Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Patient Death

প্রসূতির মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ, কাঠগড়ায় হাসপাতাল

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, পুলিশের পাশাপাশি তাঁরাও অভিযোগটি খতিয়ে দেখছেন।

স্বামীর সঙ্গে রিমা বসু।

স্বামীর সঙ্গে রিমা বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২০ ০৫:২৫
Share: Save:

হাসপাতালের আল্ট্রাসোনোগ্রাফি যন্ত্র খারাপ, তাই বিনা চিকিৎসায় এক প্রসূতিকে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠল বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে। শনিবার কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে রবিবার সকালে ওই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে নেতাজিনগর থানায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার পরিবারের লোকজন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, পুলিশের পাশাপাশি তাঁরাও অভিযোগটি খতিয়ে দেখছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা পুষ্কর বসু নামে এক যুবক অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী রিমা সন্তানসম্ভবা ছিলেন। গত ১২ অগস্ট একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে তাঁর শারীরিক পরীক্ষায় জানা যায়, গর্ভস্থ শিশুটির ওজন কম রয়েছে। এর পরে তাঁরা বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কাছে বছর আঠাশের রিমাকে দেখানো শুরু করেন। গত সপ্তাহে পর পর দু’দিনের লকডাউনের প্রথম দিন, বৃহস্পতিবার রিমাকে দ্রুত বাঘা যতীন হাসপাতালে ভর্তি করানোর নির্দেশ দেন ওই চিকিৎসক। তার পর থেকেই হাসপাতালের তরফে কর্তব্যে গাফিলতির শুরু বলে পুষ্করদের অভিযোগ।

পুষ্করের অভিযোগ, ‘‘বৃহস্পতিবার ভর্তি করানোর পরে বলা হল, শুক্রবার রিমার আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করানো হবে। এর জন্য শুক্রবার সারা দিন ওকে না খাইয়ে রাখল হাসপাতাল। লকডাউনের মধ্যে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসক আর এলেন না দেখে হাসপাতাল থেকে বলা হল, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি যন্ত্রই নাকি খারাপ! যদিও শনিবারই চিকিৎসক এসে বললেন, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করানোর দরকার নেই। সরাসরি অস্ত্রোপচার করা হবে।’’ পুষ্করের দাবি, ওই অস্ত্রোপচারের পরে শনিবার বেলা দু’টো নাগাদ জানানো হয়, কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন রিমা। এর পর থেকেই রিমার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে বলে তাঁর পরিবারের দাবি। পুষ্করের কথায়, ‘‘আমাদের সন্তানের যে ওজন কম, তা আমরা জানতাম। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি যন্ত্র যদি খারাপ থাকে, তা হলে বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে আনানোর কথাও বলেছিলাম আমরা। কিন্তু হাসপাতাল শোনেনি। পরে রিমার অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখেও আমাদের অন্য হাসপাতালে যেতে দেওয়া হয়নি। কেন এ ভাবে ঝুঁকি নেওয়া হল!’’

রিমার পরিবারের অভিযোগ, এ দিন ভোর থেকে অবস্থার অবনতি হচ্ছে দেখেও দ্রুত কোনও চিকিৎসক রোগিণীকে দেখতে যাননি। শেষে বেলার দিকে তাঁদের জানানো হয়, রিমার মৃত্যু হয়েছে। রিমার মা জোৎস্না দাস বলেন, ‘‘দু’দিন ধরে বাঘা যতীন হাসপাতালে পড়ে থেকে দেখলাম, মেয়েটার কোনও চিকিৎসাই হল না। ওর অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখেও কোনও চিকিৎসক এলেন না। এঁরা না পারলে মেয়েটাকে ছেড়ে দিলেন না কেন! আমরা অন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চেষ্টা করতাম।’’

বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার দেবাশিস মণ্ডল জানিয়েছেন, দিন চারেক হল তিনি ওই হাসপাতালের দায়িত্ব নিয়েছেন। ফলে তাঁর পক্ষে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। তিনি শুধু বলেন,

‘‘আল্ট্রাসোনোগ্রাফি যন্ত্র খারাপ না ঠিক আছে, আমি জানি না। মাত্র কয়েক দিন হল এসেছি, সমস্তটা এখনও দেখে উঠতে পারিনি।’’ নেতাজিনগর থানার তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ওই সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং নার্সদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Patient Death Baghajatin Negligence in Treatment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy