Advertisement
E-Paper

নিজেদের নির্দেশিকার বাস্তবায়নেই ‘ব্যর্থ’ পর্ষদ, দূষণ রুখবে কে?

২০০৪ সালের অগস্টে খোদ পর্ষদই নির্দেশিকা জারি করেবলেছিল, খোলা জায়গায় মাইক্রোফোন-সহ যে কোনও শব্দযন্ত্র বাজালে বাধ্যতামূলক ভাবে সাউন্ড লিমিটর লাগাতে হবে।

কলকাতাস দুষণ।

কলকাতাস দুষণ। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০৮
Share
Save

নিজেদেরই জারি করা, ১৮ বছরের পুরনো নির্দেশিকার বাস্তবায়ন করে উঠতে পারেনি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তারা কী ভাবে সার্বিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ করবে?— উৎসব মরসুমের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই প্রশ্ন ক্রমশ জোরালো হচ্ছে কলকাতা-সহ রাজ্যের পরিবেশবিদ মহলের একাংশে। কারণ, উৎসবের মরসুমে তারস্বরে বাজতে থাকা মাইক, ডিজে-সহ শব্দযন্ত্রের দাপট, যেখানে শব্দযন্ত্র থেকে নির্গত শব্দের প্রাবল্য নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র ‘সাউন্ড লিমিটর’-এর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

অথচ ২০০৪ সালের অগস্টে খোদ পর্ষদই নির্দেশিকা জারি করেবলেছিল, খোলা জায়গায় মাইক্রোফোন-সহ যে কোনও শব্দযন্ত্র বাজালে বাধ্যতামূলক ভাবে সাউন্ড লিমিটর লাগাতে হবে। না-হলে নিয়মলঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। অথচ পরিবেশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, তার পরে প্রতি বছরই পর্ষদ পুজো উদ্যোক্তা, আবাসন কর্তৃপক্ষ-সহ সব স্তরে সাউন্ড লিমিটর-সহ মাইক বাজানোর আবেদন করে। এ বার পুজোর আগেও শব্দযন্ত্রে সাউন্ড লিমিটর লাগানো বাধ্যতামূল‌ক বলে জানিয়েছিল পর্ষদ। কিন্তু বাস্তবে এ বছরও তারস্বরে বাজতে থাকা মাইক, ডিজে-র তাণ্ডব সহ্য করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।

যদিও গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে পর্ষদ জানিয়েছে, দুর্গাপুজোয় ডিজে-র দাপট ৯৮ শতাংশ বন্ধ করা গিয়েছে। মাত্র ২ শতাংশ বেজেছে। কিন্তু ছটপুজোয় ডিজে-র দাপট শোনা গিয়েছে। এ বিষয়ে সে দিন পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘ছটপুজোয় ডিজে-র শব্দতাণ্ডব কেন হল‌, তা আমরা খতিয়ে দেখব। আগামী দিনে নিশ্চয়ই এর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করব।’’

যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, দায়িত্ব পাওয়ার পরে প্রথমপুজোয় পরিবেশমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু মন্ত্রী বাদে পদে থাকা অন্য শীর্ষ কর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। এক পরিবেশবিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, পর্ষদের অন্য কর্তারা দীর্ঘদিন ধরে একই পদে রয়েছেন। প্রতি পুজোয় তাঁরা একই বক্তব্য রাখেন। তাঁর কথায়, ‘‘অর্থাৎ পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। অথচ তার পরেও কেন এখনও ১৮ বছর আগে জারি করা নিজেদেরই নির্দেশিকারবাস্তবায়ন করা গেল না! এর উত্তরকে দেবেন?’’

শব্দদূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলাকারী সুভাষ দত্ত জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বর্তমান পরিবেশমন্ত্রীর নেতৃত্বে কিছুটা তৎপরতা এসেছে। কিন্তু পর্ষদের অন্য কর্তারা কী করছেন? যাঁরা শব্দযন্ত্র ভাড়া দেন, তাঁদের তালিকা তৈরিকরা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল পর্ষদ। সেই তালিকা তৈরি করতে আর কত বছর লাগবে? আর তালিকা তৈরি হয়ে গিয়ে থাকলে কারা সাউন্ড লিমিটর ছাড়াই মাইক্রোফোন-সহ শব্দযন্ত্র ভাড়া দিচ্ছেন, তা নিশ্চয়ই জানে পর্ষদ। তা হলে কেন মাইক-ডিজের তাণ্ডব এ বারেও বন্ধ করা যায়নি? তাঁর কথায়, ‘‘যদি এখনও সেই তালিকা তৈরি শেষ না হয়, তা হলে বলব, কেন হয়নি? বিশেষত যেখানে সাউন্ড লিমিটরনিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের একাধিক নির্দেশ রয়েছে। এর উত্তর পর্ষদকেই দিতে হবে।’’

পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চের’ সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলছেন, ‘‘প্রতি বছর শুধু একটি নির্দেশিকা পুলিশ, জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েই নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলে পর্ষদ। এমন চলতে থাকলে সম্ভবত আগামী ১৮ বছরেও এ রাজ্যে সাউন্ড লিমিটরের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যাবে না।’’

West Bengal Pollution Control Board Pollution

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।