Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Police

খবর দিল ফেসবুক, পিকনিক গার্ডেনে যুবকের আত্মহত্যা রুখল কলকাতা পুলিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ওই যুবক ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো আপলোড করেন। সেই ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি।’’

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ১৪:৩৫
Share: Save:

সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছিলেন, জীবন শেষ করে দেবেন। সে কথা একটি ভিডিয়ো বার্তা-সহ পোস্ট করেছিলেন নিজের ফেসবুকে। আর সেই ‘পোস্ট’ই বাঁচিয়ে দিল পিকনিক গার্ডেন এলাকার এক যুবককে। সৌজন্যে ফেসবুক এবং কলকাতা পুলিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ওই যুবক ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো আপলোড করেন। সেই ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি।’’ তাদের প্ল্যাটফর্মে পোস্ট হওয়া এই সংক্রান্ত বিষয়ের উপরেই নজর রাখে ফেসবুক। এই ধরনের একটি পোস্ট দেখে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ইমেল করে তারা লালবাজারকে জানায়, কলকাতার এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের ওয়ালে আত্মহত্যার বার্তা-সহ একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। ওই যুবকের ফেসবুক প্রোফাইল-সহ কিছু তথ্য তাঁরা কলকাতা পুলিশকে দেন। এর পরেই তৎপর হয় কলকাতা পুলিশ।

সাইবার সেলের গোয়েন্দারা ফেসবুকের দেওয়া তথ্য এবং ওই যুবকের প্রোফাইল ঘেঁটে পোস্টটি কোন মোবাইল থেকে করা হয়েছে, তা বার করেন। এর পর সেই মোবাইলের আইপি অ্যাড্রেস ট্র্যাক করে যুবকের ফোনের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করেন। দেখা যায়, ওই যুবকের মোবাইল লোকেশন সেই মুহূর্তে কসবা থানা এলাকার পিকনিক গার্ডেন।

আরও পড়ুন: বাবা কে! সদ্যোজাতের পিতৃত্বের দাবি নিয়ে হাসপাতালে তিন জন

সঙ্গে সঙ্গে লালবাজার থেকে যোগাযোগ করা হয় কসবা থানার সঙ্গে। খবর পেয়ে থানার ওসি পৌঁছন ওই যুবকের মোবাইল লোকেশন যেখানে দেখাচ্ছে, সেই জায়গায়। যদিও সেই লোকেশন কোনও বাড়ির ঠিকানা নয়। এর পর ওই যুবকের সঙ্গে পুলিশকর্মীরা কথা বলেন। কথা হয়, তাঁদের সঙ্গে থাকা মনোবিদদের সঙ্গেও। জানা যায়, ওই যুবক বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। ব্যক্তিগত বিভিন্ন কারণের পাশাপাশি ওই যুবকের পারিবারিক সমস্যাও রয়েছে। মাঝে কয়েক দিন বাড়ি ছেড়ে চলেও গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে ওই যুবককে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয় পুলিশ। কী কারণে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন ওই যুবক, সে ব্যাপারে পুলিশ কিছু জানায়নি।

ফেসবুক থেকে কলকাতা পুলিশ হয়ে ওই যুবকের প্রাণে বেঁচে যাওয়া— কী ভাবে এমনটা সম্ভব হল?

সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘সারা বিশ্বে প্রায় ২০০ কোটির উপর ফেসবুক ইউজার আছে। সবার ফেসবুক প্রোফাইলের উপর নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। ফেসবুকের একটি আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স (এআই) এবং ডেটা অ্যানালিসিস সিস্টেম আছে। কেউ যদি আত্মহত্যা শব্দটি লেখেন বা ওই সংক্রান্ত কোনও অডিয়ো অথবা ভিডিয়ো আপলোড করেন, তা হলে সেটা সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের নজরে চলে আসে।’’ তিনি আরও জানান, বিশ্ব জুড়ে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলে ফেসবুক বিষটিকে আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এ ভাবেই ফেসবুকের নজরে পড়ে বিষয়টি। এবং সঙ্গে সঙ্গে তা লালবাজারকে জানানো হয়েছে। বিভাসবাবুর মতে, ফেসবুক ওই ইউজারের আইপি অ্যাড্রেস কলকাতা পুলিশের সঙ্গে শেয়ার করে। এবং তাতে পুলিশের অনেকটা সুবিধা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই আইপি অ্যাড্রেস এবং যে মোবাইল তিনি ব্যবহার করছিলেন তার আইএমআই নম্বর দেখেই পুলিশ মোবাইলের লোকেশন জানতে পারে। ফলে ওই ব্যক্তির প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: হাতে কাজ নেই, চিত্র পরিচালক এখন রক্ষী

ফেসবুক লাইভ করে বা ফেসবুকে ভিডিয়ো আপলোড করে আত্মহত্যার ঘটনা এর আগে বেশ কয়েক বার ঘটেছে শহরে। কিন্তু এমন তৎপরতার সঙ্গে দ্রুত পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি কখনও। তা সে পুলিশ হোক বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর বলেন, ‘‘এটা আমাদের কর্তব্য। এক জন মানুষের প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে। ওই ব্যক্তির প্রাইভেসির কারণে এর থেকে বেশি আমরা কিছু জানাতে চাইছি না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy