Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Political Clash

বেলেঘাটার পরে এ বার দমদম, দলীয় কার্যালয় ‘দখল’ ঘিরে সংঘর্ষ তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে

তৃণমূলের দাবি, সেভেন ট্যাঙ্কস লেনের ওই দলীয় কার্যালয়টি গত কয়েক বছর ধরে তাদের দখলে রয়েছে। পাল্টা সিপিএমের অভিযোগ, ওই দলীয় কার্যালয় তাদের ছিল।

Kolkata Police personnel at the spot

পাহারা: সংঘর্ষের পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ। সোমবার, দমদমের সেভেন ট্যাঙ্কসে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৩ ০৫:০০
Share: Save:

দলীয় কার্যালয় দখল করা ঘিরে এ বার সংঘর্ষ বাধল তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে। সোমবার সকালে দমদমের সেভেন ট্যাঙ্কস লেনে ওই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। সিপিএমের অভিযোগ, তাদের নেতা-কর্মীদের বেধড়ক মারধর করে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। দমদমে সিপিএমের একদা ডাকসাইটে নেতা তথা বর্তমানে দল থেকে বহিষ্কৃত দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিপিএম নেতা বাবিন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দশ-বারো জনকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। হাত ভাঙে দুলালের।

তৃণমূলের দাবি, সেভেন ট্যাঙ্কস লেনের ওই দলীয় কার্যালয়টি গত কয়েক বছর ধরে তাদের দখলে রয়েছে। পাল্টা সিপিএমের অভিযোগ, ওই দলীয় কার্যালয় তাদের ছিল। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পরেই সেটি তৃণমূল দখল করে নেয়। বাবিন জানান, এ দিন ওই কার্যালয় ‘পুনরুদ্ধার’-এর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কারও মাথা ফেটেছে, কারও হাত ভেঙেছে। বাসিন্দারা বহু দিন ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন, আমাদের দলীয় কার্যালয়টি দখল করার পরে চরম বিশৃঙ্খলা করছে তৃণমূলের লোকজন। এ দিন সেটি পুনরুদ্ধারের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল।’’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সিপিএম সমর্থকেরা ওই কার্যালয়ে দলীয় পতাকা ও বোর্ড ঝোলানোর চেষ্টা করতেই তৃণমূলের তরফে বাধা দেওয়া হয়। প্রথমে বচসা এবং পরে দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়। এক সময়ে তা সংঘর্ষের আকার নেয়। মিছিলে উপস্থিত, সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষের উপরেও কিল-ঘুষি পড়ে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পৌঁছয় সিঁথি থানার পুলিশ।

এ দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায়, থমথম করছে এলাকা। সেভেন ট্যাঙ্কস লেনের ওই কার্যালয়ের সামনে ভিড় করে আছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। কার্যালয়ের পাশে পড়ে আছে সিপিএমের ছেঁড়া হোর্ডিং, পতাকা। উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রথমে তাঁদের দলীয় কার্যালয় দখলের চেষ্টা হয়। অসিত দে নামে এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘আমাদের অন্য কর্মসূচি ছিল। এই কার্যালয়ে দু’-এক জন ছিলেন। সিপিএমের লোকজন এসে ঘরটি দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের লোকজনকে ধাক্কা মারা হয়। খবর পেয়ে আমরা এসে বিষয়টি সামলাই। সেই সময়ে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। পুরো ঘটনাটি সিপিএম সংঘটিত করেছে দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। উনি ওঁরই দলে বহিষ্কৃত। এখানকার মানুষও ওঁকে পরিত্যাগ করেছেন।’’

যদিও দুলাল বলেন, ‘‘এ বার বুঝে নেওয়ার সময় এসেছে। ওই দলীয় কার্যালয় আমরা পুনরুদ্ধার করতে গিয়েছিলাম। প্রয়োজনীয় শক্তি ছিল না। তাই হামলার মুখে পড়তে হয়েছে।’’

২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি কাকলি সেনের অবশ্য দাবি, ওই কার্যালয়টি বরাবরই তৃণমূলের। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের লোকজন রড, সুচ-সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে এসেছিল। ওরা এ ভাবে রাজনীতি না করে মানুষের পাশে থাকুক। তা হলে আমরাও বিরোধীর মতো বিরোধী পাব।’’

কাকলির স্বামী, সাংসদ শান্তনু সেনের দাবি, ‘‘একদা জোড়া খুনের আসামি দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় দলে ঢোকার জন্য হার্মাদদের এনে কার্যালয়টি দখলের চেষ্টা করে। আমাদের ছেলেদের মারধর করে। পরে মানুষের সম্মিলিত বাধায় ওরা পিছু হটে। দুলাল-রাজ আর মানুষ সহ্য করবে না।’’

সিপিম কর্মীদের দাবি, এ দিনের সংঘর্ষে বাবিন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চশমা ভেঙে গিয়েছে। আঘাত লেগেছে চোখের নীচে ও ঠোঁটে। বাবিন বলেন, ‘‘এখানে এর আগে আরও দু’টি দলীয় কার্যালয় আমরা পুনরুদ্ধার করেছি। আজ এক জায়গায় দলীয় মুখপত্রের স্ট্যান্ড চালু করা গিয়েছে। একটি কারখানার ভিতরে শহিদ বেদীতেও মালা দেওয়া হয়েছে। এ দিন আমরা দলীয় কার্যালয় পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছি ঠিকই। তবে লড়াই চলবে।’’

ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় চিড়িয়ামোড়ের দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বার করা হয় সিপিএমের তরফে। পাল্টা তৃণমূলও নেয়ারাবাগানে প্রতিবাদসভা করে।

অন্য বিষয়গুলি:

Political Clash CPIM TMC dumdum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy