Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
JU Student Death

পড়ে যাওয়া ছাত্রকে ফেলে রেখেই কি বৈঠক বসেছিল হস্টেলে? সন্দেহ পুলিশের, সৌরভের চিৎকার: ষড়যন্ত্র

ছাত্র যখন পড়ে গিয়েছিল, তখন কি তাকে হাসপাতালে না পাঠিয়েই শুরু হয়েছিল বৈঠক? কেন প্রয়োজন হয়েছিল সেই বৈঠকের? সঠিক সময়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করালে কি বাঁচানো যেত?

image of JU incident

প্রিজ়ন ভ্যান থেকে অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীর দাবি, তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৩ ২৩:৫৬
Share: Save:

তিন তলা থেকে এক তলায় পড়ে কাতরাচ্ছিল প্রথম বর্ষের ছাত্র। তখনই কি হস্টেলে চলছিল ‘জরুরি বৈঠক’? আহত ছাত্রকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করার আগেই কি শুরু হয়ে গিয়েছিল সেই বৈঠক? কী এমন প্রয়োজন ছিল তার? এখন সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। আরও অভিযোগ, ওই ছাত্র হস্টেলের যেখানে পড়ে গিয়েছিল, সেই জায়গা ধুয়ে দেওয়া হয়েছিল। সত্যিই তেমন করা হয়েছিল কি না, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তবে তদন্তকারীদের একাংশ এ-ও জানিয়েছেন, সেই রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। তাই এই অভিযোগ খতিয়ে দেখা সহজ কাজ নয়। এর মধ্যেই অন্যতম অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরী প্রিজ়ন ভ্যান থেকে দাবি করেছেন, সেই রাতে র‌্যাগিং হয়নি। ওই ছাত্র নিজেই ঝাঁপ দিয়েছিল।

৯ অগস্ট। রাত প্রায় ১১টা ৪৫ মিনিট। ঠিক সেই সময়ই ফোনটা গিয়েছিল প্রাক্তনী জয়দীপ ঘোষের কাছে। তিনি বিক্রমগড়ের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ছাত্রের পড়ে যাওয়ার খবর দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তড়িঘড়ি ছুটে এসেছিলেন তিনি। তার পর তাঁর ‘নির্দেশ’-এই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হস্টেলের গেট। প্রশ্ন উঠছে, খবর পেয়ে বিক্রমগড় থেকে মেন হস্টেলে ছুটে আসা পর্যন্ত কি মেঝেতেই পড়েছিল আহত ছাত্র? তত ক্ষণ কি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি? পুলিশের একাংশ মনে করছে, জয়দীপ পৌঁছনো পর্যন্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি ওই ছাত্রকে। মনে করা হচ্ছে, যদি সঠিক সময়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হত, তা হলে হয়তো বাঁচানো যেত ছাত্রকে।

কিন্তু কেন সঠিক সময়ে ছাত্রকে নিয়ে যাওয়া হয়নি হাসপাতালে? পুলিশের একাংশের ধারণা, ছাত্র পড়ে যাওয়ার পরেই হস্টেলে ‘জরুরি বৈঠক’ শুরু হয়ে যায়। ওই বৈঠকের পাশাপাশি ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। তবে সেই সঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। ঠিক কোন সময় পড়ে গিয়েছিল ওই ছাত্র? ধৃতদের পরস্পরবিরোধী বয়ানের কারণে সেই সঠিক সময় এখনও স্পষ্ট হয়নি পুলিশের কাছে। কোন সময় সে পড়ে গিয়েছিল, তা জানা গেলে তদন্তের জট ছাড়াতে আরও সুবিধা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

অভিযোগ, ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেই বন্ধ হয়ে যায় হস্টেলের দরজা। হস্টেলের আবাসিকদের থেকে জানা গিয়েছে, জয়দীপ এবং কয়েক জন ‘দাদা’-র নির্দেশেই দরজা বন্ধ হয়েছিল। এমনকি পুলিশকেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শনিবার গ্রেফতার জয়দীপ। তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্রের কাছে গিয়ে বয়ান সংগ্রহে পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগও করেছেন সরকারি আইনজীবী। রবিবার জয়দীপকে ২৪ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আলিপুর আদালত। ওই রাতে জয়দীপের সঙ্গে আর কে ছিলেন, এখন তা খুঁজে দেখছে পুলিশ।

এই পরিস্থিতিতেই অভিযুক্ত সৌরভের দাবি, তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। প্রথম বর্ষের ছাত্র নিজেই ঝাঁপ দিয়েছিল। তাঁরা গরিব বলেই তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে। যদিও পুলিশ এ সবে কান দিতে নারাজ। প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং হস্টেলের আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে চাইছে, মৃত ছাত্রের সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, হস্টেলের জানলার ধারে দাঁড়িয়ে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করতে বাধ্য করা হয়েছিল ছাত্রকে। এ কথা জানিয়েছেন আবাসিকেরাই। এর মাঝেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ সায়েন্সের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সুবিনয় চক্রবর্তী। কর্তৃপক্ষ ছাত্রের মৃত্যুতে যে তদন্ত কমিটি গড়েছিলেন, তার মাথায় ছিলেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, তাঁর ইস্তফাতে ধাক্কা খেতে পারে তদন্ত। এ দিকে অস্থায়ী উপাচার্য পদে বসে বুদ্ধদেব সাউ জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানোয় তাঁর ঝোঁক নেই।

সৌরভের দাবি

খোদ কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল তাঁকে জেরা করেছেন শনিবার। গ্রেফতারির আগেও তাঁকে জেরা করেছিলেন কমিশনার। পুলিশের একাংশ মনে করছে, তাঁর থেকে মিলতে পারে ঘটনার রাতের গুরুত্বপূর্ণ ‘তথ্য’। সেই অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীই রবিবার প্রিজ়ন ভ্যান থেকে চিৎকার করে দাবি করেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের কোনও ঘটনা ঘটেনি। মৃত ছাত্র নিজেই হস্টেলের বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল। যাদবপুরকাণ্ডে এই প্রথম কোনও অভিযুক্ত প্রকাশ্যে এ ভাবে অভিযোগ খারিজ করলেন। রবিবার আলিপুর আদালত থেকে প্রিজ়ন ভ্যানে করে কয়েক জন ধৃতকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সে সময়ই ভ্যান থেকে মুখ বার করে সৌরভ দাবি করেন, তাঁরা গরিব বলে ফাঁসানো হচ্ছে। কোনও র‌্যাগিং হয়নি। পুলিশ তদন্ত করবে সেটা। বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছে ওই ছাত্র। এটুকুই তাঁদের চোখের সামনে ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ মিথ্যা। জিবি কী কারণে হয়েছে, আমি জানি না। আমরা কোনও অপরাধী নই। আমরা ন্যায্য বিচার চাই।’’

ধৃতের হেফাজত

শনিবার যাদবপুরকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন আরও এক প্রাক্তনী। নাম জয়দীপ ঘোষ। সেই জয়দীপকে রবিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। আদালত তাঁকে ২৪ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। জয়দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রথম বর্ষের ছাত্রটি যে রাতে তিন তলা থেকে পড়ে গিয়েছিল, সেই রাতে পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রের কাছে গিয়ে পুলিশকে বয়ান রেকর্ড করতেও তিনি বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল আদালতের বাইরে বেরিয়ে জানিয়েছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারায় (সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা) মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত দু’ভাবে বাধা দিয়েছেন। এক, ছাত্র পড়ে যাওয়ার পর হস্টেলের গেট বন্ধ রেখেছিলেন। দুই, আক্রান্তকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন পুলিশকে সামনে গিয়ে বয়ান নিতে দেননি। কথা বলতে দেননি। সরকারি আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, জয়দীপের সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিলেন সে সময়। কী উদ্দেশে জয়দীপ এ সব করেছেন, তা জানার জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

জয়দীপের সঙ্গী কারা

৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে গিয়েছিল প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার পরেই ফোন গিয়েছিল জয়দীপের কাছে। জয়দীপ পুলিশকে জেরায় জানিয়েছেন, ফোনটা করেছিল দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র। তখন রাত ১১টা ৪৫ মিনিট। খবর পেয়েই হস্টেলে চলে এসেছিলেন তিনি। অভিযোগ, তাঁর এবং আর কয়েক জন ‘দাদা’র নির্দেশেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হস্টেলের গেট। পুলিশের একাংশের নজরে এখন সেই ‘দাদা’-রাও। জয়দীপ ছাড়া সে দিন গেট বন্ধ করার নেপথ্যে আর কে কে ছিলেন, তা এখন খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ। যাদবপুরকাণ্ডে পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শনিবারই গ্রেফতার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী জয়দীপকে। ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগের ছাত্র জয়দীপের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। যদিও গত কয়েক বছর ধরে তিনি বিক্রমগড়ের একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। সে জন্যই ৯ অগস্ট রাতে ফোনে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হস্টেলে চলে আসতে পেরেছিলেন।

‘কুরুচিকর’ কথা!

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে মৃত ছাত্রের সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল, কেমন ব্যবহার করা হয়েছিল, এখন তা-ই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, ধৃতেদর পাশাপাশি হস্টেলের কয়েক জন আবাসিকের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ। তা থেকেই জানা গিয়েছে, হস্টেলের জানালার ধারে দাঁড়িয়ে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে চিৎকার করে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করতে হয়েছিল। অশ্লীল গালিগালাজ করতেও নাকি চাপ দেওয়া হয়। পুলিশের একাংশ মনে করছে, ওই ছাত্র ‘সমকামী’ কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল। সে কারণেই সম্ভবত ৯ অগস্ট রাতে হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে যাওয়ার আগে সে বার বার বলেছিল, ‘‘আমি সমকামী নই।’’ পুলিশের বয়ানেও তার উল্লেখ রয়েছে। পুলিশের একাংশের মতে, ওই ছাত্রের গার্লফ্রেন্ড রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। সূত্রের খবর, প্রথম বর্ষের ছাত্রেরা জানিয়েছেন, শুধু ওই ছাত্র নয়, নতুন ভর্তি হওয়া অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গেও এ রকম আচরণ করা হত হস্টেলে। অনেক পড়ুয়াই সেই অভিযোগ করেছেন। মৃত পড়ুয়ার সঙ্গে এ ধরনের ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, এখন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই ছাত্রের সঙ্গে সেই রাতে কী হয়েছে, সেই বিষয়ে পড়ুয়াদের থেকে মেলা ‘তথ্য’ এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ডিন অফ সায়েন্সের ইস্তফা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ সায়েন্সের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সুবিনয় চক্রবর্তী। প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে যে তদন্ত কমিটি গড়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়, তার মাথায় ছিলেন সুবিনয়। এ বার তাঁর ইস্তফায় কি ধাক্কা খেতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত? উঠছে প্রশ্ন। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্তের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র ইমেল করে জমা দিয়েছেন সুবিনয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন। সুবিনয়ের নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের কমিটি নিজেদের মতো করে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখছিলেন। ঘটনার পর কমিটির সদস্যদের নিয়ে একাধিক বার হস্টেলে গিয়েছিলেন সুবিনয়। সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এসেছেন। একাধিক বার বৈঠকও করেছেন। শনিবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য হিসাবে গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে নিয়োগ করেছেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তার পর রবিবার হঠাৎ ডিন অফ সায়েন্সের পদ থেকে কেন ইস্তফা দিলেন সুবিনয়? এই দুই ঘটনার কি কোনও যোগসূত্র রয়েছে? উঠছে প্রশ্ন।

নতুন উপাচার্যের পরিকল্পনা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের পদে বসেছেন বুদ্ধদেব সাউ। শনিবার তাঁকে নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। নিয়োগের পরেই গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন নিজের পরিকল্পনার কথা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। তার মাঝেই বু্দ্ধদেব জানিয়েছেন, নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই জরুরি। কিন্তু তার জন্য আলাদা করে সিসিটিভির দিকে তাঁর ঝোঁক নেই। তাঁর কথায়, ‘‘সিকিউরিটি (নিরাপত্তা)-র বিষয়টি ভাল করে দেখতে হবে। সিসিটিভি তো প্রযুক্তি মাত্র। পরিবর্তে আরও অনেক ব্যবস্থা আছে। দেখতে হবে কোনটা করলে আমাদের সুস্থ মানের চিন্তাভাবনা ব্যাহত হবে না এবং সিকিউরিটিও বজায় থাকবে।’’ পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়েছেন, অকারণে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বদনাম করে তার ক্ষতি যেন না করা হয়। তিনি মনে করেন, এতে মানুষেরই ক্ষতি হবে। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, দোষীরা শাস্তি পাবেন। কোনটায় সকলের ভাল হবে, এই মুহূর্তে সকলের সেটাই দেখা উচিত।

তোলাবাজির অভিযোগ

ছাত্রের মৃত্যুর পরেই আতশকাচের নীচে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল। অভিযোগ, সেখানে নাকি তোলাবাজিও চলত। সত্যিই কি তাই? আবাসিকদের একাংশ সেই অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন। যাদবপুরের হস্টেলের সিনিয়র আবাসিকেরা জানিয়েছেন, হস্টেলে অতিথি হিসাবে যাঁরা থাকতেন, অর্থাৎ, যাঁরা খাতায়কলমে হস্টেলের আবাসিক নন, তাঁদের কাছ থেকে ১,০০০ টাকা করে নেওয়া হত। একে ‘তোলাবাজি’ কোনও ভাবেই বলতে চাইছেন না তাঁরা। বরং, সিনিয়রদের একাংশের দাবি, হস্টেলে থাকার খরচ না লাগলেও খাওয়াদাওয়ার খরচ দিতে হত সকলকেই। সেই খাবারের খরচ বাবদ হাজার টাকা করে নেওয়া হত। ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়ে গিয়েছেন। তবু থাকছিলেন ওই হস্টেলেই। তাঁদের দিকেই মূলত অভিযোগের আঙুল। ধৃতেরা হলেন, সৌরভ চৌধুরী (প্রাক্তনী, গণিত বিভাগ), মনোতোষ ঘোষ (সমাজবিদ্যা, দ্বিতীয় বর্ষ), দীপশেখর দত্ত (অর্থনীতি, দ্বিতীয় বর্ষ), মহম্মদ আরিফ (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), আসিফ আফজ়ল আনসারি (চতুর্থ বর্ষ, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), অঙ্কন সরকার (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), অসিত সর্দার (প্রাক্তনী), সুমন নস্কর (প্রাক্তনী), সপ্তক কামিল্যা (প্রাক্তনী), শেখ নাসিম আখতার (রয়াসন, প্রাক্তনী), হিমাংশু কর্মকার (গণিত, প্রাক্তনী) এবং সত্যব্রত রায় (কম্পিউটার সায়েন্স)। শনিবার রাতে ধৃত জয়দীপ ঘোষও প্রাক্তনী। তবে তিনি বিক্রমগড়ের একটি ভাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

অন্য বিষয়গুলি:

JU Student Death Ragging police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy