Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2022

পুজোর অনুদান খরচের হিসাব রাখবে কে, প্রশ্ন সচেতন নাগরিকদের

মঙ্গলবার পুজো অনুদান সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তাই পুজো কমিটিগুলিকে অনুদানের ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা রইল না।

আদালতের ছাড়পত্রের পরে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছ।

আদালতের ছাড়পত্রের পরে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছ। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৫৬
Share: Save:

আদালতের নির্দেশ মেনে বেঁধে দেওয়া খাতেই পুজোর অনুদানের টাকা খরচ হবে তো? অনুদানে আদালতের ছাড়পত্রের পরে আপাতত এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। বড় বাজেটের পুজো কমিটিগুলির একাংশ বাঁধা নিয়মে বস্ত্র বিতরণ, কোভিড সুরক্ষা-বিধির পরিকল্পনার কথা শোনালেও প্রশ্ন উঠেছে, কম বাজেটের পুজোগুলির পক্ষে কি নিয়ম মেনে অনুদানের পুরো টাকা বেঁধে দেওয়া খাতে খরচ করা সম্ভব?

মঙ্গলবার পুজো অনুদান সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ একাধিক শর্তসাপেক্ষে সরকারের বেঁধে দেওয়া খাতে অনুদানের টাকা খরচের নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশের পরে আপাতত পুজো কমিটিগুলিকে অনুদানের ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা রইল না। তবে প্রশাসনের তরফে তাদের বলা হয়েছে সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ-এ স্বেচ্ছাসেবক, মহিলাদের দ্বারা সামাজিক উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণ-সহ একাধিক খাতে সেই টাকা খরচ করতে।

আর এখানেই প্রশ্ন তুলছেন শহরের সচেতন নাগরিকদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, আদালতের নির্দেশ মেনে বেঁধে দেওয়া খাতে আদৌ খরচ করবে তো পুজো কমিটিগুলি? না কি, নজরদারির ফাঁক গলে জাঁকজমকেই হবেখরচ? তাঁদের আরও প্রশ্ন, অনুদানের টাকা না পেলে কি এই কাজ হত না? গল্ফ গ্রিনের বাসিন্দা, পেশায় স্কুলশিক্ষক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নির্দেশ মেনে টাকা খরচ হচ্ছে কি না, সেটা কে দেখবে? প্রশাসনের পক্ষে কি আদৌ প্রতিটি পুজো কমিটির খরচের হিসাব মেলানো সম্ভব? সেখানে যে কোনও ভুল বা গাফিলতি হবে না, তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়?’’ একই কথা উঠে এসেছে মানিকতলার ব্যবসায়ী প্রণব সাহার গলাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘অনুদানের টাকা জনহিতকর কাজে লাগানো হচ্ছে না কি উৎসবে, সেটা কি বোঝা সম্ভব?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শহরে যেখানে এত ডেঙ্গি হচ্ছে, এত লোক মারা যাচ্ছেন, কই কোনও ক্লাবকেই তো এগিয়ে এসে তা নিয়ে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে না!’’

যদিও পুজো কমিটিগুলি জানাচ্ছে অন্য কথা। প্রশাসনের নির্দেশিকা মেনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুদানের টাকা খরচ করা হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছে তারা। তবে প্রশাসনের পক্ষে যতটা সফল ভাবে জনহিতকর কাজ করা সম্ভব, ততটা একটি পুজো কমিটির পক্ষে সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান পুজোকর্তাদেরই একাংশ। দক্ষিণের দেশপ্রিয় পার্ক পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা সুদীপ্ত কুমার বলেন, ‘‘আপাতত কোভিডকে মাথায় রেখে অনুদানের টাকায় মাস্ক এবং জীবাণুনাশক কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি, দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের সাহায্য করার ভাবনা-চিন্তাও হচ্ছে।’’ তবে অনুদান না পেলেও এই কাজগুলি হত বলেও জানিয়ে দিলেন তিনি। কলেজ স্কোয়ার পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য অচিন্ত্য লাহা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে আমরা রক্তদান শিবির করেছি। এ ছাড়া, পুজোর সময়ে বস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি শীতের আগে অন্য জেলায় গিয়ে শীতবস্ত্র দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ কিন্তু ছোট বাজেটের পুজোগুলির পক্ষে কি আদৌ সম্ভব সরকারি নির্দেশ মেনে জনহিতকর কাজ করা? উত্তরের এমনই একটি পুজোর এক কর্তার কথায়, ‘‘ছোট পুজোয় আবার সব নিয়ম মানা যায় নাকি! আগে তো টাকা হাতে পাই, তার পরে খরচের হিসাব!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2022 Donations
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy