প্রতীকী ছবি।
বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি কোম্পানির স্কচ এবং হুইস্কি রয়েছে তালিকায়। যার দাম ১৫০০ টাকা, ৩০০০ টাকা বা ৬৫০০ টাকা। লকডাউনের শহরে সে সব বাড়িতে বসেই পাওয়ার বার্তা ছড়িয়েছিল দিকে দিকে। যদিও সেই জাল বার্তার ফাঁদে পা দিয়ে আপাতত শ্রীঘরে শহরের দুই বাসিন্দা।
বাড়িতে বসে পেতে চান? ফোন করুন অমুক নম্বরে। তালিকায় রয়েছে সুনসান শহরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ১১ জনের নাম। শুধু একটি ফোনেই পছন্দ মতো মদ পৌঁছে যাবে দরজায়। গত কয়েক দিনে দাবানলের মতো এমন বার্তা ছড়িয়ে পড়ে তৃষ্ণার্ত শহরবাসীর কাছে। তাঁরাও ফোন করে বলছেন, ‘ভাইরে। একটু পৌঁছে দিও না।’ কেউ বলছেন, ‘অনেক পুণ্য হবে তোমার।’
এমন তৃষ্ণার্ত শহরবাসীর উদ্দেশে আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহার পরামর্শ, “আর ফোন করবেন না। শনিবার এমন ফোন করেই শ্রীঘরে পৌঁছেছেন সল্টলেক এবং নিউ টাউনের দুই বাসিন্দা।” লকডাউনের সময়ে বাড়ি থেকে বেরোনো, কালোবাজারে বিক্রি হওয়া মদ কিনতে চাওয়া এবং সর্বোপরি মিথ্যে সংবাদ ছড়ানোর অভিযোগে সল্টলেকের সাইবার থানার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে।
অথচ মদের ‘হোম ডেলিভারি’ দিতে নয়, সল্টলেকের সৌরভ চক্রবর্তী এবং বরাহনগরের সৈকত নাগ অসুস্থদের সাহায্য আর বয়স্কদের ওষুধ ও খাবার পৌঁছে দিতেই পরিষেবা শুরু করেছিল। দু’জনেই বিদ্যাসাগর কলেজের প্রাক্তনী। লকডাউন ঘোষণার দিন ২২ মার্চ তাঁরা ঠিক করেন, বয়স্কদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন। সঙ্গে জুটে যান আরও কয়েক জন মানুষ। নিজেদের মোবাইল নম্বর দিয়ে হোয়্যাটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক মারফত বার্তা ছড়িয়ে দেন— তাঁরা প্রয়োজনে সাহায্য করবেন। কিন্তু এক বা একাধিক দুষ্টু লোক বার্তাটির মূল জায়গা পরিবর্তন করে সেখানে বসিয়ে দেয় মদের নাম ও দাম। বাজার থেকে কিছু বেশিই দাম বসানো হয়, যাতে মানুষের বিশ্বাস জন্মায়। ব্যস, সেই বার্তা ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। যার জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বয়স্কদের বাড়িতে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ওই কাজ।
শুক্রবার পর্যন্ত দিনে গড়ে তিন হাজারের বেশি ফোন পেয়েছেন সৌরভ ও সৈকত। ১১ জন মিলে পেয়েছেন ৩০ হাজারের বেশি ফোন! তাঁদের কথায়, “যাঁরা ফোন করছেন, তাঁরা তো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে ফোন করছেন না। কিন্তু আসল বিষয়টি শুনে হতাশ হয়ে ফোন রেখে দিচ্ছেন।”
সৌরভ শনিবার সল্টলেক পুলিশের সাইবার শাখায় গিয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশের পরামর্শ মেনে অচেনা নম্বর থেকে আসা যাবতীয় ফোন ব্লক করছেন।
সৌরভের কথায়, “কানাডা, আমেরিকা, ইংল্যান্ড থেকে ফোন পাচ্ছিলাম। বিদেশে থাকা সন্তানের বাবা-মা এবং নিঃসন্তান বা একাকী থাকা বয়স্কদের দরজায় ওষুধ ও জরুরি জিনিস পৌঁছে দিয়ে ভালবাসা আর আশীর্বাদ পাচ্ছিলাম। তাঁদের সাহায্য করতে পারব না ভেবে খারাপ লাগছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy