কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে একটি পূর্ণবয়স্ক সাপকে মেরে ফেলার ঘটনায় পুর কর্তৃপক্ষের ‘উদাসীনতা’ যে ভাবে সামনে এসেছে, তাতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বন দফতর। গত ৪ মার্চ পুর ভবনের নীচে ট্রেজ়ারি বিভাগে ছ’ফুট লম্বা একটি দাঁড়াশ সাপকে বেরোতে দেখা গিয়েছিল। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সাপটিকে উদ্ধারের জন্য বন দফতরকে জানানো উচিত ছিল পুর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু অভিযোগ, সে সব না করেই সাপটিকে মেরে ফেলা হয়। ঘটনার পরের দিনই বন দফতরের চার আধিকারিক পুর ভবনে এসে কমিশনারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন।
বন দফতরের এক আধিকারিক রবিবার বলেন, ‘‘পুরসভার কমিশনার সে দিন আমাদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই তাঁরা ঘটনা সম্পর্কে রিপোর্ট দেবেন। তার কয়েক দিন পরেও রিপোর্ট না পাওয়ায় আমরা ১৩ তারিখ ফের কমিশনারকে জানাই। তা সত্ত্বেও রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরসভার থেকে কোনও উত্তর পাইনি। ফের আমরা কমিশনারকে লিখব। তার পরেও রিপোর্ট না পেলে আইনি পথে যেতে বাধ্য হব।’’ যদিও পুর কমিশনার ধবল জৈন এ দিন রাতে বলেন, ‘‘আমরা বন দফতরকে ইমেলে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট পাঠিয়েছি। শীঘ্রই ফের রিপোর্ট পাঠাব।’’
বন দফতরের ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘ঘটনার পরের দিন, অর্থাৎ ৫ তারিখ আমরা যখন পুরসভায় যাই, তখন সাপ মারার বিষয়টিকে অত্যন্ত লঘু করে দেখিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন আধিকারিকেরা। ছ’ফুট লম্বা দাঁড়াশ সাপ মেরে ফেলা পরিবেশের দিক থেকে অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ। দোষ প্রমাণিত হলে জেল পর্যন্ত হতে পারে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘শহরের বুকে দাঁড়াশের মতো একটি বিরল সাপকে মারার ঘটনা পুর কর্তৃপক্ষ যতই লঘু করে দেখান, আমরা এটিকে যথেষ্ট কঠোর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কলকাতা পুরসভার মতো নামী প্রতিষ্ঠান বন দফতরকে না জানিয়ে যে ভাবে সাপটিকে মেরে ফেলল, তা পুরসভার মানকেই ক্ষুণ্ণ করেছে। পুরসভাই এই ধরনের কাজ করলে সাধারণ নাগরিকদের কাছে কী বার্তা যাবে?’’
প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ দাঁড়াশ সাপটিকে যে মেরে ফেলা হয়েছিল, তা স্বীকার করেছিলেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী। অভিযোগ, সাপটিকে মেরে জুতোর বাক্সে ভরার পরে গোটা বাক্স বস্তায় মুড়িয়ে পুর ভবনের মেয়র’স গেটের পাশে থাকা লম্বা ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়।
ওই ঘটনার পরে দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও কলকাতা পুর ভবনের কর্মী ও আধিকারিকদের আতঙ্ক এখনও পুরোপুরি কাটেনি। যেখানে সাপটি বেরিয়েছিল, সেই ট্রেজ়ারি বিভাগের কর্মীরা সকালে অফিসে ঢোকার পরে চার দিক ভাল করে পরীক্ষা করে তবেই নিজেদের আসনে বসছেন। বিভাগের এক কর্মীর কথায়, ‘‘অত বড় সাপ সে দিনই প্রথম দেখেছিলাম। আমরা নিশ্চিত, আরও একাধিক সাপ এই তল্লাটে রয়েছে। সেই জন্য অফিসে ঢোকার পরে আমরা বিভিন্ন কোণ ভাল করে দেখে তবেই নিজের নিজের চেয়ারে বসছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy