Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Krishnanagar Municipality

পুরসভায় নিয়োগ, গায়েব ২৫ হাজার ‘ওএমআর শিট’

চাকরিপ্রার্থী অপূর্বলাল বলেন, “বিশ্বাসই করতে পারছি না যে পুরসভার কাছে ওএমআর শিট নেই! সেগুলো সরিয়ে ফেলা হল নাকি হাওয়ায় মিলিয়ে গেল?”

কৃষ্ণনগর পুরসভা।

কৃষ্ণনগর পুরসভা। ফাইল চিত্র।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৪৯
Share: Save:

চার বছর আগে, অর্থাৎ, ২০১৮ সালে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন পদে চাকরির পরীক্ষা নেয় কৃষ্ণনগর পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, সেই পরীক্ষার ভিত্তিতে অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার থেকে মজদুর পর্যন্ত ১৭টি পদে ৭২ জনকে নিয়োগ করা হয়। সেই সময়েই তৃণমূল পরিচালিত ওই পুরসভার অন্দরে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সম্প্রতি তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) এই ব্যাপারে একটি আবেদন করা হয়েছিল। তার জবাবে পুরপ্রধান, তৃণমূলের রিতা দাস জানিয়েছেন,সেই পরীক্ষার প্রায় ২৫ হাজার উত্তরপত্রের (ওএমআর শিট) খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

যাঁরা আরটিআই করেছেন, তাঁদের অন্যতম হাঁসখালির জয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় সরকার নিজেই চাকরিপ্রার্থী ছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি অভিযোগ করেন, “চাকরি পাওয়া দূরের কথা, পরীক্ষার ফল পর্যন্ত জানতে পারিনি।” একই অভিযোগ করছেন তথ্য জানতে চাওয়া আর এক চাকরিপ্রার্থী, ভাইনার বাসিন্দা অপূর্বলাল বিশ্বাসও। এই নিয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছেন দাবি করে হাঁসখালির ভৈরবচন্দ্রপুরের সুমন বিশ্বাসের অভিযোগ, “আমি ২০১৯ সালে আরটিআই করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আবেদনপত্র জমা তো নেওয়াই হয়নি, উপরন্তু আমাকে ঘর থেকে বার করে দেওয়া হয়।”

ওই পরীক্ষা যখন নেওয়া হয়েছিল, সে সময়ে কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান ছিলেন তৃণমূলের অসীম সাহা। গত পুরভোটে ফের জিতে তিনি চেয়ারম্যান ইন-কাউন্সিল সদস্য হয়েছেন। পুরপ্রধান হয়েছেন রিতা দাস। এ দিন পুরপ্রধান বলেন, “আরটিআই হওয়ার পর আমি প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহার কাছে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানতে চাই। তিনি জানান, সব কিছু দফতরের জিম্মায় আছে। তিনি কিছু জানেন না।” পুরপ্রধান বলেন, “অসীমবাবুর জবাব পাওয়ার পর প্রধান করণিকও লিখিত ভাবে জানান যে, ওএমআর শিট বিষয়ে কিছু তাঁর জানা নেই।” অসীম বলেন, “২৫ হাজার পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র আমার কাছে থাকার কথা নয়। পুরসভার দফতরের তত্ত্বাবধানে থাকার কথা।” পুরসভার প্রধান করণিক পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “আমায় কেউই কোনও দিন ওই সব ওএমআর শিট দেননি। আমি সেগুলো চোখেই দেখিনি।”

চাকরিপ্রার্থী অপূর্বলাল বলেন, “বিশ্বাসই করতে পারছি না যে পুরসভার কাছে ওএমআর শিট নেই! সেগুলো সরিয়ে ফেলা হল নাকি হাওয়ায় মিলিয়ে গেল?”

পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী, কংগ্রেসের শান্তশ্রী সাহার দাবি, “যখন নিয়োগ হচ্ছিল, তখনই লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে অযোগ্যদের কাছে চাকরি বিক্রির কথা জানা যাচ্ছিল। এ বার মৌচাকে ঘা পড়েছে।” বিজেপি কাউন্সিলর বর্ণালী গুইন দত্তের দাবি, “বড় দুর্নীতি গোপন করতে উত্তরপত্রগুলি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।” উত্তরপত্র যে পাওয়া যাচ্ছে না, পুলিশকে তা জানানো হয়নি কেন? পুরপ্রধানের বক্তব্য, “আমি একা সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। বোর্ড অব কাউন্সিলরের বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হবে সেই মতো পদক্ষেপ করব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnanagar Municipality TMC OMR Sheet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy