মৃত সুইটি সূত্রধর। নিজস্ব চিত্র
ছাদ থেকে পড়েই মৃত্যু হয়েছে যাদবপুর পোদ্দারনগরের তরুণী সুইটি সূত্রধরের। বৃহস্পতিবার ময়না-তদন্তের রিপোর্টে এমনই জানা গিয়েছে। তাঁর শরীরে কোনও রকম আঘাতের চিহ্ন মেলেনি বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফরেন্সিক আধিকারিকেরাও জানিয়েছিলেন, সুইটির দেহ যে ভাবে উদ্ধার হয়েছে তাতে স্পষ্ট যে, তিনি সমান্তরাল ভাবে পড়েছেন। এটা সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটলে বা আত্মঘাতী হলে হয়। কেউ ধাক্কা মারলে দেহ দূরে ছিটকে পড়ত। শুধু তাই নয়, পড়ার সময়ে সুইটি হাত
দিয়ে দেওয়াল ধরে বাঁচতে চেয়েছিলেন। সেই হাতের বা ঘষার দাগও মিলেছে। পড়ার পরেও তিনি বেঁচে ছিলেন এবং ওঠার যে চেষ্টা করেছিলেন, সে চিহ্নও পড়ে থাকা জায়গার দাগে স্পষ্ট বলে ফরেন্সিক আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: পানশালার পর ফ্ল্যাটের ছাদে গিয়েও দেদার মদ্যপান, বেসামাল হয়েই কি মৃত্যু সুইটির
পুলিশ জানিয়েছে, বর্ষবরণের রাতে সুইটি তাঁর স্বামী কুন্তল আচার্যের সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। কুন্তল পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা গড়িয়াহাটের একটি পানশালায় বসে অতিরিক্ত মদ্যপান করেন। পরে রাতে বাড়ি ফিরে দেখেন সেখানে ছাদে বহুতলের কিছু বাসিন্দা পার্টি করছেন। তাঁরা ওই পার্টিতে অংশ না নিলেও ছাদে গিয়েছিলেন। সেখানে বসে ফের দু’জনে মদ্যপান করেন। পুলিশকে ওই বহুতলের বাসিন্দারাও একই কথা বলেন।
পরে বাকিরা নেমে এলেও সুইটি আর কুন্তল সেখানেই ছিলেন। গভীর রাতে বাসিন্দারা কান্নার আওয়াজ পেয়ে ফের ছাদে যান। কিন্তু কেউ সেখানে ছিলেন না। পরের দিন সকালে কুন্তল স্ত্রীকে না পেয়ে যাদবপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে আসেন। এর পরেই বেলা ১১টা নাগাদ ওই বহুতলের দু’টি ভবনের মাঝে ফাঁকা জায়গা থেকে সুইটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়েরা। তাঁরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে।
জেরায় কুন্তল জানিয়েছে, রাতে সকলে নেমে যাওয়ার পরে তিনিও নীচে নেমে আসেন। সুইটি ছাদেই ছিলেন। কুন্তলের দাবি সে দিন অতিরিক্ত মদ্যপান করায় একটা সময়ের পরে দু’জনেরই প্রায় হুঁশ ছিল না। আর তিনি সে অবস্থাতেই নীচে নিজের ফ্ল্যাটে নেমে আসেন। তার পরে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে সকালে ঘুম ভাঙতে দেখেন সুইটি নেই!
এ দিকে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে সুইটিও পুরোপুরি বেহুঁশ ছিলেন। সম্ভবত সেই অবস্থাতে তিনি দু’টি ভবনের ছাদের মাঝে থাকা ছোট পাঁচিল টপকাতে গিয়েছিলেন। পাঁচিল ভেবে তিনি দু’টি ছাদের মাঝের ফাঁকা জায়গায় পা রাখতে গিয়ে পড়ে যান। অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য তিনি চিৎকারও করতে পারেননি। পড়ে যাওয়ার পরে তাঁর গোঙানিই বহুতলের বাসিন্দাদের কাছে কান্না বলে মনে হয়েছিল। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘‘উপর থেকে পড়ে গিয়েই ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে তরুণীর পাকস্থলীতে প্রচুর অ্যালকোহল মিলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy