ময়দানে সেই রাতে ওই ঘটনার সময়ে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের সরকারি নিয়ম, রাত ন’টা থেকে জারি থাকবে কার্ফু। সেই নিয়ম কার্যত হেলায় উড়িয়ে মঙ্গলবার রাতে রেড রোডে পুলিশকে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠল বছর ২৮-এর এক তরুণীর বিরুদ্ধে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই তরুণী মত্ত অবস্থায় ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, উদ্ধার করতে যাওয়া পুলিশকর্মীকে গালিগালাজ করা ছাড়াও তিনি এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে চড় মারেন। ঘটনার এক দিন পরেও গ্রেফতার করা হয়নি অভিযুক্তকে। এমনকি, তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেনি পুলিশ।
এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কার্যত বিবস্ত্র অবস্থায় থাকা ওই তরুণীকে ময়দান থানা উদ্ধার করতে গিয়েছিল মহিলা পুলিশকর্মী ছাড়াই। শেষে ঘণ্টাখানেক পরে কলকাতা পুলিশের ‘শক্তি’ বাহিনীর মহিলা কর্মীরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ। প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় এক তরুণীকে রেড রোড ধরে হাঁটতে দেখে চমকে যান কয়েক জন পথচারী। তাঁদেরই এক জন কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে বিষয়টি জানান। তিনি খবর দেন ময়দান থানায়। ওই পুলিশকর্মী বুধবার বলেন, ‘‘কাছে যেতেই আমাকে ধাক্কা মারেন ওই তরুণী। তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন। প্রথমে ভেবেছিলাম, তরুণী হয়তো নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। পরে পুরো ঘটনা জানতে পারি।’’
ময়দান থানার একটি গাড়ি গিয়েও তরুণীকে উদ্ধার করতে পারেনি। এর পরে সেখানে আসে পুলিশের আরও গাড়ি। পৌঁছন ময়দান থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক। আসে ‘শক্তি’ বাহিনীও। পুলিশের দাবি, এক জায়গায় বসার বদলে পাশ দিয়ে যাওয়া গাড়ির দিকে বারবার ছুটে যাচ্ছিলেন তরুণী। তখনই গালিগালাজের পাশাপাশি তিনি এক পুলিশকর্মীকে চড় মারেন বলে অভিযোগ। অনেক কষ্টে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
পরে ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, ভবানীপুরের পদ্মপুকুর এলাকায় তাঁর বাড়ি। সন্ধ্যায় পাড়ারই এক যুবকের সঙ্গে ময়দান চত্বরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে দু’জনে মদ্যপান করেন। তরুণীর দাবি, তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়লে তাঁকে ফেলে চলে যান ওই যুবক। কিন্তু তাঁর পোশাক কোথায় গেল, কেনই বা ওই যুবক তাঁকে ফেলে চলে গেলেন— সেই সব প্রশ্নের সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। রাতেই তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
বুধবার ভবানীপুরে গিয়ে জানা গেল, পদ্মপুকুরের পাশেই একটি পুরনো বাড়িতে মা, দাদা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন ওই তরুণী। ২০১০ সালে বাবার মৃত্যুর পরে দাদার রোজগারেই সংসার চলে তাঁদের। দেখা গেল, তরুণীর বাড়ির পাশেই ফুটপাতের একাংশ জুড়ে তৈরি হয়েছে ক্লাব। সেখানকার সদস্যেরা তরুণীর বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দেননি। পাড়ার যে যুবকের সঙ্গে ওই তরুণী গিয়েছিলেন, দরজা খুলতে চায়নি তাঁর পরিবারও। তবে স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ওই যুবক।
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদ শুধু বলেছেন, ‘‘ঘটনাস্থলে মহিলা পুলিশ ছিল। তেমন কিছু হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy