Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Subrata Mukherjee

Subrata Mukherjee Death: সুব্রতের জন্য মনখারাপ, কাজ নিয়েও চিন্তা

বৃহস্পতিবার রাতে খবরটা শোনা ইস্তক ওঁরা প্রায় বাক্যহারা। কাজ করার ক্ষমতাটুকুও পাচ্ছেন না।

অতিথি: সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের প্রকল্পের রান্না করা খাবারে পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে আপ্যায়ন।

অতিথি: সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের প্রকল্পের রান্না করা খাবারে পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে আপ্যায়ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৪১
Share: Save:

মন ভাল নেই ওঁদের। বৃহস্পতিবার সারা রাত সকলে প্রায় না ঘুমিয়েই কাটিয়েছেন। কাজ থাকবে কি না, সেই দুশ্চিন্তাও মাথায় চেপে বসেছে। ওঁরা বিভিন্ন জেলা থেকে কলকাতায় কাজ করতে আসা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা। পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্থ সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের প্রকল্পে কাজ করেন। সদ্য প্রয়াত পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই কোভিড পরিস্থিতিতে ওঁদের রান্না করা খাবার শহরের বাড়ি বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। অনলাইনে অর্ডারের ভিত্তিতে সেই খাবার বিক্রি এখনও চলছে। সল্টলেকের মৃত্তিকা ভবনে দফতরের রান্নাঘর সামলাচ্ছেন ওঁরা।

বৃহস্পতিবার রাতে খবরটা শোনা ইস্তক ওঁরা প্রায় বাক্যহারা। কাজ করার ক্ষমতাটুকুও পাচ্ছেন না। এমনই এক জন, নদিয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা অসীমা বিশ্বাসের কথায়, ‘‘সুব্রতবাবুর জন্যই আমরা কলকাতায় এসে কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম। নিজে এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন, উৎসাহ দিতেন। উনি যে নেই, সেটা ভাবতেই পারছি না। ওঁর ওই হাসিমুখটাও ভোলা যাচ্ছে না।’’

মৃত্তিকা ভবনে সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের ক্যান্টিনে সস্ত্রীক এসে খাওয়াদাওয়া করেছেন সুব্রতবাবু। ক্যান্টিনের ফুড ইন-চার্জ শ্রীতমা রায় বললেন, ‘‘মাছের টক, পাঁঠার মাংস আর লুচি খেয়ে রান্নার তারিফ করেছিলেন। বলেছিলেন, আবার আসবেন।’’ পঞ্চায়েত দফতরের বিশেষ সচিব ও সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসনিক সচিব সৌম্যজিৎ দাসের কথায়, ‘‘সারা রাজ্যে আমাদের ২৩টি খামার রয়েছে। আনাজ ও মাছের চাষ থেকে ছাগল, মুরগি প্রতিপালন— ওই সমস্ত খামারে সবই হয়। জৈব পদ্ধতিতে চাষ করা খাদ্যসামগ্রী কলকাতায় এনে, রান্না করে অনলাইন অর্ডারের ভিত্তিতে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের মানুষের কল্যাণে এই বিভাগকে শক্তিশালী করতে সুব্রতবাবু বহু বার জেলা সফরে গিয়েছেন। এ মাসেও শিলিগুড়ির একটি প্রকল্প এলাকায় যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।’’

মৃত্তিকা ভবনে পর্ষদের রান্নাঘর সামলানোর দায়িত্বে থাকা, নদিয়ার জোহরা বিবি, পিয়ালি দাস বা কাঞ্চন বালারা এখন প্রবল অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। জোহরা বিবির কথায়, ‘‘আমাদের মতো সাধারণ মানুষের সঙ্গেও উনি যেচে কথা বলতেন। গ্রাম থেকে কলকাতায় এসে একটু রোজগার করতে পারছি। সুব্রতবাবু নেই। এখন মনে হচ্ছে, আমাদের চাকরিটা এর পরে থাকবে তো?’’

সুব্রতবাবুর ঘনিষ্ঠ মহলের অনেকেই বলছেন, সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ বা শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থ তিনি বরাবরই দেখে এসেছেন। তাই পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের খামারগুলি ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হন তিনি। এর জন্য গ্রামে গ্রামে গিয়ে জেলাশাসক এবং সংশ্লিষ্ট জেলা, ব্লক ও পঞ্চায়েত আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করতেন।

সৌম্যজিতের কথায়, ‘‘অসুস্থ থাকাকালীন ফাইলে সইসাবুদ করার জন্য গড়িয়াহাটের ফ্ল্যাটে ডেকে পাঠাতেন। ফাইল যাতে আটকে না থাকে, তার জন্য বার বার বলতেন। বয়স হলেও কোভিড পরিস্থিতিতে পূর্ণ উদ্যমে কাজ করেছেন। এমন এক জন মানুষকে কাছ থেকে দেখতে পাওয়াটাও একটা অভিজ্ঞতা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Subrata Mukherjee Death TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy