Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sexual Assult

অপারেশন থিয়েটারে জ্ঞান না থাকায় যৌন নিগ্রহ! অভিযোগ পেয়ে ‘অপ্রিয়’ প্রশ্ন পুলিশের

লালবাজারের তরফে যদিও দাবি, ওই মহিলার শারীরিক পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।  তবে ওটি-র ভিতরে ঠিক কী হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

অভিযোগ দায়ের করার রাতেই ওই মহিলাকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়।

অভিযোগ দায়ের করার রাতেই ওই মহিলাকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৭
Share: Save:

হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) জ্ঞান না থাকার সুযোগে তাঁর যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে বলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। গত শুক্রবার ফুলবাগান থানায় এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কিন্তু তার চার দিন পরেও পুলিশের তরফে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি, এই অভিযোগ তুলে গত মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। অভিযোগ, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে তাঁর স্বামীকে ফোন করে অপ্রীতিকর প্রশ্ন করা হয়েছে পুলিশের তরফে।

লালবাজারের তরফে যদিও দাবি, ওই মহিলার শারীরিক পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্টে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে যে, ওই মহিলার শরীরে যে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে, তা অস্ত্রোপচারের দু’তিন দিন আগের। তাঁর অস্ত্রোপচারের সময়ে ওটিতে উপস্থিত থাকা মহিলা অ্যানাস্থেটিস্টের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। তবে ওটি-র ভিতরে ঠিক কী হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

অভিযোগকারিণীর দাবি, পিত্তাশয়ের অস্ত্রোপচার করাতে গত ৪ জানুয়ারি বেলেঘাটা বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ৫ জানুয়ারি তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। সকাল ৯টায় ওটি-তে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁর জ্ঞান ফেরে বেলা ১২টায়। জ্ঞান ফেরার সময়ে দু’জন ব্যক্তিকে নিজের দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন ওই রোগিণী। আবছা ভাবে তাঁর মনে আছে, তারা তাঁর শরীরে হাত দিচ্ছিল। তাঁর দাবি, এর পরে তাঁকে শয্যায়দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর সারা শরীরে প্রবল ব্যথা ছিল। পরের দিন পোশাক বদলাতে গিয়ে শরীরে ক্ষতের দাগ দেখে হাসপাতালের কোনও মহিলা চিকিৎসকের সাহায্য চান তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও দুঃখপ্রকাশ করে তদন্তের আশ্বাস দেন। তবে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন।

পুলিশি সূত্রের খবর, রাতেই ওই মহিলাকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। পরদিন, অর্থাৎ গত শনিবার ফরেন্সিক পরীক্ষা হয়। মহিলার দাবি, ‘‘সোমবার আমার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয় শিয়ালদহ আদালতে। কিন্তু এর মধ্যেই থানা থেকে তদন্তের দায়িত্বে থাকা মহিলা পুলিশকর্মী আমার স্বামীকে ফোন করে অপ্রীতিকর প্রশ্ন করেন!’’ প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউ মুখ না খুলতে চাইলেও এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘কোনও পুলিশকর্মীর গাফিলতি থাকলে সেটাও দেখা হবে।’’

আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ এমন প্রশ্ন করতেই পারে না। পুলিশের কাজ আক্রান্তকে বিচার পাইয়ে দেওয়া, দোষীর শাস্তির ব্যবস্থা করা আর সমাজের কাছে বার্তা দেওয়া যে, এমন অপরাধ ঘটলে পুলিশ কড়া হাতে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।’’

সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা সেখানকার জনসংযোগ আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। ওই ব্যক্তি জানান, অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। রোগীদের নিরাপত্তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি রিপোর্ট দিলে পুলিশের পাশাপাশি হাসপাতালের তরফেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy