ভেলোরের হাসপাতালের বিলের সঙ্গে কলকাতার হাসপাতালের বিলের তুলনা অনভিপ্রেত বলে মনে করছেন চিকিৎসক কুণাল সরকার।
রাজ্যের বড় হাসপাতালগুলিকে তাদের খামতি বোঝাতে ভেলোর খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজের বিল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন। ভেলোরের হাসপাতালের বিলের সঙ্গে কলকাতার হাসপাতালের বিলের তুলনা অনভিপ্রেত বলে মনে করছেন চিকিৎসক কুণাল সরকার। তিনি জানান, যে রোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই রায়, কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে সেই রোগীর জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছে, ভাল চিকিৎসা হয়েছে। এই অবস্থায় দুই হাসপাতালের বিলের তুলনা করে কলকাতার হাসপাতালকে হেয় করা হচ্ছে। এ নিয়ে তিনি সরব হয়েছেন নেটমাধ্যমে। ভবিষ্যতে “কলকাতার স্নায়ুর অস্ত্রোপচারের সঙ্গে কি দক্ষিণের চুলকাটার বিলের তুলনা করবেন,” বলে নেটমাধ্যমে প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন কুণাল।
১৭ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনায় এক পথ দুর্ঘটনায় পায়ে গুরুতর আঘাত পান ব্যারাকপুরের বিকাশচন্দ্র মণ্ডল। স্থানীয় দুই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং পরীক্ষার পর বাইপাসের ধারে আনন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। ওই হাসপাতালে ১০ দিনে বিকাশের চিকিৎসার খরচ হয় চার লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। কিন্তু বিকাশের পায়ে গ্যাংগ্রিন হয়ে যাওয়ায় পা কেটে বাদ দেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন চিকিৎসকরা। তার পরই মাঝপথে কলকাতার ওই হাসপাতাল থেকে বন্ডে স্বাক্ষর করে ছুটি নিয়ে ভেলোর চলে যান তিনি।
ভেলোরের হাসপাতালে ১৯ দিন চিকিৎসা করে আপাতত সুস্থ বিকাশ। এখন ক্রাচ ব্যবহার করতে হলেও তাঁর পা কেটে বাদ দিতে হয়নি বলে জানায় কমিশন। খরচ হয়েছে এক লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। এই মামলার শুনানিতেই কমিশন ভেলোরের বিল দেখে রাজ্যের হাসপাতাল গুলিকে খামতি সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছে।
কুণালের মতে, ‘‘দুর্ঘটনার পর বিকাশকে সুস্থ করতে চার বার জটিল অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে কলকাতার হাসপাতালকে। সেই অস্ত্রোপচারের খরচ মাথায় রাখতে হবে আমাদের। পরে ভেলোরের হাসপাতালে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে।” কলকাতায় বিকাশের ট্রমা কেয়ারের মতো চিকিৎসা করা হয়েছে, যা খরচ সাপেক্ষ বলেই জানান তিনি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীর ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে একাধিক পরীক্ষা করতেও বেশি খরচ হয়। সে ক্ষেত্রে কলকাতার হাসপাতাল বিকাশের পায়ের সফল অস্ত্রোপচার করে তাকে সুস্থ করে তুলেছে এটাও ভুললে চলবে না, বলেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার খরচের সঙ্গে ভেলোরের বিলের তুলনা দুর্ভাগ্যজনক বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন পূর্ব ভারতের হাসপাতাল সংগঠনের প্রেসিডেন্ট রূপক বড়ুয়া। কুনালেরও একই মত। তাঁর মতে, “বাংলায় স্বাস্থ্যসাথীতে বহু রোগী চিকিৎসা হচ্ছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নতুন দিকে এগোচ্ছে।’’ কিন্তু কেউ কেউ আমাদের চোর-ডাকাত-ষড়যন্ত্রকারী প্রমাণ করতে চাইছে। ভেলোরের হাসপাতালের সঙ্গে সঙ্গত তুলনা হলে আপত্তি নেই। কিন্তু যে ভাবে তুলনা করা হচ্ছে তা অনিভিপ্রেত, হেয় করার শামিল।” বললেন কুণাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy