Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Doctor Rape and Murder

‘হঠাৎ দেখি ঘরটা ভাঙছে, আমি অনুমতি দিইনি’! দাবি বিভাগীয় প্রধানের, আরজি করের অধ্যক্ষ কী বলছেন?

আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেমিনার হলের কাছে একটি ঘর ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বিভাগীয় প্রধানের দাবি, তিনি ভাঙার অনুমতি দেননি।

(বাঁ দিকে) আরজি কর হাসপাতালের পালমোনারি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অরুনাভ দত্ত চৌধুরী। সেমিনার হলের কাছের ঘর ভাঙা হচ্ছে (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) আরজি কর হাসপাতালের পালমোনারি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অরুনাভ দত্ত চৌধুরী। সেমিনার হলের কাছের ঘর ভাঙা হচ্ছে (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৪ ১৭:৫৭
Share: Save:

আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলের কাছে একটি ঘর সংস্কারকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার থেকে উত্তাল হাসপাতাল চত্বর। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট এই ঘটনার তদন্তভার দিয়েছে সিবিআইকে। সে দিনই দেখা যায়, সেমিনার হল থেকে কয়েক হাত দূরের একটি ঘর রাতারাতি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। দাবি, সেই ঘর সংস্কার করা হবে। আরও বড় ঘর তৈরি করা হবে। অভিযোগ, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হচ্ছিল ঘর ভেঙে। বুধবার এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের ফুসফুস ও বক্ষরোগ বিভাগের প্রধান অরুণাভ দত্ত চৌধুরী জানান, তিনি ঘর ভাঙার কোনও অনুমতি দেননি। আচমকা ঘর ভাঙার শব্দ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন।

বুধবার হাসপাতালের নতুন অধ্যক্ষ সুহৃতা পালের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অরুণাভ। তখনই তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। বিভাগীয় প্রধান বলেন, ‘‘সেমিনার হলের কাছের একটি ঘর সংস্কারের কথা হয়েছিল। কিন্তু কবে থেকে কাজ হবে, কী ভাবে কাজ হবে, সেই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ আমার কাছে আসেনি। শনিবার ইঞ্জিনিয়ারেরা এসেছিলেন আমার কাছে। তাঁরা জানান, অধ্যক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী হাসপাতালের সর্বত্র নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার, করতে হবে। যে কর্মীরা হাসপাতালে সর্ব ক্ষণ থাকেন, তাঁদের ঘরে কী সংস্কার দরকার, তা নিয়ে আলোচনা করতে আমি ছাত্রদের ডেকেছিলাম। তাঁদের সামনেই সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সোমবার আবার ইঞ্জিনিয়ারেরা এসেছিলেন। ছাত্রদের সামনে সংস্কারের একটি ‘প্ল্যান’ তৈরি হয়েছিল। সেখানে সকলেই ছিলেন। কিন্তু এই ধরনের কাজ শুরু করার অনুমতি আমি দিই না। এই অনুমতি দিয়ে থাকেন অধ্যক্ষ এবং এমএসভিপি। আমার কাছে তাঁদের অনুমতির কোনও কাগজ আসেনি। কবে কাজ শুরু হবে, আমি তা-ও জানতাম না। অধ্যক্ষের নির্দেশেই সংস্কারের কাজ হচ্ছিল।’’

উল্লেখ্য, আরজি করের অধ্যক্ষের পদ থেকে সোমবার ইস্তফা দেন সন্দীপ ঘোষ। তাঁর আগে পর্যন্ত তিনিই অধ্যক্ষ ছিলেন। পরে তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ করে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানেও প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলেন সন্দীপ। অভিযোগ, তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে লম্বা ছুটিতে গিয়েছেন সন্দীপ। আরজি করের নতুন অধ্যক্ষ হয়েছেন সুহৃতা। ঘর ভাঙা প্রসঙ্গে অরুণাভ আরও বলেন, ‘‘হঠাৎ ঘর ভাঙার শব্দ শুনে আমি ছুটে গেলাম। সেখানে মহিলা কমিশনের লোকজন ছিলেন। যে ঘরটি ভাঙা হচ্ছিল, সেখানে জুনিয়র চিকিৎসকেরাই থাকতেন। ওঁদের ঘর আরও কিছুটা বড় করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু কার নির্দেশে ঘর ভাঙার কাজ শুরু হয়, আমি জানি না। আমার কাছে কেউ অনুমতি চাননি। আমি এ বিষয়ে অনুমতি দিতেও পারি না।’’

আরজি করের নতুন অধ্যক্ষ সুহৃতা ঘর ভাঙা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই জায়গায় সংস্কারের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পুলিশকেও তা জানানো হয়েছে। আমরা চাই, সত্য প্রকাশ্যে আসুক। কারও আন্দোলনে আমরা বাধা দিচ্ছি না। সিবিআইয়ের তদন্তেও সহযোগিতা করব।’’ অধ্যক্ষ আরও জানান, সংস্কারের কাজ করা যাবে কি না, তা ইমেল মারফত কলকাতা পুলিশের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) একটি চিঠি পাঠান আরজি করের সুপারকে। সেখানে সিবিআইয়ের বিশেষ অপরাধ দমন শাখার একটি চিঠির কথা বলা হয়। ঘটনাস্থলে আপাতত সমস্ত রকমের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy