Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

নির্বাচনের মুখে শহরে হোর্ডিং নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর পুরসভা

নির্বাচনে দেওয়াল লিখন আগেই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। এ বার শহরের ঐতিহ্যবাহী এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকায় হোর্ডিং, ব্যানার টাঙানো নিষিদ্ধ করছে পুর প্রশাসন। যার অর্থ, বাণিজ্যিক হোর্ডিংয়ের মতো নির্বাচনী হোর্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও এ বার সংযত হবে শহর কলকাতা।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০২:৪২
Share: Save:

নির্বাচনে দেওয়াল লিখন আগেই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। এ বার শহরের ঐতিহ্যবাহী এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকায় হোর্ডিং, ব্যানার টাঙানো নিষিদ্ধ করছে পুর প্রশাসন। যার অর্থ, বাণিজ্যিক হোর্ডিংয়ের মতো নির্বাচনী হোর্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও এ বার সংযত হবে শহর কলকাতা। লোকসভা ভোটের মুখে কাল, বৃহস্পতিবার পুরসভার অধিবেশনে ওই নির্দেশে সিলমোহর পড়ছে।

নির্বাচনের মুখে এই সিদ্ধান্তে তো অসুবিধায় পড়বে রাজনৈতিক দলগুলিও? এ নিয়ে পুরসভার মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমারের সাফ কথা, “কলকাতার সৌন্দর্যায়নের জন্য এই পদক্ষেপ। নিষেধাজ্ঞা মানতে হবে সবাইকেই। রাজনৈতিক দলগুলি এর বাইরে নয়।” অর্থাত্‌, পুরসভার নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার কিছু এলাকায় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রার্থীর প্রচারে কোনও হোর্ডিং, ব্যানার লাগাতে পারবেন না।

পুরসভা সূত্রের খবর, এর আগেও শহরের কয়েকটি হেরিটেজ জোনে হোর্ডিং লাগানোয় নিষেধ ছিল। কিন্তু এ বার সেই পরিসীমা আরও অনেক বাড়ানো হচ্ছে। এর জন্য বিজ্ঞাপন বাবদ পুরসভার আয় যে কম হবে, তা-ও জানিয়েছেন ওই দফতরের একাধিক কর্তা। তাঁদের কথায়, জায়গা কমলে আয় কমবেই। তা সত্ত্বেও পুর-প্রশাসন এমন সাহসী সিদ্ধান্ত নিল।

কিন্তু কেন?

মেয়র পারিষদ দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, শহরের সৌন্দর্যায়নে নানা প্রকল্প নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যেই কলকাতার বেশ কিছু এলাকা নব কলেবরে সেজে উঠেছে। আকর্ষণ বেড়েছে গঙ্গাপাড়ের। এ সবের সঙ্গে তাল মেলাতে বিশেষ কিছু এলাকা হোর্ডিংমুক্ত করার প্রয়োজন ছিল। অনেক ভেবেচিন্তেই তৃণমূল কংগ্রেস বোর্ড শহরের কিছু এলাকাকে ‘নো অ্যাডভার্টাইজমেন্ট জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করছে। ইতিমধ্যেই মেয়র পারিষদের বৈঠকে তা অনুমোদন করা হয়েছে।

কোন কোন এলাকা পড়ছে ওই ‘নো অ্যাডভার্টাইজমেন্ট জোন’-এ?

পুরসভা সূত্রে খবর, পুরো জওহরলাল নেহরু রোড, ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে থেকে এক্সাইড মোড় পর্যন্ত, এক্সাইড মোড় থেকে হেস্টিংস, ফের হেস্টিংস থেকে স্ট্র্যান্ড রোড বরাবর ফেয়ারলি এবং সেখান থেকে রাইটার্স বিল্ডিং, ডালহৌসি স্কোয়্যারের চার দিক-সহ পুরো বি বা দী বাগ চত্বর ও হেমন্ত বসু সরণি। এর সঙ্গে রয়েছে ইলিয়ট পার্ক, সিটিজেন্স পার্ক, মনোহরদাস তড়াগ, কার্জন পার্ক-সহ ময়দান এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এ ছাড়া, আকাশবাণী ভবন, ইডেন গার্ডেন্স, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, টিপু সুলতান মসজিদ এলাকায় হোর্ডিং লাগানো আগেও নিষিদ্ধ চিল। নতুন নির্দেশেও তা বলবত্‌ থাকছে।

পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতর সূত্রের খবর, বিজ্ঞাপন বাবদ বছরে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা আয় করে পুরসভা। যার সিংহভাগ আসে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় দেওয়া হোর্ডিং থেকেই। এখন হোর্ডিং টাঙানোর রাস্তার সংখ্যা কমে গেলে বিজ্ঞাপনের আয়েও যে থাবা পড়বে, তা বিলক্ষণ জানেন দেবাশিসবাবু। তবু তিনি বলেন, “শহরের সৌন্দর্যায়নকেই আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। পাশাপাশি পুরসভার আয় বাড়ানোও দরকার। দুটো দিক বজায় রেখেই এগোতে চায় পুর-প্রশাসন।” এর জন্য পুরসভা নতুন বিজ্ঞাপন নীতি গ্রহণের পথে এগোবে বলেও তিনি জানান।

অন্য বিষয়গুলি:

hoarding Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy