ঘেঁষাঘেঁষি: তালতলা বাজারে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ক্রেতারা। ছবি: রণজিৎ নন্দী
খুচরো বাজার খোলা আছে কি না তা দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজেই রাস্তায় নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাজারে আসা ক্রেতাদের মধ্যে এক মিটারের দূরত্ব বজায় রাখতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নির্দেশিকা মেনে নিজেই ইটের টুকরো দিয়ে গণ্ডি দিয়ে দিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই সেই আবেদন উড়িয়ে দেদার কেনাবেচার ছবি ধরা পড়ল শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের একাধিক বাজার এবং দোকানে।
শুক্রবার সকাল থেকে বেলা পর্যন্ত দেখা গেল, হু-র নির্দেশিকায় উল্লেখ থাকা সেই ন্যূনতম দূরত্ব বজায় না রেখেই মানুষ ঘিঞ্জি বাজারে জিনিস কিনতে ব্যস্ত। একাধিক মুদির দোকান এবং ওষুধের দোকানেও দেখা গেল ওই ছবি। দোকানের বাইরে এক মিটার দূরত্ব মেনে সাদা চক দিয়ে গণ্ডি আঁকা থাকলেও বহু জায়গায় দেখা গেল, ক্রেতারা অন্য দিনের মতোই গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। আঁকা গণ্ডির দিকে ভ্রূক্ষেপই নেই! রাস্তার ধারের বা ঘেরা চত্বরের বাজার— সর্বত্র দেখা গেল সেই ছবি।
লেক মার্কেট। বৃহস্পতিবার বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী এই বাজারের দোকানদারদের সতর্ক করে গিয়েছিলেন, যাতে ক্রেতারা গা ঘেঁষে না দাঁড়ান। সকলকে মাস্ক-গ্লাভস পরারও আবেদন করেছিলেন তিনি। এ দিন দেখা গেল, বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। দূরত্বও মানা হচ্ছে না। মাস্ক পরেননি কেন? পাশে খুলে রাখা মাস্ক দেখিয়ে ব্যবসায়ীর উত্তর, ‘‘পরেছিলাম। ঘাম হচ্ছে বলে খুলে রেখেছি!’’ তাঁর দাবি, ‘‘সকালের দিকে দূরত্ব রেখেই ক্রেতারা দাঁড়িয়েছিলেন।’’
সকালে বেশ ভিড় ছিল গড়িয়াহাট বাজারে। এখানেও বিক্রেতাদের দাবি, সকালের দিকে দূরত্ব বজায় রেখে ক্রেতারা কেনাকাটা করছিলেন। বেলা বাড়তেই উল্টে যায় ছবি। ক্রেতা কম থাকা সত্ত্বেও গা ঘেঁষে চলছিল বিকিকিনি। এ ভাবে জিনিস কিনতে গিয়ে বিপদ ডাকছেন না তো? মধ্যবয়সি ব্যক্তির উত্তর, ‘‘বাজার তো ঘিঞ্জি। পাশাপাশি দোকানের মধ্যে তফাত কোথায়? এখানে নিয়ম মানব কী ভাবে?’’ এ দিন দোকান কম খোলা ছিল টালিগঞ্জের করুণাময়ী বাজারে। কারণ, চাষিদের অনেকেই আনাজ-মাছ নিয়ে দক্ষিণ শহরতলি থেকে এই বাজারে আসেন। লকডাউনের কারণে তাঁরা আসতে না পারায় দোকান কম খুলেছে। তবে সেখানে ক্রেতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এখানেও ন্যূনতম দূরত্বের পরোয়া না করেই চলছিল কেনাবেচা।
তবে খানিকটা অন্য ছবি দেখা গেল এ দিন লেক মার্কেট এলাকার একটি শপিং মলে। দূরত্ব নির্দিষ্ট করতে সেখানকার দোকানগুলির সামনে চক দিয়ে আঁকা হয়েছিল। পুলিশি পাহারাও সেখানে ছিল দেখার মতো।
নির্দেশিকা উড়িয়েই কেনাকাটার ছবি দেখা গেল তালতলা বাজারের ভিড়ে ঠাসা দোকানগুলিতেও। সেখানে ক্রেতাদের কারও মাস্ক থাকলেও, বিক্রেতাদের মাস্ক-গ্লাভস দেখা যায়নি। এ দিন মানিকতলা বাজারে তুলনায় ক্রেতা ছিল হাতে গোনা। বেকবাগান-পার্ক সার্কাস বাজারে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য-সহ বিভিন্ন জিনিসের একাধিক দোকান খোলা ছিল। অথচ সেখানেও ক্রেতাদের মধ্যে দূরত্ব রেখে দাঁড়ানোর প্রবণতা নজরে আসেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy