প্রহৃত অনিতা দাস। রবিবার, বাঘা যতীনের বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
প্রোমোটিং করতে দিতে রাজি না হওয়ায় এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠল বাঘা যতীনের রবীন্দ্রপল্লি এলাকায়। শনিবার দুপুরের এই ঘটনায় আক্রান্ত মহিলার নাকে এবং মাথায় চোট লেগেছে। তাঁর পোশাকও ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এলাকাটি পাটুলি থানার অন্তর্গত হওয়ায় সেখানে লিখিত অভিযোগ দায়ের হলেও রবিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করেনি। অভিযুক্ত প্রোমোটারের দাবি, তিনি কিছু জানেন না। এলাকার লোকজনই অনৈতিক কাজ সহ্য করতে না পেরে হামলা চালিয়েছেন।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, রবীন্দ্রপল্লির একটি বাড়িতে অন্য শরিকদের সঙ্গে থাকেন বাপ্পা দাস। তিনি গড়িয়া-গোলপার্ক রুটে অটো চালান। তাঁর বাবা, বছর আটষট্টির মানিক দাস বাঘা যতীন বাজারে কাজ করেন। বাপ্পার স্ত্রী অনিতা বাড়ির জানলায় বসেই মুদিখানার জিনিস বিক্রি করেন। মানিকবাবুর দাবি, শনিবার দুপুরে বাপ্পা অটো নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হন জনা পনেরো মহিলা। তাঁদের পিছনেই ছিলেন কয়েক জন পুরুষ। তাঁরা জোর করে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, মানিকবাবু দরজা আটকে দাঁড়ালে তাঁর চোখে-মুখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর কথায়, ‘‘মুখে-চোখে লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দেওয়ার পরে আমি আর দরজা আটকে রাখতে পারিনি। বৌমা ভিতর থেকে দরজা আটকে বসেছিল। ইট দিয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে দেখে এর পরে বৌমা দরজা খুলে দেয়।’’
এর পরে অনিতাকে মারধর করা শুরু হয় বলে দাবি। অনিতা রবিবার বলেন, ‘‘ভিতরে ঢুকে সমস্ত জিনিস ছুড়ে ভাঙতে শুরু করল ওরা। জানলার সামনে যে মুদিখানার জিনিস রাখি, তা-ও সব আছড়ে ফেলে দেয়। খাট থেকে চুলের মুঠি ধরে আমায় টেনে নামায় ওরা। রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ফেলে মারতে শুরু করে। নাক ফেটে রক্ত পড়তে দেখে শেষে থামে।’’ এর পরে অনিতাকে পাড়ার লোকজন বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। শনিবার রাতে তাঁকে সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাতেই পাটুলি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন অনিতারা।
কিন্তু এ ভাবে বাড়ি ঢুকে মারধর করা হল কেন? অনিতার দাবি, ‘‘আমাদের এই শরিকি বাড়ির পাশেই প্রদীপ ঘোষ নামে এক প্রোমোটারের ফ্ল্যাট রয়েছে। আমাদের এই বাড়িও প্রোমোটিং করতে চান তিনি। তবে আমাদের যা প্রাপ্য, তা তিনি দিতে রাজি নন। বাড়ির অন্য শরিকেরা রাজি হয়ে গেলেও আমরা রাজি হইনি। তাই বাড়ি ঢুকে এ ভাবে মারধর করা হয়েছে। আগেও বহু বার এ রকম কিছু ঘটানো হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন ওই প্রোমোটার।’’
প্রোমোটার প্রদীপ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, বাপ্পা এবং তাঁর পরিবারের লোকজন প্রতিদিন মত্ত অবস্থায় ঝামেলা করেন। আশপাশের লোকজন অতিষ্ট হয়েই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। প্রোমোটিংয়ের তত্ত্ব কি মিথ্যে? প্রদীপ বলেন, ‘‘ওঁদের বাড়ি প্রোমোটিং করার একটা কথা হয়েছিল বটে। কিন্তু গতকালের ঘটনা সেই জন্য নয়।’’ পাটুলি থানার পুলিশ যদিও জানিয়েছে, প্রোমোটিং নিয়ে অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তের মধ্যে বিবাদ চলছিল দীর্ঘদিন থেকে। সব পক্ষকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy