোর কর্তার পাশে শোভনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এর পরেই কুণাল প্রশ্ন তোলেন, ‘‘চিটফান্ডের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে তাঁকে প্রোমোট করার জন্য কেন শোভনকে গ্রেফতার করা হবে না?’’ কুণালের আরও দাবি, তিনি এ ব্যাপারে মাস দেড়েক আগে সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছেন।
শুধু আইকোর নয়, নারদ ও সারদা-কাণ্ডে যোগ থাকা নিয়েও নিয়েও শোভনের গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন কুণাল। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়রের চেয়ারে বসে উনি টাকা নিয়েছেন। সারা দুনিয়া দেখেছে।’’ এর পরেই তিনি একটি কাগজ দেখিয়ে দাবি করেন, সেটি আদালতের সার্টিফায়েড কপি। যেখানে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন বিচারকের কাছে দাবি করেছেন, একটি ব্যবসায়িক লাইসেন্সের জন্য কলকাতার মেয়র শোভনকে তিনি ১ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। কুণালের দাবি, ‘‘মেয়রের চেয়ারে বসে এক কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন যিনি সেই শোভন কেন গ্রেফতার হবে না? যদি আইকোর-কাণ্ডে সাংবাদিক গ্রেফতার হতে পারেন, নারদ-কাণ্ডে পুলিশকর্তা গ্রেফতার হতে পারেন, তা হলে রাজনীতিকদের কেন গ্রেফতার করা হবে না? আমি চাই, ওঁকে গ্রেফতার করে ভুবনেশ্বরে নিয়ে গিয়ে জেরা করা হোক।’’
আরও পড়ুন: কোভিড টিকা কারা, কী ভাবে পাবেন, আনন্দবাজার ডিজিটালে পড়ে নিন
এখানেই থামেননি কুণাল। তাঁর দাবি, তিনি যখন রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন, তখন কলকাতা পুরসভাকে তিনি ৪০টি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েছিলেন। কুণালের কথায়, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স কেনার টাকা আমার এমপি ল্যাড থেকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও অ্যাম্বুল্যান্সেই আমার নাম ছিল না। সব নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। ওই অ্যাম্বুল্যান্স আদৌ কেনা হয়েছিল কি না তা আমার জানা নেই।’’
কুণাল ব্যক্তিগত জায়গা থেকেই শোভনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন বলে দাবি করেছেন। পাশাপাশি তিনি শোভনকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘শোভন আমাকে চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত করেছে বলে আমি আজ এটুকুই বললাম। উনি যদি আবার মুখ খোলেন তা হলে, এর চেয়ে বড় জিনিস আমি দেখাব।’’
যদিও তৃণমূল মুখপাত্র কুণালের এই সমস্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে শোভনকে ফোন করা হয়। তাঁর মোবাইল সুইচড অফ ছিল। পরে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোবাইলে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy