Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

জল নেই, চিকিৎসা-সঙ্কট নীলরতনে

ওই সরকারি হাসপাতালে এ দিন জলের ঘাটতির জেরে একাধিক বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীরা হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ।

জলের গাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছেন রোগীদের পরিজনেরা। মঙ্গলবার, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

জলের গাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছেন রোগীদের পরিজনেরা। মঙ্গলবার, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

সৌরভ দত্ত
শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০০:০৭
Share: Save:

জল নেই। তাই তিন বছরের শিশুর অস্ত্রোপচার হবে কি না, তারও কোনও নিশ্চয়তা নেই! জলসঙ্কটের জেরে মঙ্গলবার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্মীদের কাছে এমনই কথা শুনতে হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির বাসিন্দা শুভঙ্কর মান্না।

ওই সরকারি হাসপাতালে এ দিন জলের ঘাটতির জেরে একাধিক বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীরা হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ। এক প্রৌঢ়ের দাবি, নিরুপায় হয়ে বাইরে থেকে শৌচালয়ের জল বোতলে ভরে এনে ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর জলের প্রয়োজন মেটাতে হয়েছে। রায়দিঘির বাসিন্দা রাজদীপ মান্না পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। তার বাবা শুভঙ্কর বলেন, ‘‘সকালে বিভাগের কর্মীরা ডেকে বললেন, জল যদি থাকে, তা হলে অস্ত্রোপচার হবে। এ কেমন কথা! সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, জলের সমস্যা মেটান। অসংখ্য মানুষের হয়রানি হচ্ছে।’’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য এ দিনই অস্ত্রোপচার হয়েছে রাজদীপের।

বস্তুত, সোমবার সন্ধ্যা থেকেই জলের সরবরাহ অনিয়মিত ছিল বলে অভিযোগ রোগীর পরিজনেদের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সঙ্কট মেটাতে হাসপাতালে পানীয় জলের গাড়ি পাঠায় কলকাতা পুরসভা। সেই গাড়ি থেকে জল নেওয়ার সময়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা রবি বেরা বলেন, ‘‘সেন্টিনারি ভবনের ছ’তলায় আমার ভাইঝি ভর্তি রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে খুব অল্প পরিমাণ জল আসছে। কখনও আবার একেবারেই আসছে না। শৌচাগার এত নোংরা হয়ে আছে যে, ঢুকলে বমি পাবে।’’ করিমপুরের বাসিন্দা বাণী স্বর্ণকার বলেন, ‘‘একটু হাত ধোয়ার জল পর্যন্ত ছিল না। বাইরে থেকে যে জল কিনব, সেখানেও একটির বেশি দু’টি বোতল দিচ্ছে না!’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

নেফ্রোলজি বিভাগে জলের অভাবে ডায়ালিসিস হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন রোগীরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, দিনে গড়ে ৪০ জনের ডায়ালিসিস হয় সেখানে। এ দিন জলের অভাবে অন্তত আট জনের ডায়ালিসিস করা যায়নি। বিকেল পর্যন্ত জলের জন্য হাপিত্যেশ করে থেকেছেন বিভাগীয় কর্মীরা। শিশু বিভাগেও ছোটখাটো অস্ত্রোপচার স্থগিত রাখতে হয় বলে খবর।

সুপারের কার্যালয়ের উল্টো দিকের জলাধারে পর্যাপ্ত জল না থাকার কারণেই এ দিন জলসঙ্কট তৈরি হয়। পুরসভার সরবরাহ করা জল ওই জলাধারে জমা হয়। সেই জল পাম্পের সাহায্যে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে পৌঁছয়। এ দিন বিকেল পাঁচটার পরে জল সরবরাহ শুরু হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন রোগীর পরিজনেরা।

অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরসভার ফেরুল দিয়ে জল কম আসায় সমস্যা হয়েছে। কলকাতা পুরসভা ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা ফেরুল পরীক্ষা করেছেন। দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। জলের অভাবে অস্ত্রোপচারে সমস্যা হয়েছে বলে কোনও বিভাগ থেকে জানানো হয়নি। ডায়ালিসিস নিয়েও সরকারি ভাবে কেউ কিছু জানায়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

NRS hospital Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy