বিপজ্জনক হলেও এ ভাবেই চলে পারাপার। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।
তৈরি হয়নি ফুটব্রিজ। তাই দড়ি দিয়ে বাঁধা কয়েকটি ভাঙাচোরা নৌকাই ভরসা। কালীঘাট থেকে চেতলাঘাট যেতে এ ভাবেই ঝুঁকি নিয়ে প্রতি দিন আদিগঙ্গা পার হন হাজার হাজার নিত্যযাত্রী। এখানে ফুটব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা করেছিল সেচ দফতর। পরে শহর ও তার সংলগ্ন খালগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায় কলকাতা পুরসভা। সেচ দফতর এই প্রকল্প থেকে পিছিয়ে আসে। আপাতত প্রকল্পটি রূপায়ণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিপজ্জনক ভাবে পারাপার চলে। এখানে ফুটব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। পুরসভা, না সেচ দফতর কে এই কাজ করবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচনের পরে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।” অন্য দিকে, পুরকর্তৃপক্ষ জানান, শহরের খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভা নেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ফুটব্রিজ তৈরির ব্যাপারে কোনও আলোচনা হয়নি। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
খাল রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে কী সমস্যা ছিল?
সেচ দফতর সূত্রের খবর, শহর এবং শহর সংলগ্ন সব খাল এবং নিকাশি পাম্প সেচ দফতরই দেখভাল করত। কোনও সমস্যা হলে, সেচ দফতর সমাধান করত। কিন্তু এতে কাজে দেরি হত। তাই রাজ্য সরকার কলকাতা পুর-এলাকার সব খাল পুরসভাকেই দেখভালের দায়িত্ব দেয়। ঠিক হয় প্রয়োজনে পুরসভা সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করবে। ইতিমধ্যে কালীঘাটে আদিগঙ্গা পারাপার নিয়ে সেচ দফতর একটি সমীক্ষা করে। ফুটব্রিজ তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কে এই প্রকল্পটির রূপায়ণের দায়িত্ব নেবে তা স্থির হয়নি। সেই থেকেই বিষয়টি আটকে রয়েছে।
স্থানীয় বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এখানে বহু দিন ধরে এ ভাবেই পারাপার চলছে। এই ধরনের পারাপারে সবসময় ঝুঁকি থাকে। এক মাত্র ফুটব্রিজ তৈরি করে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। আমি সেচ দফতরকে এ বিষয়ে জানিয়েছি।”
পারাপারের ক্ষেত্রে কী অসুবিধা?
ভাঁটার সময়ে তিন, চারটি নৌকা বাঁধা থাকে। কিন্তু, দু’দিকে ধরার জন্য কোনও বাঁশ বা রেলিং থাকে না। ফলে নৌকার উপর দিয়ে পারাপারের সময়ে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকেই। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় ভরা কোটাল এবং বর্ষার সময়। তখন, জল বেড়ে যাওয়ায় নৌকা খুলে দিতে হয়। মাঝি নৌকা চালিয়ে যাত্রীদের পার করে দেন। চেতলাঘাটে একটি টিকিট ঘরও তৈরি করা হয়েছে। সকাল ছ’টা থেকে রাত আটটা পর্যম্ত টিকিটঘর খোলা থাকে। টিকিটঘর বন্ধ হওয়ার পরেও পারাপার চলে বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানান, সেচ দফতর দরপত্রের মাধ্যমেই একটি ঠিকাদারি সংস্থাকে এক বছরের জন্য যাত্রী পারাপারের পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়োগ করেছিল। তাঁরাই নৌকা রাখা এবং মাঝিদের দিয়ে যাত্রীদের পারাপারের ব্যবস্থা করেন।
বর্তমানে যে ঠিকাদারি সংস্থা দায়িত্বে আছে তার এক কর্মী বলেন, “জোয়ার-ভাটার দিকে নজর রেখেই নৌকা ঠিক করতে হয়। সব সময়ই মাঝি থাকেন। ভাটার সময়ে তাঁরাই নৌকা বেঁধে রাখেন। কিন্তু জোয়ার বা ভরা কোটাল থাকলে তাঁরা একটি নৌকায়ই আদিগঙ্গা পারাপার করান।”
নমিতা প্রামাণিক নামে এক যাত্রী বলেন, “কাজের প্রয়োজনে রোজই পারাপার করি। তবে বর্ষায় যাতায়াত করতে রীতিমত ভয় করে। এখানে পারাপারের জন্য ফুটব্রিজ খুবই জরুরি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy