— প্রতীকী ছবি।
রাতের শহরে আবার নিরাপত্তাহীনতার শিকার হলেন এক তরুণী। অভিযোগ, বুধবার বন্ধুদের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাঁদের গাড়ির পিছু নেয় অন্য একটি গাড়ি। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের উত্তর ফটকের কাছে একটি জায়গায় হাওড়ার বাসিন্দা তরুণীর গাড়ি থামিয়ে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ। বেধড়ক মারধর করা হয় তরুণীর দুই বন্ধুকে। হেনস্থার মুখে পড়েন তরুণী এবং তাঁর এক বান্ধবী। মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন চার জন।
বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে একটি ধাবা থেকে খাওয়াদাওয়া করে চার জন একটি গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন। হেস্টিংস থানায় দায়ের করা এফআইআরে হাওড়ার বাসিন্দা ওই তরুণীর অভিযোগ, বালিগঞ্জের ধাবা থেকে একটি গাড়ি তাঁদের পিছু নেয়। শেক্সপিয়র সরণি দিয়ে যাওয়ার সময় বার বার গাড়িটি তাঁদের গাড়ির ঠিক পিছনে চলে আসছিল, হর্ন দিচ্ছিল। বেশ কয়েক বার এমন হওয়ার পর তরুণী চালকের আসনে থাকা তাঁরই এক বন্ধুকে বলেন, ওই গাড়িটিকে বেরিয়ে যাওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা করে দিতে। কিন্তু অভিযোগ, জায়গা পেয়েও গাড়িটি এগোয়নি। রাত সওয়া বারোটা নাগাদ ভিক্টোরিয়ার উত্তর ফটকের কাছে গাড়িটি এগিয়ে গিয়ে তরুণীর গাড়ির পথরোধ করে দাঁড়ায় বলে অভিযোগ। তরুণী এবং তাঁর বন্ধুরা গাড়ি থেকে নেমে বাইরে আসতেই শুরু হয় মৌখিক আক্রমণ। তরুণীর ভিডিয়ো করা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। তরুণী বাধা দিলে পাল্টা তাঁকেই মারধর করার চেষ্টা করা হয়। তাঁকে বাঁচান এক বন্ধু। তার পর অন্য গাড়ির পাঁচ সওয়ারি তরুণীর এক বন্ধুকে মারধর করতে শুরু করেন। রাস্তা থেকে পাথর তুলে তরুণীর এক বন্ধুকে মারা হয়। তাঁর মাথা থেকে রক্তপাত হতে থাকে। তরুণী এবং তাঁর বান্ধবী চিৎকার করতে থাকেন।
অভিযোগপত্রে তরুণীর দাবি, তাঁদের চিৎকার শুনে ভয় পেয়ে হামলাকারী পাঁচ যুবক গাড়ি নিয়ে চম্পট দেন। এর পর দুষ্কৃতীদের গাড়ির নম্বর দিয়ে হেস্টিংস থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। রাতেই পুলিশ চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। এখনও অধরা পঞ্চম অভিযুক্ত। তাঁর দ্রুত পাকড়াও করা হবে বলে মনে করছে পুলিশ।
আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল নিগৃহীতার সঙ্গে। পেশায় মডেল হাওড়ার বাসিন্দা তরুণী বলেন, ‘‘আমি বন্ধুদের সঙ্গে কাল রাতে বালিগঞ্জের একটি ধাবায় নৈশাহার করতে যাই। খাওয়া শেষ করে যখন গাড়ির দিকে এগোচ্ছিলাম, তখনও এক যুবক আমার ছবি তোলার চেষ্টা করেছিল বলে আমার ধারণা। আমি পুরোটা বুঝতে পারিনি কিন্তু আমাকে তাক করে মোবাইল এবং তা থেকে ফ্ল্যাশলাইটটুকু দেখতে পেয়েছিলাম। কিন্তু তখন বিশেষ পাত্তা দিইনি। বালিগঞ্জ থেকেই গাড়িটি আমাদের পিছু নেয়। তার পর ভিক্টোরিয়ার নর্থ গেটের কাছে এই কাণ্ড। সত্যিই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’’ আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্ন ছিল, রাতের শহরে বেরিয়ে এমন অভিজ্ঞতার জেরে কি আগামিদিনেও রাতে বেরোতে ভয় পাবেন? তা শুনে ২৪ বছরের তরুণী বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না, একটি ঘটনার উপর ভিত্তি করে বলে দেওয়া যাবে, রাতের কলকাতা আর মেয়েদের জন্য সেফ (নিরাপদ) নয়। আমি যত দূর বুঝেছি, ওই পাঁচ জন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। সবাই তেমন হন না।’’
তরুণীর আহত বন্ধুর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে। পুলিশি তৎপরতার জেরে তড়িঘড়ি বেশির ভাগ অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও ভিক্টোরিয়ার নর্থ গেটে মতো জায়গায় এমন ঘটনা ঘটে কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy