Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
WB Municipal Election

প্রাচীন জনপদে জল-কাঁটা, ফের ভাসছে প্রতিশ্রুতি

ভরা বাগজোলায় আজও হাবুডুবু খায় বরাহনগর। সমস্যা পানীয় জলেরও। তবুও ভোটের টানে প্রতিশ্রুতির বন্যা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শান্তনু ঘোষ
শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:০৪
Share: Save:

শতাব্দীপ্রাচীন জনপদে সমস্যা ‘জল’! নিকাশির জল আর পানীয় জলের সঙ্কট। দুই সমস্যা থেকেই মুক্তির প্রতীক্ষায় বরাহনগরবাসী।

বরাহনগরে পুরভোটের প্রচারপর্বেও প্রতিশ্রুতিতে শাসকদল জোর দিচ্ছে নিকাশি ও পানীয় জলের উন্নয়নে। বিরোধীদের দাবি, ১০ বছর ক্ষমতায় থেকেও কিছু হয়নি, ফলে প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। শাসকদলের পাল্টা অভিযোগ, দীর্ঘ দিন পুর বোর্ড বামেদের দখলে থাকলেও নিকাশি ও পানীয় জলের মাস্টার প্ল্যান ছিল না।

প্রশাসনিক এই টানাপড়েনে আজও তাই ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয় এলাকা। বিটি রোডের পূর্ব প্রান্তে বাগজোলা খাল সংলগ্ন ১, ১৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে সমস্যা বেশি। কলকাতা পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের জমা জল ২০ এবং ২১ নম্বরের কালীচরণ ঘোষ রোড হয়ে বাগজোলা খালে মিশছে। ওই খালে পড়ছে কামারহাটি পুরসভার জমা জলও। এ দিকে বাগজোলা ভরে থাকায় প্রতিবেশীর জলেও ভাসে বরাহনগর। গঙ্গার দিকের ২৪, ১৩ ও ১০-এর একাংশ-সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডেও বৃষ্টিতে জল জমে। বিটি রোড জলমগ্ন হয়ে শ্লথ হয় গাড়ির গতি।

সিঁথির মোড় থেকে ডানলপ এবং সেখান থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালার মাধ্যমে পশ্চিমের জল পড়ে গঙ্গায়। সেটিরও সংস্কার হয়নি বলেই অভিযোগ। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বাগজোলার জল বার করতে একটি ছোট খাল কেটে উদয়পুর খালে যুক্ত করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ দিলীপনারায়ণ বসু বলেন, “ওই কাজে কিছুটা দেরি হয়েছে। সচেতনতার অভাবেও বাগজোলার জলধারণ ক্ষমতা কমেছে। নিকাশির উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ করা হবে।” পশ্চিম প্রান্তের বিষয়ে তিনি জানান, বড় নিকাশি নালাটি রাস্তা থেকে ৩০ ফুট নীচে। সংস্কার করতে গিয়ে তোশক, বালিশ, বস্তা মিলেছিল।

অভিযোগ উঠেছিল, নিকাশি নালার জল নিবেদিতা সেতুর নীচে গঙ্গায় পড়ে দূষণ ছড়াচ্ছে। প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিকের কথায়, “ওই দূষণ কমাতে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির জন্য কেএমডিএ পদক্ষেপ করেছে। বরাহনগরের নিকাশি ব্যবস্থা বাগজোলা খালের উপরে নির্ভরশীল। উদয়পুর খাল সংস্কারের জন্য সেচ দফতরকে বলা হয়েছে।”

সমস্যা রয়েছে পানীয় জল সরবরাহেও। ৪, ৬, ৮, ১৬, ১৭ (আংশিক), ১৮ ও ১৯ নম্বর-সহ আরও কিছু ওয়ার্ডে সমস্যা বেশি। কিছু এলাকার জমি উঁচু হওয়ায় সরবরাহ করা জলের গতি কম। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে এত দিন জলের পাইপলাইনই ছিল না। বরাহনগর-কামারহাটি যৌথ জল প্রকল্পের সভাপতি তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর অঞ্জন পাল বলেন, “দীর্ঘ দিন বামেদের বোর্ড থাকলেও মাটির নীচে জলের পাইপলাইন বা ভাল্‌ভ কোথায় রয়েছে, সেই নকশাও ছিল না। পানীয় জলের সমস্যা পরিকল্পিত উপায়ে পুরো মেটানোর চেষ্টা চলছে।”

কুলটির বিদ্যাধরী নদীর সংস্কার না হওয়ায় বাগজোলার ধারণক্ষমতা কমে এলাকা ভাসছে বলে অভিযোগ সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের। তাঁর কথায়, “বরাহনগরের নিকাশির মাস্টার প্ল্যানকে আরও উন্নত করা যেত।” জল প্রকল্প তাঁদের জমানায় তৈরি হয়েছিল জানিয়ে তন্ময়ের দাবি, “জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে আগের সঙ্কট আরও বেড়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

WB Municipal Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy