কুহেলী চক্রবর্তী
আড়াই বছর পরে রায় ঘোষণা হল। কিন্তু চার মাসের শিশুকন্যাকে হারানো মায়ের বুক জুড়োল না।
২০১৭-য় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ইএম বাইপাসের লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালের চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুহেলী চক্রবর্তীর (৪) বাবা অভিজিৎ চক্রবর্তী এবং মা শালু চক্রবর্তী। দীর্ঘ শুনানির পরে তিন চিকিৎসক সঞ্জয় মহাবর, সুভাষ তিওয়ারি ও বৈশালী রায় শ্রীবাস্তবের রেজিস্ট্রেশন তিন মাসের জন্য বাতিল করেছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। ১ নভেম্বরের ওই রায়ের প্রতিলিপি বৃহস্পতিবার হাতে পাওয়ার পরে ক্ষুব্ধ শালুদেবী বলেন, “সুবিচারের আশায় ছিলাম। কিন্তু কী পেলাম? এক জন চিকিৎসককে ছাড় দেওয়া হল। বাকি তিন জনকে শাস্তির নামে উপহার দেওয়া হল তিন মাসের ‘হলিডে প্যাকেজ’। যে-মা চার মাসের শিশুকন্যাকে হারিয়েছে, তার সঙ্গে এটা না-করলেই ভাল হত!”
অভিজিৎবাবু বলেন, “এমনটা হতে পারে আন্দাজ করে ‘দিদিকে বলো’য় আগেই সব জানিয়েছি। ২৫ অক্টোবরের শুনানিতে মেডিক্যাল কাউন্সিলের সদস্যদের বক্তব্য শুনে খটকা লেগেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে শাস্তি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাব। সুবিচার পাওয়ার জন্য যত দূর যেতে হয় যাব।”
কুহেলীর ডাক নাম ছিল গুঞ্জা। মলের সঙ্গে রক্ত বেরোনোয় তাকে জোকার ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কোলোনোস্কোপির সুবিধা সেখানে না-থাকায় বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। ওই পরীক্ষার জন্য দিনভর গুঞ্জাকে খালি পেটে রাখা হয়েছিল বলে জানান আত্মীয়েরা। কিন্তু লোকাভাবে সে-দিন পরীক্ষা হয়নি। পরের দিন আবার সাত ঘণ্টা পেট খালি রেখে ওই পরীক্ষা করা হয়। মা অভিযোগ করেন, পরীক্ষার জন্য অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পরে মেয়ের জ্ঞান ফেরেনি। ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। পরের দিন সকালে জানানো হয়, গুঞ্জা মারা গিয়েছে।
মা-বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী বলেন, “চার অভিযুক্তের মধ্যে চিকিৎসক মহেশ গোয়েনকার কোনও ভূমিকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি ওই ঘটনায়। বাকি তিন জনের ক্ষেত্রে কাউন্সিলের সদস্যেরা যা রায় দিয়েছেন, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবেদনকারীরা অসন্তুষ্ট হলে স্বাস্থ্যসচিবের কাছে আর্জি জানাতে পারেন। তিনি যা বলবেন, সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
বেসরকারি হাসপাতালের সিইও রানা দাশগুপ্ত বলেন, “কাউন্সিলের রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার পরেই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy