চালু: গার্ডরেল সরিয়ে খুলে দেওয়া হচ্ছে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের বিমানবন্দরমুখী রাস্তা। বৃহস্পতিবার রাতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
শহরবাসীর দুর্ভোগ কিছুটা কমাতে খুলে দেওয়া হল উল্টোডাঙা উড়ালপুলের বিমানবন্দরমুখী রাস্তাটি। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিট নাগাদ ওই উড়ালপুল দিয়ে একমুখী যান চলাচল শুরু হয়। ইঞ্জিনিয়ার ও বিশেষজ্ঞেরা উড়ালপুলটি পরীক্ষা করে জানিয়েছিলেন, ফাটল সারানোর জন্য এক দিকের রাস্তা বন্ধ থাকলেও বিমানবন্দরমুখী রাস্তাটি খুলে দিতে কোনও অসুবিধা নেই।
তবে ওই উড়ালপুলের অন্য দিকের রাস্তায় আবার কবে যান চলাচল শুরু করা যাবে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা। ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি মেরামত করতে মাস দু’য়েক সময় লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে। নিত্যযাত্রীদের কথা ভেবে আপাতত ওই উড়ালপুলের নীচে একটি বেলি ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা করছেন কর্তৃপক্ষ। আজ, শুক্রবার, বেলি ব্রিজের জন্য জায়গা চিহ্নিত করা হতে পারে।
ফাটল মেরামতির জন্য মঙ্গলবার রাত থেকে ওই উড়ালপুলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রবল ভোগান্তি চলছিল যাত্রীদের। বৃহস্পতিবার অবশ্য সেই দুর্ভোগের ছবিটা কিছুটা হলেও বদলায়। কারণ, কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে এবং সাধারণ মানুষও কোন কোন পথে যাতায়াত করলে যানজট এড়ানো যাবে, তার একটা আন্দাজ পেয়েছেন। ফলে অফিসের ব্যস্ত সময় ছাড়া সে ভাবে দুর্ভোগের ছবি দেখা যায়নি। দিনের ব্যস্ত সময়ে অবশ্য এ দিনও গাড়ির গতি শ্লথ হয়ে যায়। যার জেরে বিভিন্ন অংশে যানজট হয়। তবে গাড়ি চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি।
উড়ালপুলের ফাটল পরীক্ষা করে দেখছেন সেতু বিশেষজ্ঞেরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
উল্টোডাঙা উড়ালপুলের যে স্তম্ভে ফাটল দেখা গিয়েছে, বুধবার সেটি দেখে আসেন কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা। সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা।
বুধবারই স্তম্ভের গায়ে সেন্সর লাগিয়ে পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল। এ দিন এক ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে স্তম্ভ থেকে নমুনা হিসেবে কংক্রিটের দু’টি টুকরো সংগ্রহ করেন কর্মীরা। সেগুলি ল্যাবে পাঠিয়ে স্তম্ভের শক্তি পরীক্ষা এবং উপাদানের গুণমান খতিয়ে দেখা হবে বলে কেএমডিএ সূত্রের খবর।
কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, তাঁদের অধীনে থাকা বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে যে সব ত্রুটি ধরা পড়ছে, তা মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। উল্টোডাঙার ক্ষেত্রেও তা-ই করা হবে। তবে এর জেরে ওই উড়ালপুলে যান চলাচল পুরো স্বাভাবিক হতে কিছু দিন সময় লাগবে। কংক্রিটের সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করে তার ফলাফল দেখে মেরামতির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ দিন উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষাকারী সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার ও বিশেষজ্ঞেরা ওই ফাটল ধরা স্তম্ভটি চার দিক থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন। ঘটনাস্থলে যান সেতু নিয়ে তৈরি উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অমিতাভ ঘোষাল ও তাঁর সতীর্থেরা। পরিদর্শনের পরে তাঁরা জানান, প্রাথমিক ভাবে ক্ষত দেখে মনে হচ্ছে, আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। কারণ, একটি স্তম্ভেই ফাটল দেখা গিয়েছে। সেটিও মূল স্তম্ভের ধারে বাইরের দিকে। তবে তাঁরা জানান, ফাটল কেন তৈরি হল এবং সেটি কতটা গভীর, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তাঁরা জানান, উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফলাফল দেখে ঠিক কী কারণে ক্ষত এবং তার প্রভাব কতটা বিস্তৃত, তা নির্ণয় করা সম্ভব হবে।
বছর ছ’য়েক আগে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের যে অংশটি ভেঙে পড়েছিল, সেখানেই স্তম্ভের দু’পাশে অতিরিক্ত লোহার ঠেকনা দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, পরিদর্শনে দেখা গিয়েছে, সেই লোহার স্তম্ভে মরচে ধরেছে। ফলে উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কেএমডিএ সূত্রের খবর, সেতুর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরীক্ষার জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা তৈরির পরিকল্পনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy