প্রতীকী ছবি।
স্বেচ্ছাসেবক মিলবে কি?
ভারতে তৈরি আরও একটি করোনার প্রতিষেধক ‘জাইকোভ-ডি’র ক্ষেত্রে এখন এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। কারণ, করোনা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই ‘কোভিশিল্ড’ ও ‘কোভ্যাক্সিন’ প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কত জন মানুষ নতুন আরও একটি প্রতিষেধকের গবেষণায় অংশ নিতে চাইবেন, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে সংশয়।
প্রথম দেশীয় প্রতিষেধক ‘কোভ্যাক্সিন’ এবং তার পরে রাশিয়ার তৈরি ‘স্পুটনিক ভি’র তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক গবেষণায় যুক্ত হয়েছিল রাজ্য। তার পরেই আমদাবাদের ‘জাইডাস ক্যাডিলা’র তৈরি ‘জাইকোভ ডি’–র পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তৃতীয় ধাপের অনুমতি দেয় ‘ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অব ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই)। সেই মতো গোটা দেশে ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপরে ওই প্রতিষেধক প্রয়োগ করে গবেষণায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। তার মধ্যে ৫০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা এখনও পর্যন্ত পূরণ হয়েছে। সব থেকে বেশি স্বেচ্ছাসেবক মিলেছে দক্ষিণ ভারতে।
এ রাজ্যে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, কস্তুরী মেডিক্যাল সেন্টার, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ক্যানসার হাসপাতাল, মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি, নারায়ণা মাল্টিস্পেশ্যালিটি ও হেলথ পয়েন্ট— এই ছ’টি হাসপাতালকে ‘জাইকোভ ডি’র তৃতীয় পর্যায়ের গবেষণার তালিকায় রাখা হয়েছে। রাজ্যের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের ‘ফেসিলিটেটর’ স্নেহেন্দু কোনার জানাচ্ছেন, প্রতিটি সাইটে এক হাজার জন করে মোট ছ’হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপরে ওই প্রতিষেধক প্রয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের ছাড়পত্র পাওয়া দু’টি প্রতিষেধক রাজ্যে দেওয়া শুরু হতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে ‘জাইকোভ ডি’র গবেষণা নিয়ে।
স্নেহেন্দু বললেন, ‘‘জাইকোভ-ডি হল ডিএনএ প্রতিষেধক। করোনা মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে এই দেশীয় প্রতিষেধক ব্যবহারের জন্য ডিসিজিআই-এর অনুমোদন পেতে গেলে অবশ্যই তৃতীয় ট্রায়াল শেষ হওয়া দরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবক মিলেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেকটাই কম।’’ আগামী সোমবার থেকে গবেষণা শুরুর পরিকল্পনা করলেও কত জন স্বেচ্ছাসেবক মিলবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন শহরে জাইকোভ-ডি প্রতিষেধকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের এক প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর, চিকিৎসক সঞ্জয় শাহ। তিনি বললেন, ‘‘আশা করছি, দেশের স্বার্থে অনেকেই এগিয়ে আসবেন। কিন্তু যে হেতু রাজ্যে দু’টি প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে, তাতে গবেষণায় স্বেচ্ছাসেবক জোগাড় করাটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জের।’’
‘কোভিশিল্ড’ ও ‘কোভ্যাক্সিন’ মাংসপেশিতে দেওয়া হলেও বিসিজি টিকার মতো ‘জাইকোভ-ডি’ ত্বকের উপরে দেওয়া হয়। তবে এই করোনা প্রতিষেধকটির তিনটি ডোজ় নিতে হয়। সূত্রের খবর, প্রতিষেধকের গবেষণায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের বিষয়ে কিছু নিয়ম রয়েছে। যে হাসপাতালকে ক্লিনিক্যাল সাইট হিসেবে বাছা হয়েছে, সেখানকার কোনও কর্মী বা চিকিৎসক স্বেচ্ছাসেবক হতে পারবেন না। আবার নিয়মে রয়েছে, স্বেচ্ছাসেবক পাওয়ার জন্য কোনও বিজ্ঞাপনও কোথাও দেওয়া যাবে না। পরিচিত গোষ্ঠীতে মৌখিক ভাবে আবেদন জানাতে হবে। কোমর্বিডিটি নেই এবং ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হবেন, এমন যুবক-যুবতীরাই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিতে পারবেন।
গবেষকেরা বলছেন, ‘‘অনেকেই এখন আর স্বেচ্ছাসেবক হতে রাজি হচ্ছেন না। তাঁরা দাবি করছেন, যখন প্রতিষেধক দেওয়া শুরুই হয়ে গিয়েছে, তখন গবেষণায় অংশ নেব কেন?’’ যদিও সাধারণ মানুষের প্রতিষেধক পেতে চলতি বছরের শেষ কিংবা ২০২২-এর শুরু হয়ে যেতে পারে বলেই দাবি চিকিৎসকদের একাংশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy