Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Forensic Test

উঁচু ছাদের কড়িবরগা থেকে শাড়ির ফাঁস কী ভাবে ঝোলালেন প্রজ্ঞা? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর অমিল

তদন্তকারীরা জানান, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে এ দিন দুপুরে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পদস্থ আধিকারিকেরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন প্রজ্ঞাদীপার সঙ্গী কৌশিককে।

An image of the person

প্রজ্ঞাদীপা হালদার। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ ০৭:২২
Share: Save:

ব্যারাকপুর সেনা ছাউনির ম্যান্ডেলা হাউসে লেফটেন্যান্ট কর্নেল, চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারীর ২০ নম্বর ফ্ল্যাট থেকেই সোমবার রাতে উদ্ধার হয়েছিল চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের ঝুলন্ত দেহ। ওই রহস্য-মৃত্যুর তদন্তে নেমে শনিবার সেই ফ্ল্যাটের ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হল। যে ঘরে প্রজ্ঞাদীপার দেহ মিলেছিল, এ দিন দুপুরে সেই ঘরের মেঝে, দেওয়াল, তাক, বিভিন্ন সরঞ্জাম, মদের বোতল-গ্লাস, বিছানা, বালিশ খুঁটিয়ে পরীক্ষার পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহ করে তিন সদস্যের ফরেন্সিক দল। মৃতার ভিসেরা পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই তা বেলগাছিয়ার ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে এ দিন দুপুরে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পদস্থ আধিকারিকেরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন প্রজ্ঞাদীপার সঙ্গী কৌশিককে। ঘটনার সময়ে তিনি ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন না বলেই পুলিশের কাছে দাবি করেছেন কৌশিক। কোনও মারধরের ঘটনাও ঘটেনি বলে দাবি তাঁর, এমনটাই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। যদিও ময়না তদন্তের রিপোর্টে প্রজ্ঞাদীপার কপাল থেকে ঊরু পর্যন্ত শরীরের নানা অংশে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে।

সরকারি আইনজীবী সুদীপ সরকারের বক্তব্য, ‘‘ফরেন্সিক রিপোর্টে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর মিলবে। উঁচু ছাদের কড়িবরগা থেকে প্রজ্ঞাদীপার একার পক্ষে শাড়ির ফাঁস ঝোলানোটা যেমন অস্বাভাবিক, তেমনই বিছানার উপরে তাঁর পা মুড়ে থাকা দেহ যে ভাবে মিলেছিল, তাতেও অনেক প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।’’

বারাসত-১ ব্লকের ছোট জাগুলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন প্রজ্ঞাদীপা। শনিবার সেখানে খোঁজ করে জানা যায়, গত সোমবার তিনি কর্মস্থলে যাননি। মাঝেমধ্যেই ছুটি নিতেন। প্রজ্ঞাদীপার এক বন্ধু অদিতি বসু রায় জানান, ঘটনার কিছু দিন আগেও কৌশিককে সঙ্গে নিয়ে প্রজ্ঞাদীপা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। একসঙ্গে সিনেমা দেখেছেন। গত সোমবার দুপুরে তিনি ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ করলেও উত্তর দেননি প্রজ্ঞাদীপা। মেসেজও দেখেননি। তখনই কিছু ঘটে গিয়েছিল কি না, প্রশ্ন অদিতির। কৌশিক সম্বন্ধে অদিতির অভিমত, ‘‘গুছিয়ে কথা বলতে পারেন এবং নিজের মত জোর করে চাপানোর ক্ষমতা রাখেন। বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত কৌশিক নিজেকে কেউকেটা ভাবা এক জন মানুষ। প্রজ্ঞা ওঁকে কার্যত চোখে হারাতেন। কৌশিক সম্বন্ধে কেউ কিছু বললে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে ফেলতেন। এতটাই পজ়েসিভ ছিলেন।’’

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কৌশিকের দ্বিতীয় স্ত্রী ও দুই মেয়ে গড়িয়ায় থাকেন। প্রথম স্ত্রী চিকিৎসক। তাঁর খোঁজও চলছে। তদন্তের স্বার্থে অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান। সেনাবাহিনীর তরফে এ দিন বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, এই ঘটনায় পুলিশকে সব রকম সহযোগিতা করবে ইস্টার্ন কমান্ড।

অন্য বিষয়গুলি:

Forensic Test dead body arrest doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE