ভগ্নদশা: বেলেঘাটা মেন রোডে বিপজ্জনক বাড়িটির সেই ভেঙে পড়া অংশ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
শহরের বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে এমনিতেই অভিযোগের অন্ত নেই। কোথাও বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে দ্বন্দ্ব, কোথাও শরিকি বিবাদ— যার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংস্কার হয় না বিপজ্জনক বাড়ির। পুরসভা বার বার নোটিস পাঠালেও সরেন না বাসিন্দারা। তার পরিণতি কী হতে পারে, ফের দেখা গেল বৃহস্পতিবার বেলেঘাটা মেন রোডে। একতলা একটি বাড়ির ছাদের একাংশ ভেঙে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধার। গুরুতর জখম হয়ে তাঁর ছেলে সল্টলেকের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত কয়েক দিন ধরেই দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। তার উপরে বুধবার রাতে ওই বাড়িটির কাছাকাছি বাজ পড়েছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, ৫৫এফ বেলেঘাটা মেন রোডের ওই বাড়ির ছাদে বড় বড় গাছ গজিয়ে উঠেছে। বাড়িটিতে দু’টি ঘর। এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ছাদের একাংশ ভেঙে পড়ে। শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়েরা। তাঁর জানান, বাড়ির ভিতরের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন বছর কুড়ির ঋষভ সাহা। সামনের ঘরে ছিলেন তাঁর বাবা রাজেশ সাহা এবং ঠাকুরমা প্রতিমা সাহা (৭৫)। ঋষভ বেরিয়ে আসতে পারলেও রাজেশবাবু এবং প্রতিমাদেবী ছাদের ভাঙা অংশের নীচে চাপা পড়ে যান। পরে দমকল ও কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে এন আর এসে নিয়ে যায়। সেখানে প্রতিমাদেবীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রাজেশবাবুকে স্থানান্তরিত করা হয় সল্টলেকের হাসপাতালে। তাঁর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। খবর পেয়ে পুরকর্মীরা এসে বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভেঙে দেন। এ দিন ঘটনার সময়ে রাজেশবাবুর স্ত্রী কাকলি সাহা দমদমে তাঁর মা-বাবার কাছে ছিলেন। কাকলি বলেন, ‘‘সকালে এক প্রতিবেশীর ফোন থেকে ছেলে আমায় জানায়। সঙ্গে সঙ্গে চলে আসি।’’ বছর দুয়েক আগে বাড়িটি সংস্কারের জন্য কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং দফতরের তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তার পরেও কেন সংস্কার হয়নি? কাকলি বলেন, ‘‘এই বাড়িতে তিন-চার জন শরিকের অংশ আছে। সকলে একমত না হওয়ায় সারাই করা যায়নি।’’
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আসেন স্থানীয় কাউন্সিলর পবিত্র বিশ্বাস। তিনিও জানান, বাড়িটি সংস্কারের জন্য আগে একাধিক বার নোটিস পাঠানো হলেও শরিকি ঝামেলায় কাজ হয়নি। এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘পুরসভার হাতে এমন কোনও আইন নেই যাতে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে দ্বন্দ্ব বা শরিকি ঝামেলার ঊর্ধ্বে উঠে তারা বিপজ্জনক বাড়ির ব্যাপারে কড়া হতে পারে।’’
এ দিন ভবানীপুরের বিহারী ডাক্তার রোডে এক পরিত্যক্ত বাড়ি ভেঙে পড়ে। তবে কেউ হতাহত হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy